লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বুড়ির ঘাট পর্যন্ত যে বেড়িবাঁধটি রয়েছে, তার দুইপাশে অন্তত ৫ শতাধিক বসতঘর রয়েছে। বসবাসকৃত বাসিন্দাদের সংখ্যা কয়েক হাজার। নদীর ভাঙার কবলে পড়ে ভোলার জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ভূমিহীন লোকজন এখানে এসে বসতি গড়েছেন। বাসিন্দাদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের। নদীতে মাছ শিকার এবং অন্যের জমিতে কৃষিকাজ কিংবা দিনমজুরি দিয়ে চলে তাদের সংসার। ফলে নিজস্ব জমি কেনার মতো সাধ্য নেই এসব পরিবারের।
 
বাঁধের সংস্কার কাজ চলায় এসব আশ্রিত পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূগছে। পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত এই ভূমিহীন বাসিন্দারা। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে তারা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়। 

বেড়িবাঁধের মজুচৌধুরীর হাটের উত্তর অংশে কাজ চলমান রয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ অংশের বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে বাঁধের সংস্কার কাজে আপত্তি জানিয়েছেন। সংস্কারের আগে তারা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছেন।

মানববন্ধনকারীরা জানান, তাদের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। কবরের জায়গা পর্যন্ত নেই। বেড়িবাঁধের পাশে ঘর করে তারা বসবাস করছেন। নদীতে মাছ শিকার আর অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

তাদের দাবি, বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের উচ্ছেদ করে দিলে তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই পুনর্বাসনের আগে তারা বাঁধের কাজ শুরু করতে দেবে না। 

মানববন্ধনে আসা ভূমিহীন বৃদ্ধ এবং বিধবা আফিয়া খাতুন জানান, মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে নিমতলা নামক এলাকায় দুটি বসতঘর রয়েছে। ৮ সদস্য নিয়ে তারা ওই দুইঘরে বসবাস করেন। বাঁধ সংস্কারের কারণে তাদের দুটি বসতঘরও উচ্ছেদের মধ্যে পড়বে। কিন্তু কোথায় যাবেন তিনি, সে দুঃচিন্তা ভর করছে তার উপর। 

আফিয়া খাতুন আরও জানান, তাদের আদি নিবাস ভোলা জেলাতে। অর্ধশত বছর আগে মেঘনা নদীর ভাঙনের পর পরিবারের সাথে চলে আসেন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট এলাকায়। প্রায় ৩০ বছর আগে মজুচৌধুরীর হাটের দক্ষিণে বেড়িবাঁধে ঢালে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পূর্বে তার বাবা-মার সাথে ছিলেন, এখানেই তার বিয়ে হয়েছে। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। স্বামী মারা গেছে, এখন সন্তান এবং নাতি-নাতনীদের নিয়ে বসবাস করছেন। নিম্ন আয়ের পরিবার হওয়ায় এতো বছরেরও নিজস্ব জমি কেনার সাধ্য হয়নি। 

মানববন্ধনে আসা রহিমা বেগম বলেন, “আমার বসবাস ওই বেড়িবাঁধের পাশেই। ভোলাতে আমাদের বসতি ছিল, সাতবার ভাঙার কবলে পড়ে। জন্মের পর থেকে এখানেই আছি। আমাদের পরিবারের মোট পাঁচটি ঘর। বাঁধ সংস্কার হলে তাদের ঘরগুলো সরিয়ে নিতে হবে।” 

৬০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়বা বেগম জানান, তার পরিবারের ৫ সদস্য। ঘরে বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে রয়েছে। তাকে নিয়ে রয়েছেন বেকাদায়। এরই মধ্যে ঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। তিনিও এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে ভূমিহীনদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/লিটন/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব র পর ব র র বসব স

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে মশাল মিছিল

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক মোহান্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল করেছে। 

বৃহস্পতিবার  (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু হয়ে প্রধান ফটক সংলগ্ন কুয়েট উড পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর সেখান থেকে তারা মশাল মিছিল সহকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শেষ করে। 

শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ ব্যাজের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম, ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ জাহিদ ও একই ব্যাচের শিক্ষার্থী গালিব রাহাত।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে নকল সরবরাহের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার

গাজীপুরে ওসির প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘‘বুধবার (১৭ এপ্রিল) কতিপয় শিক্ষক আমাদের বিরুদ্ধে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের সংগ্রাম আমাদের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয়। তারা আমাদের পিতৃতুল্য। আমাদের যদি ভুল হয়ে থাকে আপনারা আমাদের ক্ষমা করবেন। কিন্তু আমরা ব্যথিত আজ দুই মাস ধরেও আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে যারা হামলা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন করলেন না। আমাদের নামে মিথ্যা মামলা হলো তাও আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করলেন না। আর এখন আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে কীভাবে গেলেন? যেখানে সারা দেশ আমাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে।’’

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ‘‘আমরা ব্যথিত। কারণ ৫৮ দিন পরও অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দিকে এখনো তাকাচ্ছে না। আমাদের ক্যাম্পাসে রামদা, চাপাতি; এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি করা হলেও সরকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। আমাদের নামে মামলা, বহিষ্কার হওয়ার পরও তারা আমাদের দিকে তাকায়নি। যেই আসিফ মাহমুদের জন্য আমরা রাস্তায় নেমে রক্ত দিয়েছি। ওই আসিফ মাহমুদ আমাদের দিকে তাকাননি। আমরা কিন্তু এখনো রাজপথ ছাড়িনি।’’ 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামীকাল সারা দেশে মহাসমাবেশ করবেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা
  • খুলনায় নিখোঁজ ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করার দাবিতে মানববন্ধন
  • চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল ফেনীতে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
  • ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক নিহতের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন
  • শিশু বিকাশ কেন্দ্রের সেবা কি বন্ধের পথে?
  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি শিক্ষার্থীদের
  • আবারও রাজপথে শিক্ষার্থীরা
  • ছাত্রী হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
  • কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে মশাল মিছিল