বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফকে দিল ভারতীয়রা
Published: 18th, April 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের ভুট্টা ক্ষেতের পাতা ছেঁড়ার সময় এক বাংলাদেশি যুবককে ভারতীয়রা ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশি ওই যুবকের নাম আজিনুর রহমান (২৪)। তিনি বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম ডাঙ্গাটারী গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশাদুল হক জানান, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাটগ্রামের বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম ডাঙ্গাটারী গ্রামের মেইন পিলার ৮০১-এর সাব পিলার ১০-১১ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, আজিনুর তাঁর মা-সহ সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে গরুর খাবারের জন্য ভুট্টা ক্ষেতের পাতা ছিঁড়তে যায়। এক পর্যায়ে ভারতের কয়েকজন নাগরিক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে বিএসএফের হাতে দেয়। বিএসএফ আজিনুরকে আটক করে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। পরে রংপুর-৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঠ্যাংঝাড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার রফিকুল ইসলাম ভারতীয় মেখলিগঞ্জের বি আরকা বাড়ী বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের সঙ্গে আজিনুরকে ফেরত আনার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন।
রংপুর-৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঠ্যাংঝাড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার রফিকুল ইসলাম জানান, আজিনুরকে ফেরত আনার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিজেপিকে ধুয়ে দিলেন মমতা, তুললেন ইউনূস-মোদি বৈঠকের কথাও
ভারতে নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে, যা প্রাণঘাতী সহিংসতায় রূপ নিয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তাতে এবার নতুন রঙ দিলেন মমতা।
ওয়াকফ নিয়ে মুর্শিবাদাদের সহিংসতার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ঘাড়ে দায় নিতে রাজি নন। তার বক্তব্য, বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পনা করে এই অশান্তি ও অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, “প্ল্যান করে এই অশান্তি পাকানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকতে দিয়েছে বিএসএফ। বাইরে থেকে লোক এনেছে বিজেপি। তারাই অশান্তির আগুন জ্বেলেছে।”
আরো পড়ুন:
ওয়াকফ আইন: বিক্ষোভে উত্তাল মুর্শিদাবাদ, নিহত ৩
সারাদেশে ব্যাপক সংঘর্ষ, নিহত ৮৪
বুধবার (১৬ এপ্রিল) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মুয়াজ্জিন-বুদ্ধিজীবীদের সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এই অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
মমতার অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি বাড়াতে উড়োজাহাজে করে লোক আনা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে।
তিনি বলেন, “প্লেন চলছে, প্লেনে কারা আসছে, কীভাবে আসছে... আগে এয়ারপোর্টে আমাদের পুলিশ থাকত, আমরা রিপোর্ট পেতাম। এখন সেটা উঠিয়ে দিয়েছে। তাই কোনো রিপোর্ট পাই না।”
‘পর্দার আড়ালে খেলা চলছে’ বলে অভিযোগ করে মমতা বলেন, “আপনারা কি মনে করেন যে, লুকিয়ে লুকিয়ে খেলা খেলবেন? পর্দার পিছনে কী আছে, আমরা সব বুঝতে পারি।”
এরপরেই বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক নিয়ে খোঁচা দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইউসূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গোপন বৈঠক করতেই পারেন। দেশের ভালো হলে ভালো। কিন্তু আপনাদের উদ্দেশ্যটা কী? অন্য দেশ থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা? আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না?”
এরপরই তিনি বলেন, “বাংলার প্রতিবেশী দেশ হল বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। গতকাল আমি এএনআই-এর একটি টুইট দেখেছি যেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে যে, দাঙ্গার ঘটনা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত। যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী। সীমান্তের দেখাশোনা করে বিএসএফ, রাজ্য সরকার নয়।”
“কেন বিজেপির লোকদের বাইরে থেকে এসে গোলমাল করতে দেওয়া হলো, তাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হলো,” যোগ করেন মমতা।
এমনকি সহিংসতার মধ্যে বিএসএফ বাচ্চাদের দিয়ে পাথর ছুড়িয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
তিনি বলেন “আমি খুঁজে বের করব, সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কাকে কাকে হাত করেছে। কিছু বাচ্চা ছেলেকে ৫-৬ হাজার রুপির বিনিময়ে পাথর ছুড়িয়েছে। এটা ভালো করে তদন্ত করব, আমাদের তদন্ত চলছে।”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নাম উচ্চারণ না করে তার উদ্দেশে মমতা বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কালীদাসের মতো হয়ে গেছে। যে ডালে বসে আছে, সেই ডাল কাটছে। আপনার এত তাড়া কীসের? আপনি তো প্রাইম মিনিস্টার কখনো হবেন না। মোদি চলে গেলে কী হবে? আপনাকে তো হামাগুঁড়ি দিতে হবে। মোদিজিকে বলব, ওনাকে একটু কন্ট্রোল করতে। সমস্ত এজেন্সিকে দিয়ে দিয়েছেন ওনার হাতে। মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে, তা পুরোটাই পরিকল্পিত।”
ক্ষোভ উগরে বক্তব্য দেওয়ার সময় মমতা বলেন, বাংলার প্রতিবেশী দেশ হলো বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা।
এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মমতা। মূলত শুধু বাংলাদেশ ছাড়া বাকি দেশগুলো ভারতের প্রতিবেশী; পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নয়।
ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল