বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ এবং মারধরের অভিযোগে ফেনীর এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে জেলার সদর মডেল থানায় মামলা করেন থাইল্যান্ডের নাগরিক এক নারী। মামলায় আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই নারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পুলিশের প্রশংসা করেন। প্রশংসাসূচক এই বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করেন ওসি, যা ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

নিজেকে ধর্ষণের শিকার দাবি করা একজন নারীর ভিডিও এভাবে ধারণ করা এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ওই নারীর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলে দাবি আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীদের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওসির কক্ষে বসে পুলিশের প্রশংসা করে ইংরেজি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন এক নারী। ফেসবুকে ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে ওই নারীকে কটাক্ষ করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের ফেনী টিমের সদস্য তন্বী সোম বলেন, ওই নারী নিজে ধর্ষণের শিকার এবং নির্যাতিত, এমন অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্যের ভিডিও এভাবে ওসির মুঠোফোনে ধারণ করা এবং তা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দুঃখজনক। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সংবেদনশীল এবং সতর্ক হতে হবে।

ফেনী জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আদালতের অনুমতি ছাড়া পুলিশ এ ধরনের কোনো ভুক্তভোগীর বক্তব্যের ভিডিও ধারণ এবং সেটি কারও কাছে হস্তান্তর করতে পারে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার বিষয়টি তো পুলিশের এখতিয়ারেই নেই। সেটি ধন্যবাদজনিত বিষয় হলেও ভিডিও রেকর্ড করে বিতরণ করা পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। পুলিশের এই বিষয়টি মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালতকে অবহিত করা হবে।’

বিদেশি ওই নারীর বক্তব্য নিজের মুঠোফোনে ধারণ করার কথা স্বীকার করেছেন ফেনী মডেল থানার ওসি মো.

শামসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ওই নারী আমাদের কাজে খুশি হয়ে পুলিশের প্রশংসা করেছেন, যা পজিটিভ চিন্তা করে আমরা প্রচার করার জন্য বলেছি। ওই নারীর বক্তব্যে ধর্ষণের কোনো বিষয় ওঠে আসেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি প্রচারের পর বিরূপ মন্তব্য হবে, বিষয়টি আমাদের ধারণায় ছিল না। আমি লজ্জিত, বিষয়টিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি।’

গত সোমবার ফেনী সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করা হয়। মামলাটিতে মোখসুদুর রহমান (৪৮) নামের একজন এবং অজ্ঞাতপরিচয় দুজনকে আসামি করেন থাইল্যান্ডের নাগরিক ওই নারী। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোখসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ওই নারী হংকংয়ে ব্যবসা করতেন। এর সূত্রেই সেখানে মোখসুদুরের সঙ্গে পরিচয়। ভিসা জটিলতায় মোখসুদুর গ্রেপ্তার হয়ে হংকংয়ের কারাগারে ছিলেন। তখন তাঁকে কারামুক্ত হতে সাহায্য করেন ওই নারী। কারামুক্ত হয়ে মোখসুদুর রহমান বাংলাদেশে চলে আসেন। বিয়ের আশ্বাসে বাংলাদেশে ডেকে এনে গত বছরের ১২ অক্টোবর ওই নারীকে মোখসুদুর ধর্ষণ করেছেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

মামলার এজাহারে এ ছাড়া অভিযোগ করা হয়, মোখসুদুরকে ব্যবসার জন্য ২ লাখ ১০ হাজার হংকং ডলার ও বেশ কিছু স্বর্ণালংকার দিয়েছেন ওই নারী। ধর্ষণের ঘটনার পর নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি এসব টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য মোখসুদুরকে বলেন। পুনরায় বাংলাদেশে এসে গত রোববার মোখসুদুরের বাড়িতে গেলে তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় ওই নারীর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে।

২০১৯ সালের ২৭ মার্চ এক মাদ্রাসাছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তাঁর মা ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জিজ্ঞাসাবাদের নামে ওই মাদ্রাসাছাত্রীর বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সাইবার আইনে মামলা হলে সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের আট বছরের কারাদণ্ড হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ওই ন র র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করবেন জোনাথন কার্ল

জোনাথন কার্লের পরবর্তী বইটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানা গেছে। 
এবিসি সাংবাদিকের ‘রিট্রিবিউশন: ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যান্ড দ্য ক্যাম্পেইন দ্যাট চেইঞ্জড অ্যামেরিকে ইন দ্য ফল’ বইটি প্রকাশ করবেন। বইটি হোয়াইট হাউস এবং প্রেসিডেন্ট প্রচারণার গভীরে আমাদের পর্দার আড়ালে আসা অসাধারণ মুহূর্তগুলি প্রকাশ করে, যা একজন ব্যক্তির প্রেসিডেন্টশিপের অবসান ঘটিয়ে অন্য একজনকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনে।
এবিসি নিউজের প্রধান ওয়াশিংটন সংবাদদাতা জোনাথন কার্ল বইটির জন্য গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণা জুড়ে ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেননি যে ট্রাম্প নির্বাচনে জিতবেন এবং বইটি কেন ভুল ছিল তা অনুসন্ধান করবেন।
কার্লের প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে পূর্ববর্তী তিনটি বই হলো– ফ্রন্ট রো অ্যাট দ্য ট্রাম্প শো (২০২০); বিট্রেয়াল: দ্য ফাইনাল অ্যাক্ট অফ দ্য ট্রাম্প শো (২০২১); এবং টায়ারড অফ উইনিং: ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যান্ড দ্য এন্ড অফ দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি (২০২৩)। একটি তারকাচিহ্নিত পর্যালোচনায়, কিরকাসের একজন সমালোচক লিখেছেন যে ‘টায়ারড অফ উইনিং’ বইটিতে ‘চমৎকার প্রতিবেদন এবং নিশ্চিত লেখা রয়েছে– একটি অশুভ সতর্কবাণী।’
নতুন এই বইয়ের প্রচ্ছদে ইভান ভুচির বিখ্যাত ছবি রয়েছে, যেখানে ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ার বাটলারের কাছে একটি সমাবেশে হত্যার চেষ্টার পর তার মুষ্টি উঁচিয়েছিলেন। ডাটন বলেছেন যে, বইটি ‌‌‌‌‌‌‌অভূতপূর্ব রাজনৈতিক চক্রান্তের মোড়ের একটি গল্প, যেখানে দেখানো হয়েছে যে রাজনৈতিক ভাগ্যের পতন এবং পুনরায় উত্থানের সময় পর্দার আড়ালে কী ঘটেছিল এবং একটি নতুন দল যখন সম্পূর্ণ নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ঘিরে একত্র হয়েছিল।
চলতি বছর ২৮ অক্টোবর ‘রিট্রিবিউশন: ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যান্ড দ্য ক্যাম্পেইন দ্যাট চেইঞ্জড অ্যামেরিকে ইন দ্য ফল’ প্রকাশের তারিখ নির্ধারিত আছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও কারকাস রিভিউস 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ত্রের মহড়া, কালোতালিকা, কাদা-ছোড়াছুড়ি, জনসংযোগের নামে বলিউডে যা হয়
  • গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় নৌকায় আগুন, ১৪৩ মরদেহ উদ্ধার
  • ফুটবলে তিন ছেলের কে কেমন, জানালেন মেসি
  • ‘কী সুন্দর তাই না, একজন শিক্ষকের এই পরিণতি’
  • ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০
  • তিন ছেলের মধ্যে ফুটবলে কে সেরা, মেসি যা বললেন
  • সিরাজগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ 
  • ঢাকার শেওড়াপাড়ায় চাপাতি ঠেকিয়ে তরুণীর চেইন ও ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১, দুজনকে খুঁজছে পুলিশ
  • ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করবেন জোনাথন কার্ল