খুলনায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে খুলনা নগরীর বয়রা আজিজের মোড় এলাকায় পুলিশের সাবেক পরিদর্শক মাহফুজের বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন—খুলনা সদর থানাধীন বাগমার এলাকার মো.

আব্দুল হামিদ সরদারের ছেলে মো. মাসুদ রানা, মিস্ত্রি পাড়ার আব্দুর সামাদ গাইনের ছেলে মো. ফয়সাল মাহমুদ, মহিরবাড়ি ছোট খালপাড় এলাকার কামরুল ইসলামের ছেলে মো. সালাউদ্দিন এবং শেরেবাংলা আমতলা এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে রিফাত পারভেজ রাফি।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই বলেছেন, “পুলিশের সাবেক ইন্সপেক্টর মাহফুজের বাড়ির ভাড়াটিয়া সুমন অনলাইনে জুয়া খেলেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিরা বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে হানা দেন। এ সময় তারা ডিবি সদস্য পরিচয় দিয়ে সুমনের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় জনতা তাদের প্রথমে আটক করে। পরে তারা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চার জনকে আটক করে সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”

খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) এডিসি (দক্ষিণ) হুমায়ুন কবির বলেছেন, “রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমরা জানতে পারি, ডিবি পরিচয়ে চার জন বয়রা আজিজের মোড় এলাকার একটি বাড়িতে চাঁদা দাবি করে। তারা বাড়ির লোকদের জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা ভাড়াটিয়া সুমনের কাছে আরো ২ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় মারপিট করে তারা। ভুক্তভোগীর চিৎকার শুনে এলাকার মানুষ জড়ো হয়ে চার জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিচয় দিতে থাকে। একসময় সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরে থানায় নেওয়া হয়। ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ