বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তভাবে জানানো হয়েছে যে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে মিয়ানমারে শান্তি ফেরত আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

শুক্রবার ফরেন সার্ভিস দিবস উপলক্ষ্যে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন তিনি।

আগেরদিন বৃহস্পতিবার মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকি আলোচনা হয়েছে, সেই সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরো ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এন চুলিক এবং পূর্ব ও প্যাসিফিক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এন্ড্রু হেরাপ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের সহায়তা করার জন্য মিয়ানমারের যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতও ঢাকায় এসেছেন।

এসময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে বড় সমস্যা আরাকান আর্মি। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান না হওয়ায় তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যাওয়া যাচ্ছে না। আবার তাদের এড়িয়েও এ সংকট সমাধান সম্ভব নয়।

মিয়ানমার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে মিয়ানমারে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলেও শান্তি আসবে না। এটি আমি শক্তভাবে বলেছি। আমি এটাও বলেছি যে, আমরা এখন একটি নতুন বাস্তবতায় আছি। সত্যিকার অর্থে আমরা এখন নতুন প্রতিবেশীর মুখোমুখি; যারা আবার নন-স্টেট অ্যাক্টর। কাজেই তাদের সঙ্গে আমরা না পারছি সরাসরি আচরণ করতে, না পারছি উপেক্ষা করতে। এটি একটি কঠিন পরিস্থিতি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি বলেছি যে, হয়ত একটা সময় সমস্যাটি থিতিয়ে আসবে এবং সমাধানের দিকে যাবে। তখন যারা আমাদের বন্ধু ও শক্তিশালী রাষ্ট্র আছে, তাদের সেখানে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। যেন সেখানে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা রোহিঙ্গাদের মানবিকভাবে বিবেচনা করে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, শুল্কের প্রসঙ্গ এসেছে এবং বলেছি— আমরা চেষ্টা করছি বাণিজ্য বাধা কমিয়ে আনতে। আমি আরেকটি পয়েন্ট বলেছি যে, দুপক্ষের মধ্যে যতটা তফাত বলা হয়, সেটি ততটা নয়। কারণ সেবা খাতে আমরা প্রচুর আমদানি করি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট পরর ষ ট র উপদ ষ ট সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ