খাগড়াছড়িতে অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী তিন দিনেও উদ্ধার হয়নি। শুক্রবারও তাদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনী খাগড়াছড়ি সদরের পানখাইয়া পাড়া, মধুপুরসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালায়। এমনকি অপহরণে জড়িত সন্দেহভাজন কাউকে আটক পর্যন্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিজু উৎসব শেষে চবিতে ফেরার পথে গত বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে রিশন চাকমা, অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, দিব্যি চাকমা ও লংঙি ম্রোকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও, অস্বীকার করেছেন সংগঠনের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।

অপহৃত দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান শুক্রবার সমকালকে বলেন, ‘সন্তানকে ফেরত না পেয়ে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। তাদের ভালোভাবে ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করছি।’

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমা জানান, অপহৃতদের পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছি– অপহরণকারীরা অভিভাবকদের গোপন স্থানে ডেকে বৈঠক করলেও, প্রত্যেককে খালি হাতে বাড়ি পাঠিয়েছেন। অভিভাবকরা সন্তানদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে পারেননি। তবে অপহরণকারীরা সময়মতো তাদের ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানিয়েছেন, পাঁচ শিক্ষার্থী উদ্ধারে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন তারা। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি-ঢাকা ও খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কে তল্লাশি জোরদার হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলেও সুখবর দেওয়ার মতো তথ্য হাতে আসেনি। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চবির ৫ শিক্ষার্থীর অবস্থান শনাক্ত, বিশেষ অভিযান চলছে: সেনাবাহিনী

খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘‘অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থান কিছুটা শনাক্ত করা গেছে। এ বিষয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।’’

পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে কেমন জানতে চাইলে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা অবস্থা ভালো।’’

অপহৃতরা হলেন, চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো।

অপহৃতদের মধ্যে রিশান চাকমা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য। পিসিপি এ ঘটনায় ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও তারা তা অস্বীকার করেছে। ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেছেন, অপহরণের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এই ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি আমরা করি না।

ব্রিফিংয়ে নির্বাচনের বিষয়ে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকার ও নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে সেনাবাহিনী।’’

তিনি বলেন, ‘‘মেজিস্ট্রিসি পাওয়ারে কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে না সেনাবাহিনী। কিন্তু আটকের পর তা অন্য বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে সেনাবাহিনীর কোনো ভূমিকা নেই। কোনো রকম কোনো গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয়।’’

এ সময় তিনি জানান, গত দুই মাসে দেশে শিল্পাঞ্চল এলাকায় ১৩৭টি এবং এর বাইরে ২৩২ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ৮২২ জনকে। কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী, প্রতারক চক্রের সদস্যরা রয়েছে।

এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে ৪ হাজার ৩৪০ জন এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর দ্বারা চিকিৎসা নিয়েছে, এখনো চিকিৎসাধীন ৪৩ জন রয়েছেন বলে জানান কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি ছাত্রদল ও মৈত্রীর
  • ৭২ ঘণ্টায়ও খোঁজ মেলেনি চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর
  • সন্তানদের অপেক্ষায় দিন কাটছে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের
  • রাজশাহীতে অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষক উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
  • খাগড়াছড়িতে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে অভিযান অব্যহত
  • রাজশাহীতে অপহৃত শিক্ষককে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
  • প্রতিবেশীকে বাঁচাতে গিয়ে যেভাবে ‘ফেঁসে’ গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
  • চবির ৫ শিক্ষার্থীর অবস্থান শনাক্ত, বিশেষ অভিযান চলছে: সেনাবাহিনী
  • অপহৃত শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকে গোপন স্থানে ডেকেছে অপহরণকারীরা