থানা ফটকে বিএনপি নেতাকে হাতুড়িপেটা, অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে
Published: 18th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিএনপি নেতা আজাদ হোসেনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার দুপুরে থানার প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আজাদ হোসেন উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
উল্লাপাড়া উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নিক্সন কুমার আমিন বলেন, বিএনপি নেতা আজাদ উল্লাপাড়া মোটর মালিক সমিতির অফিসে নিয়মিত উঠা-বসা করেন। শিবিরের নেতাকর্মীরা এ বছর সিএনজি স্ট্যান্ডের ইজারা পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা ইজারা তুলতে এসে মোটর মালিক সমিতির অফিসের কক্ষ থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলতে বলেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে স্থানীয়দের কথা কাটাকাটি হয়।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার উপজেলা মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে আজাদ থানার গেটের সামনে যান। সেখানে বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে আজাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন জামায়াত-শিবিরের তিন-চারজন নেতাকর্মী। তারা হাতুড়ি ও রড দিয়ে আজাদকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি কাজী জহুরুল ইসলাম পিনু বলেন, জামায়াতের ইসলামীর পক্ষ থেকে উল্লাপাড়া সিএনজি স্ট্যান্ড বাংলা নতুন বছরের ইজারা নেওয়া হয়েছে। জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা ইজারার টাকা তুলতে গেলে আজাদের সমর্থকরা বৃহস্পতিবার বিকেলে ও শুক্রবার সকালে তাদের দুই দফা মারধর করে। এরই জেরেই আজাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
উল্লাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিয়ামুল হক বলেন, বিএনপি নেতা আজাদকে মারধরের পর উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নেতাকর্মীরা। আহত আজাদকে বগুড়ায় নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ন ত কর ম র র ন ত কর ম উল ল প ড় উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি ছাত্রদল ও মৈত্রীর
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
শুক্রবার ও শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে অপহৃতদের মুক্তির দাবি জানায় সংগঠন দুটি।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কর্তৃক চবির পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনা আমাদের গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন করেছে। ছাত্র জীবনের স্বাভাবিক অবকাশ ও উৎসব শেষে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার পথে তাদের এভাবে অপহরণ নিঃসন্দেহে একটি ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনা। এটি শুধু পাহাড়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে নয়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন নিয়েও বড় প্রশ্ন তৈরি করছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, শাখা ছাত্রদল এই সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর সুস্থ ও নিরাপদ মুক্তির দাবি করছে। একইসঙ্গে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, পাহাড়ে সক্রিয় সব সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “অপহরণকৃত শিক্ষার্থীদের দ্রুত মুক্তি কামনা করছি। পাশাপাশি পাহাড়ে সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
শনিবার (১৯ এপ্রিল) শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সদস্য সাইদ্যুজামান রেদুয়ান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও অপহৃতদের এখনো উদ্ধার করতে না পারা সারাদেশের জন্য উদ্বেগজনক ও শঙ্কার বিষয়। চবির এ পাঁচজন শিক্ষার্থী ‘জেএসএস পিসিপি’র সদস্য হওয়ার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ‘ইউপিডিএফ’ তাদের অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে ইউপিডিএফ এর কাছ থেকে আমরা স্পষ্ট বার্তার আহ্বান জানাই। অবিলম্বে অপহৃতদের অক্ষত মুক্তি ও রাষ্ট্রের কাছে অপহরণকারীদের শাস্তির দাবি জানায় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পাহাড়ে সুদীর্ঘ সময়ের নিপীড়নের ইতিহাস পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবন ও সেখানকার রাজনৈতিক বাস্তবতাকে রীতিমতো শূলবিদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সুদীর্ঘকাল ধরে পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে মেধাবী ও সাংগঠনিক মননকে হত্যা এবং দমনপীড়নের ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র ও তার সেনাবাহিনী। চবির পাঁচজন শিক্ষার্থীর অপহরণকেও রাষ্ট্রের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুলস’ রাজনীতির পরম্পরাই মনে করে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
এর আগে, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বিজু উৎসব উদযাপন শেষে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফন্টের (ইউপিডিএফ-প্রসীত গ্রুপ) নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, একই বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী