২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের মতো নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে ডেডলাইন দিয়েছেন তার মধ্যেই সংস্কার ও মানবতাবিরোধীদের বিচার করে দ্রুত নির্বাচন দিন।

জামায়াত নেতা বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশ, জনপ্রশাসন ও সংবিধানের ন্যূনতম সংস্কার শেষ করুন। খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীরা যারা দেশকে রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছে; তাদের বিচার দৃশ্যমান করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিন-আমরা নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত আছি।

আজ শুক্রবার সকালে কুমিল্লার লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, প্রফেসর ড.

মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের লক্ষ্যে একটি জাতীয় নির্বাচনের যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে, তিনি তার একটি ডেডলাইন দিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে অনেকে আমাদের ভুল বোঝার চেষ্টা করে, কিন্তু না। আমাদের আমিরে জামায়াত গতকালও বলেছেন, সরকার বলেছে ২০২৬ সালের জুন অথবা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর- আপনি যে সময় পারেন নির্বাচন করেন। তবে কথা একটাই- চৌদ্দ আঠারো চব্বিশের মত নির্বাচন বাংলার মানুষ হতে দিবে না।

প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম। লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর আমির মু. জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদ্য মু. আবদুর রব, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মু. শাহজাহান, কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বদিউল আলম সুজন। এ সময় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য শেষে সেক্রেটারি জেনারেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৮ আসনে অধ্যক্ষ শফিকুল আলম হেলাল, কুমিল্লা-৯ আসনে ড. একেএম সৈয়দ সারোয়ার সিদ্দিকী, কুমিল্লা-১১ আসনে ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, কুমিল্লা-১০ আসনে মাওলানা ইয়াসিন আরাফাতকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ