নওগাঁর আত্রাইয়ে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সানজিদা (১৬) নামের কিশোরীকে বিষ দিয়ে তার দাদা ও চাচা হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকালে নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন কিশোরীর মামা।

নিহত সানজিদা আত্রাইয়ের আন্দার কোটা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী শামসুল মণ্ডলের মেয়ে এবং ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সানজিদার দাদা মোসলেম মণ্ডল ও চাচা সাজিম মণ্ডল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সানজিদার মামা ফজলুর রহমান। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ফজলুর রহমান জানান, শামসুল দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। কয়েক বছর আগে তাঁর বাবা মোসলেমের কাছ থেকে বসতবাড়ির উত্তর পাশের কিছু জমি কিনেছিলেন। সেখানে চার বছর আগে একটি মাটির ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে সেখানে বাধা দেন মোসলেম ও সালিম। তাঁরা দক্ষিণ পাশে নিচু জমিতে বাড়ি তৈরি করতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে সানজিদা ও তার মায়ের সঙ্গে মোসলেম ও সাজিমের প্রায়ই কলহ হতো। এর জেরে ৯ এপ্রিল সানজিদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করেন তাঁর দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিম। ওই দিন সকালে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পর ঘরে একা পেয়ে সানজিদাকে জাপটে ধরে বাঁ হাতের শিরায় বিষ প্রয়োগ করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে বিষয়টি কাউকে জানালে তাঁর বাবা ও ভাইকে একইভাবে হত্যার হুমকি দেন তাঁরা। পরে অসুস্থ অবস্থায় সানজিদাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে সানজিদা নিজের দাদা ও চাচার বিরুদ্ধেই বিষ প্রয়োগের অভিযোগ করে গেছে। এ বিষয়ে একটি ভিডিও তাঁদের কাছে আছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের ফাঁসি দাবি করেছেন।

এদিকে এ ঘটনায় রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ওই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দীন বলেন, রাজপাড়া থানায় করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ