দুর্ঘটনায় ছাদ উড়ে যাওয়া বাস ৬ কিলোমিটার নিয়ে গেলেন চালক, যাত্রীদের চিৎকার
Published: 18th, April 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে যাত্রীবাহী বাসের ছাদ উড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি বেপরোয়াভাবে প্রায় ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে যান চালক। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসটির অজ্ঞাতনামা চালক, চালকের সহকারী, মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসাড়া হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আতাউর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বাসচালকের অবহেলার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
শ্রীনগরের হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুর্ঘটনাকবলিত বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসটি বর্তমানে হাইওয়ে থানায় রয়েছে। দুর্ঘটনায় শাহীন (৩২) নামে বরিশালের নলছিটি এলাকার এক ব্যক্তি আহত হন।
মামলার এজাহার, হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে বাসটি ছাড়ে। ঘণ্টাখানেকের পর ওই বাসটি ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। বাসটি শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তখনই বাসের ছাদ সামনে থেকে ভেঙে পেছনে গিয়ে আটকে থাকে। চালক বাসটি না থামিয়ে আরও দ্রুতগতিতে চালাতে থাকেন। পরে ওই বাসটি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সমষপুরে গেলে ছাদটি উড়ে পড়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয়। যাত্রীসহ ছাদবিহীন বাস চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। সমষপুর অতিক্রম করে আরও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি।
বাসে থাকা যাত্রীরা তখন ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার করতে থাকেন। বেপরোয়া চালক সেদিকে কর্ণপাত না করে ঘটনাস্থল থেকে আরও ৬ কিলোমিটার দূরত্বে লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার অভ্যন্তরীণ একটি সড়কে নিয়ে যান ছাদবিহীন বাসটিকে। রাত ১০টার দিকে যাত্রীদের চিৎকার শুনে বাসটি ঘেরাও করে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ সড়কের অন্য অংশে টহলে ছিল। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পদ্মা উত্তর থানা–পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও যান। ঘটনাস্থল থেকে শাহীন নামে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো করা হয়। ঘটনার পরপর চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে যান।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি চালকের অবহেলার জন্য হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীনগর থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন শ র নগর ঘটন য় হ ইওয়
এছাড়াও পড়ুন:
নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামসের মন্তব্যে শান্তর ‘খোঁচা’
নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে নাহিদ রানাকে তুলে ধরলেন তাতে বার্তা স্পষ্ট, আগে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা খেলুক তাকে, তারপর না হয় মন্তব্য করা যাবে। রীতিমতো বাংলাদেশের অধিনায়ক ‘খোঁচাই’ দিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের। যার শুরুটা অবশ্য সফররত জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামসের থেকে।
বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের বিজ্ঞাপন নাহিদ। বর্তমান সময়ে দ্রুত গতির যে সমস্ত বোলার ক্রিকেট বিশ্বের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন, নাহিদ তাদের মধ্যে অন্যতম। জোরে বলিং করতে পারার সক্ষমতা দিয়ে নাহিদ সুনজরে এসেছেন সবার। লাল বলে তাকে খেলতে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। জিম্বাবুয়ের জন্যও ডানহাতি পেসার হতে পারেন হুমকি। কিন্তু তাকে নিয়ে তেমন কোনো চিন্তিত মনে হলো না উইলিয়ামসের।
আরো পড়ুন:
টেস্ট সংস্কৃতির জন্য ভাবনার বদল চাইলেন শান্ত
বিবিসির প্রতিবেদন
ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামস বলেছিলেন, ‘‘এখনকার দিনে অনেক বোলারই আছে দ্রুতগতিতে বল করতে পারে। দুনিয়ায় শুধু একজনই জোরে বল করে না। আমরা এটার জন্য প্রস্তুত। আমাদের কাছে বোলিং মেশিন আছে, যা মানুষের চেয়ে দ্রুতগতিতে বল করে।’’
উইলিয়ামসের এমন মন্তব্য কানে গিয়েছে শান্তর। তার মন্তব্য নিয়ে শান্তর পাল্টা উত্তর, ‘‘ম্যাচে যখন নাহিদ বল করবে আর প্রতিপক্ষ যখন ব্যাটিং করবে তখন আপনি তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলে বুঝতে পারবেন যে, নাহিদ রানা কত জোরে আসলে বল করে এবং কতটা এক্সট্রাঅডিনারি।’’
নিজের বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে নাহিদকে প্রথম দেখেছিলেন শান্ত। তার শুরুর সময়টা সম্পর্কে সবটাই জানা বাংলাদেশ কাপ্তানের। একাডেমি মাঠে একসঙ্গে অনুশীলন, এরপর বিভাগীয় দলে খেলা। এখন দুজনের ঠিকানা জাতীয় দল। নাহিদকে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে দেখেছেন শান্ত। শুরুর সময় আর এখনকার অবস্থান, দুয়ের পার্থক্য থাকলেও নাহিদের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ একটাই, ১৪০ কিমির গতির বল।
সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে সতীর্থর থেকে অধিনায়ক শান্তর চাওয়া, ‘‘ওকে আমি অনেক আগে থেকে চিনি আমার ডিভিশন থেকে খেলেছে। যখন ও কিছুই খেলেনি একাডেমিতে প্র্যাকটিস করত তখন থেকেই চিনি। সো তখন থেকে এখন পর্যন্ত একটা মেসেজই দেওয়া হয়েছে, ও যেন ১৪০ প্লাস বল করে। এখন পর্যন্ত এই মেসেজটা ক্লিয়ার এবং আমি আশা করব যে, আগামী কালকে যদি খেলার সুযোগ আসে তাহলে ও যেন ১৪০ প্লাস বল করে।”৬ টেস্টে ২০ ও ৪ ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়া নাহিদ এখনো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ খেলেননি। সিলেটে প্রথমবার খেলবেন উইলিয়ামস, আরভিনদের বিপক্ষে। প্রথম মুখোমুখিতেই দ্রুতগতির বোলার চমকে দিলে অবাক হওয়ার থাকবে না।
সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ