দর্শনা চেকপোস্টে নিজ ঘরে ঝুলছিল পুলিশ সদস্যের মরদেহ
Published: 18th, April 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত এক পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁর সহকর্মীরা ঘরের জানালা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি দেখতে পান। পরে তাঁরা লাশটি উদ্ধার করেন।
মৃত পুলিশ সদস্য শামীম হোসেন (৩১) কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে।
ইমিগ্রেশন বিভাগের একাধিক পুলিশ সদস্য জানান, শামীম হোসেন ছয় মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকতেন। নিয়ম অনুযায়ী, ইমিগ্রেশন সদস্যদের প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে দায়িত্ব পালন শুরু হয় এবং শেষ হয় সন্ধ্যায়। আজ সকালে কাজে অনুপস্থিত থাকায় সহকর্মীরা তাঁর কক্ষে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ভেতর থেকে সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
ইমিগ্রেশন বিভাগের ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) রমজান আলী বলেন, আজ সকালে নিজ ঘরে শামীম হোসেনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। ফ্যানের সঙ্গে রশিতে লাশটি ঝুলছিল। বেলা পৌনে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
আইফেল টাওয়ারে ‘শান্তির বার্তা’
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্যারিসের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারে আলো দিয়ে লেখা হলো শান্তির বার্তা– ‘পিস’। এই প্রতীকী বার্তাটি গাজার জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ ও বিশ্বব্যাপী শান্তির আহ্বানের একটি শক্তিশালী প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার আনাদোলু এজেন্সির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের সামনে হাজারো মানুষ একত্রিত হয়েছেন। আস্তে আস্তে সন্ধ্যার আবরণ যখন শহরের ওপর নেমে আসছিল, তখনই টাওয়ারের গায়ে উজ্জ্বল আলোয় ভেসে ওঠে– ‘গাজাবাসীর জন্য শান্তির বার্তা’।
মুহূর্তটি উপস্থিত দর্শকের মধ্যে আবেগ ও সংবেদনশীলতার এক বিশেষ পরিবেশ তৈরি করে। দর্শকের অনেকেই হাতে ধরে রেখেছিলেন প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ছিল– ‘নিরাপত্তা চাই’, ‘গণহত্যা বন্ধ হোক’, ‘ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা চাই’– জাতীয় বিভিন্ন মানবিক ও প্রতিবাদী বার্তা।
এই আলোক বার্তাটি এমন একসময়ে প্রকাশ পায়, যখন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বহু ফিলিস্তিনি, বিশেষত নারী ও শিশু প্রাণ হারাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা স্তর থেকে যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হলেও বাস্তব পরিস্থিতির তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
আইফেল টাওয়ার, যা ফ্রান্সের গর্ব ও বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক, সেই স্থানে এই ধরনের বার্তা প্রদর্শন বিশ্ববাসীর কাছে শান্তির একটি জোরালো আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। শান্তিকামী মানবাধিকারকর্মীদের সমর্থনে এ আয়োজন করা হয়। বুধবারের এই আয়োজনে ফ্রান্সসহ বিশ্বের বহু মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, যারা গাজায় শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবিক সহায়তার স্বপ্ন দেখেন।
এ সময় ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শত শত সাংবাদিক। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সহকর্মীদের নিহতের প্রতিবাদও জানান তারা। একই সঙ্গে গাজায় সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা। নিহত সহকর্মীর ছবি বুকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তারা। সহকর্মী হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে গর্জে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। একই সঙ্গে গাজার খবর বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার অধিকার চান তারা। গাজায় শিগগিরই গণহত্যা বন্ধের দাবিও তোলেন আন্দোলনরত সাংবাদিকরা।
বিক্ষোভকারী সাংবাদিকদের মধ্যে একজন বলেন, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা যেন গাজায় নিরাপদে অবস্থান করতে পারেন, সেই দাবি জানাচ্ছি। গাজার খবর গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই। আরেকজন বলেন, গাজায় প্রায় প্রতিদিনই সাংবাদিকদের হত্যা করছে ইসরায়েল। সহকর্মীদের এই মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়।
আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই গাজার সংবাদমাধ্যমগুলো বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রশাসন। চিত্র সাংবাদিক, রিপোর্টারসহ এ পর্যন্ত দুই শতাধিক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন আইডিএফের হামলায়। যাদের বেশির ভাগই ফিলিস্তিনের সাংবাদিক। দিনশেষে রাতেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আইফেল টাওয়ারে অবস্থান করেন কয়েকশ বিক্ষোভকারী। এ সময় আবেগঘন এক মুহূর্ত তৈরি হয় আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে। আনাদোলু এজেন্সি।