আবারও ২০০ কোটি টাকার মুনাফার ঘরে আইডিএলসি ফাইন্যান্স
Published: 18th, April 2025 GMT
ঋণের ও সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের উচ্চ সুদের কল্যাণে আবারও ২০০ কোটি টাকার মুনাফার ঘরে ফিরেছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স। ২০২১ সালের পর কোম্পানিটির মুনাফা আবারও দ্বিশতকের ঘর ছাড়াল। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। তাতে মুনাফার এই তথ্য পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মুনাফা ৪৯ কোটি টাকা বা প্রায় সাড়ে ৩২ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর মুনাফা করেছিল ১৫১ কোটি টাকা। ২০২২ সালে যার পরিমাণ ছিল ১৯১ কোটি টাকা। আর ২০২১ সালে আইডিএলসি ২১২ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।
ভালো মুনাফা করায় ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালের জন্য শেয়ারধারীদের বেশি লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। গত বছরের জন্য কোম্পানিটি ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এদিকে ২০২৪ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে কোম্পানিটির খরচ হবে ৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি। যার মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা পাবেন ৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আর ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
আইডিএলসির গত বছরের মুনাফা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়। সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডসহ অন্যান্য খাতের বিনিয়োগ থেকে প্রতিষ্ঠানটি গত বছর আয় করেছে ১৪৩ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এই খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় ছিল ২৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে সুদ আয়ের বাইরে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় আগের বছরের চেয়ে ১১৪ কোটি টাকা বা প্রায় ৪০০ শতাংশ বেড়েছে। সাধারণত বিনিয়োগ থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে আয় করে, তার বিপরীতে খরচ তুলনামূলক কম। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যবসা ঋণের সুদ আয়। গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত নিয়ে কিছুটা বাড়তি সুদে তা ঋণ হিসেবে বিতরণ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য আমানতের সুদ বাবদ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয়। সেই তুলনায় বিনিয়োগ আয়ের বিপরীতে খরচ অনেক কম।
গত বছর ঋণের সুদ যেমন বাড়তি ছিল, তেমনি সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদও ছিল বেশি। তাতে সুদ ও বিনিয়োগ আয়ে বাড়তি সুদের সুফল পেয়েছে আইডিএলসি। গত বছর কোম্পানিটি ঋণের সুদ বাবদ আয় করেছে ১ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির এই বাবদ আয় ছিল ১ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আইডিএলসির সুদ বাবদ আয় ২২৩ কোটি টাকা বা প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
ঋণের সুদ বাবদ আয় যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে আমানতের সুদ বাবদ ব্যয়। গত বছর আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৯৯৭ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এই বাবদ কোম্পানিটির খরচ করেছিল ৭৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় বেড়েছে ২৪১ কোটি টাকা বা প্রায় ৩২ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ গ্রাহকের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকেও বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করে থাকে। এ কারণে ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় বেশি।
গত বছর দেশে ঋণের চাহিদা কম ছিল। এ কারণে অতিরিক্ত তারল্যের একটি বড় অংশ সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছি। আবার মন্দ ঋণ বা খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনায়ও আমরা খুব ভালো করেছিসৈয়দ জাভেদ নুর, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক,আইডিএলসিআর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর কোম্পানিটির প্রকৃত সুদ আয় আগের বছরের চেয়ে কমেছে। গত বছর প্রকৃত সুদ আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪৯৯ কোটি টাকা। ঋণের সুদ আয় থেকে আমানতের সুদ বাদ দেওয়ার পর যে আয় হয়, সেটিই প্রকৃত সুদ আয় হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রকৃত সুদ আয় কমলেও কোম্পানিটির পরিচালন আয় আগের বছরের চেয়ে ৯১ কোটি টাকা বা ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত বছর আইডিএলসির পরিচালন আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২৬ কোটি টাকায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৬৩৫ কোটি টাকা।
গত বছর ভালো মুনাফা করার কয়েকটি কারণের কথা জানালেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ জাভেদ নুর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছর দেশে ঋণের চাহিদা কম ছিল। এ কারণে অতিরিক্ত তারল্যের একটি বড় অংশ সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছি। বিল-বন্ডের সুদ হারও ছিল বেশি, তাই সেখান থেকে আমরা ভালো আয় করেছি। আবার মন্দ ঋণ বা খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনায়ও আমরা খুব ভালো করেছি। গত বছর আমাদের ঋণ খুব বেশি বাড়েনি। কিন্তু খেলাপি ঋণ আমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমিয়েছি। ফলে নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমাণও কমেছে। আবার দক্ষতার সঙ্গে আমরা পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা করেছি। সব মিলিয়ে তাই বছর শেষে আমাদের মুনাফা ৩২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।’
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর আইডিএলসি নিরাপত্তা সঞ্চিতি বাবদ সংরক্ষণ করেছে ৭০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৯৮ কোটি টাকার বেশি। সেই হিসাবে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ বাবদ সাশ্রয় হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।
আইডিএলসি ১৯৯২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৫ সালে। সেই হিসাবে এটি ৪০ বছরের পুরোনো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৪১৫ কোটি টাকা। শেয়ারবাজারে এটি ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে এটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩০ টাকা ৫০ পয়সা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য র পর ম ণ ছ ল ফ ইন য ন স ২০২৩ স ল আইড এলস ঋণ র স দ ব ল বন ড গত বছর সরক র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
সংসার ভাঙছে জহির-সোনাক্ষীর?
দীর্ঘ ৭ বছর ডুবে ডুবে জল খেয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা ও অভিনেতা জহির ইকবাল। ২০২৩ সালের ২৩ জুন দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন এই প্রেমিক যুগল।
সোনাক্ষী-জহির দম্পতির বিয়ের বয়স ১ বছর ৯ মাস। গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ভাসছে, ভেঙে যাচ্ছে এ দম্পতির সংসার। এ নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে অন্তর্জালে। তবে পুরোপুরি নীরব ছিলেন তারা। অবশেষে কড়া জবাব দিলেন সোনাক্ষী।
জহিরের সঙ্গে তোলা একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন সোনাক্ষী। তাতে একজন মন্তব্য করেন, “খুব শিগগির তো আপনাদের ডিভোর্স হতে চলেছে।” নেটজেনের এমন মন্তব্য দেখে মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি সোনাক্ষী। আক্রমণ করে ওই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে সোনাক্ষী লেখেন, “প্রথমে তোর বাবা-মা বিচ্ছেদ করুক, তারপর না হয় আমরা করব। প্রতিজ্ঞা করছি।”
সোনাক্ষীর এই পোস্ট অনেকেরই নজরে পড়েছে। নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেটিজেনরা। কেউ কেউ সোনাক্ষীর মন্তব্যের সঙ্গে সহমত জানিয়ে লেখেন, “যোগ্য জবাব।”
৩৭ বছরের সোনাক্ষী হিন্দুধর্মের অনুসারী আর ৩৫ বছর বয়সি জহির ইকবাল মুসলিম। দু’জন দুই ধর্মের অনুসারী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিয়ের আগেই চর্চা শুরু হয় নেট দুনিয়ায়। তারপর খবর চাউর হয়, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সোনাক্ষী সিনহা। কিন্তু এসব খবর সত্যি নয়। বরং তারা ভারতের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪ অনুযায়ী বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন।
২০২০ সালে সালমান খান একটি পার্টির আয়োজন করেন। সেই পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবাল। প্রথমে গুঞ্জন শোনা যায়, ওই বছরই সম্পর্কে জড়ান তারা। কিন্তু এ জুটি ২০১৭ সালে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ২০২২ সালে অ্যামি ভির্ক ও আশিস কৌরের গাওয়া ‘ব্লকবাস্টার’ গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেন জহির ইকবাল ও সোনাক্ষী।
২০২২ সালে ‘ডাবল এক্সেল’ সিনেমায় অভিনয় করেন সোনাক্ষী-জহির। একই বছরে এ জুটির প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে জহিরের সঙ্গে কাটানো ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন সোনাক্ষী। এতে তাদের প্রেমের গুঞ্জনের পালে নতুন করে হাওয়া লাগে। যদিও প্রেমের কথা কখনো স্বীকার করেননি সোনাক্ষী কিংবা জহির। সর্বশেষ ২০২৩ সালে বিয়ের মাধ্যমে গুঞ্জনকে বাস্তবে রূপ দেন এই যুগল। দাম্পত্য জীবনে দারুণ সময় পার করছেন তারা।
ঢাকা/শান্ত