কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন ‘মেসি কি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলবেন?’ একাধিকবার ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে খেলা সর্বকালের অন্যতম সেরা এই তারকা। এবারও ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’কে সাক্ষাৎকারে পরবর্তী বিশ্বকাপে খেলার কথা বলেছেন মেসি। তবে নিজের কাছে সৎ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে পা রাখতে চান তিনি। 

আগামী জুনে মেসির বয়স হয়ে যাবে ৩৮ বছর। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের সময় ৩৯ বছর পূর্ণ করে ফেলবেন তিনি। ওই বয়সে বিশ্বকাপ খেলা সহজ কাজ নয়। মেসি তাই প্রতিটি দিন ধরে এগোচ্ছেন। তার বক্তব্যের সারমর্ম হলো- যদি নিজের কাছে মনে হয় বিশ্বকাপ খেলার মতো ফিট আছেন এবং তিনি দলের জন্য বোঝা হবেন না তবেই খেলবেন বিশ্বকাপে। 

মেসি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমার জন্য এই বছরটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই, আমি বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছি এবং দলের সঙ্গে বিশ্বকাপে থাকতে চাই। কিন্তু আমি দিন ধরে ধরে এগোচ্ছি। আমি বিশ্বকাপে খেলতে পারবো কিনা এ বিষয়ে আমাকে নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে।’ 

সাক্ষাৎকারে মেসি কাতারে বিশ্বকাপ জয় নিয়ে যেমন কথা বলেছেন তেমনি ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারা নিয়েও কথা বলেছেন। ২০১৪ বিশ্বকাপ নিয়ে নিজেকে এমবাপ্পের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি, ‘এমবাপ্পে ফাইনালে চার গোল (টাইব্রেকারসহ) করেছে। তবু সে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এটা পাগলাটে মনে হবে। যদিও সে ২০১৮ বিশ্বকাপ জিতেছে, তার একটা স্বান্তনা আছে। একই ঘটনা ২০১৪ বিশ্বকাপে আমার সঙ্গে ঘটেছিল, ওই বিশ্বকাপ ছিল আমার জন্য মানসিক যন্ত্রণার। আপনি এখনো ভাবতে পারেন, আমার দুটো বিশ্বকাপ শিরোপা থাকতে পারত।’ 

তারপরও কাতারে বিশ্বকাপ জেতায় নিজেকে ধন্য ও পূর্ণ মনে করেন মেসি। ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান, ‘আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। শুধু বিশ্বকাপটা ছিল না। সেটাও জিতেছি, ফুটবলে সম্ভাব্য সবকিছুই অর্জন করেছি আমি। এটা বলতে পারা খুবই মূল্যবান অর্জন। আমি সবসময় বলি, ঈশ্বরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে কৃপা করেছেন, সবকিছু দিয়েছেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ বক প খ ল ব শ বক প জ

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন পথনকশায় ১৪ মাসে ৬১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে

গ্যাসের সিস্টেম লস (কারিগরি ত্রুটি) কমাতে পথনকশা তৈরি করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ৭টি গ্যাস কোম্পানিকে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত সিস্টেম লস কমানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে এ বিভাগ। বিভাগটি বলেছে, কোম্পানিগুলোকে এ সময়ের মধ্যে কমপক্ষে অর্ধেকের নিচে নামিয়ে আনতে হবে গ্যাসের সিস্টেম লস। কাজটি না পারলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভোগ করতে হবে শাস্তি।

সচিবালয়ে আজ বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ পথনকশা চূড়ান্ত করা হয়। জ্বালানিসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে যে পরিমাণ সিস্টেম লস হয়, তার আর্থিক মূল্য ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। আগামী বছরের জুনের মধ্যে পথনকশা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সিস্টেম লস অর্ধেকে নেমে এলে অন্তত ৫০ কোটি মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। বর্তমান বাজার মূল্যে এর পরিমাণ ৬১ হাজার কোটি টাকা।

দেশীয় কোম্পানি, আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও চট্টগ্রামের মহেশখালীতে থাকা দুই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল থেকে মিটারিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হয় গ্যাস ট্রান্সমিশন পিএলসি লিমিটেডে (জিটিসিএল)।

জিটিসিএল পরে মিটারিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করে ছয় কোম্পানিকে। এগুলো হচ্ছে তিতাস, বাখরাবাদ, কর্ণফুলী, জালালাবাদ, সুন্দরবন ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি। এসব কোম্পানিই পরে গ্যাস সরবরাহ করে গ্রাহকদের। সিস্টেম লসের মধ্যে তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাসেরই বেশি, যা সুন্দরবন গ্যাস ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাসের নেই বললেই চলে।

এখন থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে কোন কোম্পানি কোন মাসে সিস্টেম লস কতটা নামিয়ে আনবে, তা বেঁধে দেওয়া হয়েছে পথনকশায়। পথনকশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না, তিন মাস পর তা আবার খতিয়ে দেখবেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিতাস গ্যাসের গত জানুয়ারি মাসে সিস্টেম লস ছিল ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে কোম্পানিটিকে এ হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশে এবং ডিসেম্বরে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে বাখরাবাদের জানুয়ারিতে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ সিস্টেম লস থাকলেও আগামী বছরের জানুয়ারি ও ডিসেম্বরেও কোম্পানিটিকে এ হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।

পথনকশায় সিস্টেম লস কমিয়ে আনার ব্যাপারে তিতাসের ৩৯১ ও বাখরাবাদের ১৩৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কর্ণফুলী গ্যাসে ২০০, জালালাবাদে ৬৪ এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাসে ৩৬ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সিস্টেম লস কমাতে সাতটি ভিজিল্যান্স দল গঠন করা হয়েছে। অবৈধ বিতরণ পাইপলাইন অপসারণ, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং বিচ্ছিন্ন করার পর এগুলো আবার পুনঃস্থাপিত হয়েছে কি না, সেগুলো সরেজমিন দেখবে দলগুলো। পুনঃস্থাপনের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো ঠিকাদার জড়িত কি না, তা–ও চিহ্নিত করা হবে।

সূত্রগুলো জানায়, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ২ মাসে ৭০ কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন উচ্ছেদ করা হয়েছে। আর অবৈধ আবাসিক বার্নার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার। এ সময় ৯৬টি মোবাইল কোর্টসহ ও ১ হাজার ১৮৮টি মোবাইল কোর্ট ছাড়া অভিযান করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন মেসি
  • ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে নিজের সঙ্গে ‘সৎ’ থাকতে চান মেসি
  • ট্রাম্পের শুল্কঝড়ে কমবে জ্বালানি তেলের চাহিদা: ওপেক
  • নতুন পথনকশায় ১৪ মাসে ৬১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে