কালের সাক্ষী আড়াইশ’ বছরের পুরনো ১৩ গম্বুজ মসজিদ
Published: 18th, April 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাদগাতী গ্রামে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের এক নিদর্শন আড়াইশ’ বছরের পুরনো ১৩ গম্বুজবিশিষ্ট একটি জামে মসজিদ। মোগল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই মসজিদটির দেয়ালে টেরাকোটার অপূর্ব নকশা, কারুকার্যময় মেহরাব, আর গম্বুজের প্রতিটি রেখায় ফুটে উঠেছে অতীতের ছোঁয়া। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানিয়ে দিচ্ছে এক গৌরবময় অতীতের কথা।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভাদগাতী গ্রামে দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ১৩ গম্বুজ বিশিষ্ট জামে মসজিদ। এতে কোন ধরনের শিলালিপি না থাকায় ঐতিহাসিক এ মসজিদটির নির্মাণকাল নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মসজিদটিতে বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদের আদলে কিছু কারুকার্য রয়েছে।
কারুকার্যময় মেহরাবসহ মোঘল আমলের নানা নিদর্শনও রয়েছে মসজিদটিতে। প্রায় আড়াইশ’ বছরের পুরনো দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক ১৩ গম্বুজ মসজিদটি আজও স্মৃতি বহন করছে। মসজিদ কমিটির উদ্যোগে ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় মসজিদটি সৌন্দর্য বর্ধনসহ সংস্কার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র বলছে, স্থানীয়দের উদ্যোগে এর সৌন্দর্য বর্ধন ও সংস্কার করা হয়েছে। তবে নির্মাণকাল নিয়ে নিশ্চিত কোনো শিলালিপি না থাকলেও, স্থানীয় বয়োবৃদ্ধারা মনে করেন এটি মোগল আমলের স্থাপনা। বিশেষ কায়দায় তৈরি এই মসজিদে এখনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না। পশ্চিম পাশে একটি ছোট দরজা রয়েছে, যেটি জানাজার সময় ব্যবহার করা হয়।
মসজিদের কয়েকজন মুসল্লী বলেন, “এই মসজিদ শুধু নামাজের স্থান নয়, এটা আমাদের ইতিহাস, গর্ব। জনসংখ্যা ও মুসল্লির সংখ্যা বাড়ায় মসজিদের সম্প্রসারণ এখন সময়ের দাবি। আধুনিক অজুখানা ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগে অন্তর্ভুক্তি করতে হবে।”
মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো.
মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি মোহাম্মদ হোসেন আরমান বলেন, ‘‘এই গ্রামের আদি নাম ছিল শাহদেরগাঁও। শাহ অর্ধ শাসক আর গাঁও অর্থ গ্রাম। এছাড়াও এই গ্রামে ছিল শাহদের বসবাস। ধারণা কর হয় ওই সময় থেকেই এখানে মসজিদটি ছিল। মসজিদটি বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ার পর এটি শাহদেরগাঁও এর মিয়ারা ১৮ শতকের শেষ দিকে পূণরায় স্থাপন করেন।”
তিনি আরো বলেন, “প্রথমে আটটি গম্বুজ ছিল। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ভারত থেকে মিস্ত্রী এনে আরও পাঁচটি গম্বুজ যোগ করা হয়। স্থাপত্য দেখে আমরা মনে করি মসজিদটির বয়স অন্তত আড়াইশ’ বছর।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গম ব জ ম মসজ দ র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন সরবরাহ, আহ্বায়ককে অব্যাহতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউনিটটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে এ অভিযোগ ওঠে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, ‘সি’ ইউনিটে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা প্রশ্নপত্র নির্ধারিত থাকলেও কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একাধিক হলে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়। পরে ভুল বুঝতে পেরে প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
কুবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
যানজটে স্বপ্ন ভঙ্গ কুবির এক ভর্তিচ্ছুর
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমরা যারা বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, আমাদের কেন্দ্র ছিল মূলত সেই বিভাগের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু ওই ভবনের কয়েকটি কক্ষে ভুল করে আমাদের কাছে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন দেওয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর বিষয়টি সংশোধন করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথমে খুব নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। পরে ১ ঘণ্টার পূর্ণ সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই হয়েছে।”
চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা মোহাম্মদ আবু হানিফ বলেন, “ভুল প্রশ্ন দেওয়ার কারণে পরীক্ষার শুরুতে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। বিষয়টি কক্ষ পরিদর্শকদের জানালে সেটা ফিরিয়ে নিয়ে সঠিক প্রশ্ন দেওয়া হয়।”
এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “মানবিক বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর কাছে ভুল করে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন পৌঁছে যায়। রোল নম্বর যাচাই করে আমরা বিষয়টি শনাক্ত করি এবং তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ দেওয়া হয়।”
এদিকে, পরীক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্ন প্রদানের দায়ে ওই ইউনিটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “ঘটনার পর আমি নিজে ওই কক্ষে গিয়েছিলাম। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এমন ভুল অনাকাঙ্ক্ষিত এবং তা অপেশাদারিত্বের পরিচায়ক। দায়িত্বরতদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।”
তিনি বলেন, “এ ঘটনার জন্য ইতোমধ্যে উনাকে (আহ্বায়ক) ভর্তি পরীক্ষার সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে উনাকে এ ঘটনার কারণ জানানোর জন্য শোকজ করা হয়েছে।”
ইউনিটের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি ফলাফলসহ বাকিসব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।”
অব্যাহতির বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “আমি এ ধরনের কোনো লিখিত চিঠি পাইনি। লিখিত চিঠি পাওয়ার পর মন্তব্য করতে পারবো।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী