বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়ার পর ‘পান-বিড়ি খেয়ে অসুস্থ’ কৃষক, হাসপাতালে মৃত্যু
Published: 18th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় ভবেশ চন্দ্র রায় (৫৫) নামের এক কৃষকের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর ‘পান–বিড়ি খেয়ে অসুস্থতার’ খবর জানানো হয় পরিবারকে। স্থানীয় বাজার থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা ভবেশকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভবেশ চন্দ্র রায় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন। ‘পান–বিড়ি খেয়ে’ কীভাবে একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারেন, সেই প্রশ্ন তুলেছে পরিবার। পুলিশ বলছে, নিহত ভবেশের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ভবেশের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, গতকাল বিকেল পাঁচটায় মো.
ভবেশের ছেলে স্বপন চন্দ্র দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। শহরের কালীতলা এলাকায় থেকে তিনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন। আজ শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে স্বপন চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে বাবার ফোন থেকে আমার সঙ্গে কথা বলেন রতন ভাই। তিনি আমাকে বলেন, ‘‘তোমার বাবা নাড়াবাড়িতে আছে, পান-বিড়ি খেয়েছে। অসুস্থ হয়ে এখন বমি করতেছে।’’ সে সময় আমি বলি, তাহলে একটা ভ্যানে তুলে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর আবারও ফোন দিয়ে বলেন, ‘‘তোমার বাবার অবস্থা খুবই খারাপ বাড়িতে পাঠানো যাবে না, তুমি অ্যাম্বুলেন্স পাঠাও।’’ পরে অ্যাম্বুলেন্সে বাবাকে নিয়ে রাত সোয়া নয়টায় মেডিকেলে ভর্তি করাই। তিনতলায় উঠে ডাক্তার ইসিজি করে বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ভবেশের স্ত্রী সান্ত্বনা রানীর ভাষ্য, ভবেশকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া যুবক মো. রতন একই ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে এবং অপরজন হলেন বাসুদেবপুর গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে আখতারুল ইসলাম ওরফে আতিক। তবে অপর দুজনের নাম বলতে পারেননি সান্ত্বনা রানী। তিনি প্রশ্ন রাখেন, পান আর সিগারেট খেয়ে কীভাবে একটা সুস্থ মানুষ মারা যেতে পারেন?
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, হাসপাতালে পৌঁছার আগেই ভবেশ চন্দ্রের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও কর্তব্যরত চিকিৎসক ইজিসি করে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিরলের নাড়াবাড়ি ও ফুলবাড়ী বাজার এলাকায় অনেকেই দাদন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। একই সঙ্গে ওই এলাকা ভারতীয় মাদক চোরাচালানের পথ। ভবেশের মৃত্যুর সঙ্গে এগুলোর যোগসূত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনার পর থেকে রতন ও আতিক নামের ওই দুই যুবক গা ঢাকা দেওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সবুর বলেন, ‘রাত সাড়ে ১১টায় পরিবার থেকে আমাদেরকে ফোনে জানানো হয়। বাড়িতে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামসের মন্তব্যে শান্তর ‘খোঁচা’
নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে নাহিদ রানাকে তুলে ধরলেন তাতে বার্তা স্পষ্ট, আগে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা খেলুক তাকে, তারপর না হয় মন্তব্য করা যাবে। রীতিমতো বাংলাদেশের অধিনায়ক ‘খোঁচাই’ দিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের। যার শুরুটা অবশ্য সফররত জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামসের থেকে।
বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের বিজ্ঞাপন নাহিদ। বর্তমান সময়ে দ্রুত গতির যে সমস্ত বোলার ক্রিকেট বিশ্বের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন, নাহিদ তাদের মধ্যে অন্যতম। জোরে বলিং করতে পারার সক্ষমতা দিয়ে নাহিদ সুনজরে এসেছেন সবার। লাল বলে তাকে খেলতে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। জিম্বাবুয়ের জন্যও ডানহাতি পেসার হতে পারেন হুমকি। কিন্তু তাকে নিয়ে তেমন কোনো চিন্তিত মনে হলো না উইলিয়ামসের।
আরো পড়ুন:
টেস্ট সংস্কৃতির জন্য ভাবনার বদল চাইলেন শান্ত
বিবিসির প্রতিবেদন
ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামস বলেছিলেন, ‘‘এখনকার দিনে অনেক বোলারই আছে দ্রুতগতিতে বল করতে পারে। দুনিয়ায় শুধু একজনই জোরে বল করে না। আমরা এটার জন্য প্রস্তুত। আমাদের কাছে বোলিং মেশিন আছে, যা মানুষের চেয়ে দ্রুতগতিতে বল করে।’’
উইলিয়ামসের এমন মন্তব্য কানে গিয়েছে শান্তর। তার মন্তব্য নিয়ে শান্তর পাল্টা উত্তর, ‘‘ম্যাচে যখন নাহিদ বল করবে আর প্রতিপক্ষ যখন ব্যাটিং করবে তখন আপনি তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলে বুঝতে পারবেন যে, নাহিদ রানা কত জোরে আসলে বল করে এবং কতটা এক্সট্রাঅডিনারি।’’
নিজের বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে নাহিদকে প্রথম দেখেছিলেন শান্ত। তার শুরুর সময়টা সম্পর্কে সবটাই জানা বাংলাদেশ কাপ্তানের। একাডেমি মাঠে একসঙ্গে অনুশীলন, এরপর বিভাগীয় দলে খেলা। এখন দুজনের ঠিকানা জাতীয় দল। নাহিদকে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে দেখেছেন শান্ত। শুরুর সময় আর এখনকার অবস্থান, দুয়ের পার্থক্য থাকলেও নাহিদের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ একটাই, ১৪০ কিমির গতির বল।
সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে সতীর্থর থেকে অধিনায়ক শান্তর চাওয়া, ‘‘ওকে আমি অনেক আগে থেকে চিনি আমার ডিভিশন থেকে খেলেছে। যখন ও কিছুই খেলেনি একাডেমিতে প্র্যাকটিস করত তখন থেকেই চিনি। সো তখন থেকে এখন পর্যন্ত একটা মেসেজই দেওয়া হয়েছে, ও যেন ১৪০ প্লাস বল করে। এখন পর্যন্ত এই মেসেজটা ক্লিয়ার এবং আমি আশা করব যে, আগামী কালকে যদি খেলার সুযোগ আসে তাহলে ও যেন ১৪০ প্লাস বল করে।”৬ টেস্টে ২০ ও ৪ ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়া নাহিদ এখনো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ খেলেননি। সিলেটে প্রথমবার খেলবেন উইলিয়ামস, আরভিনদের বিপক্ষে। প্রথম মুখোমুখিতেই দ্রুতগতির বোলার চমকে দিলে অবাক হওয়ার থাকবে না।
সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ