দেড় মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধে ত্রাণবাহী গাড়ি ঢুকতে না পারায় ক্রমেই তীব্র হচ্ছে খাদ্যসংকট। এতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে উপত্যকার বাসিন্দাদের। বিশেষ করে শিশুরা ধুঁকছে ব্যাপক অপুষ্টিতে। এ অবস্থায় ক্ষুধাকে অস্ত্র বানানোর অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ অবরোধ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় পুনরায় হামলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে ২ মার্চ সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসরায়েল। এরই মধ্যে তারা গাজার বিভিন্ন এলাকায় স্থলাভিযানও শুরু করেছে। পাশাপাশি অব্যাহতভাবে চালানো হামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক দিনে আরও ৪০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৭৩ জন। এর মধ্যে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এক হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হন।

গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, অবরোধই হচ্ছে হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগের উপায়। এ অবরোধ সরানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত তাদের নেই। এ অবস্থায় জানিয়েছে, পুষ্টিহীনতার কারণে গাজার পরিস্থিতি দ্রুতই খারাপের দিকে যাচ্ছে। কাটজ বলেন, যুদ্ধ বন্ধে শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা হলেও তাদের বাহিনী গাজায় নিজেদের বানানো বাফার জোন ছাড়বে না। ইসরায়েলের মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে হামাস বলছে, তাঁর এ বক্তব্য যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করা ছাড়া কিছু নয়। বৃহস্পতিবার টেলিগ্রাম পোস্টে সংগঠনটি লিখেছে, ইসরায়েল নিরপরাধ বেসমারিক লোকজনের জীবনরক্ষার মৌলিক উপাদান যেমন– খাবার, ওষুধ, পানি ও জ্বালানি থেকে বঞ্চিত করছে।  

এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ বলছে, পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে না দেওয়ায় শিশুরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএর এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলের অবরোধের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে জানায়, মানবিক সহায়তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় তীব্র খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেখানে মাংস, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধজাত পণ্য, শাকসবজি ও ফলমূলের মতো পুষ্টিকর খাদ্য একেবারেই কমে গেছে। ওসিএইচএর তথ্য অনুযায়ী, মার্চে অপুষ্টিতে ভোগা ৩ হাজার ৬৯৯ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২৭। পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি গাজায় বিশুদ্ধ পানির সংকটও তীব্র।
যুদ্ধের এ পরিস্থিতির মধ্যে ফিলিস্তিনে পালন করা হচ্ছে ‘কারাবন্দি দিবস’। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় আগ্রাসন শুরুর আগে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ২৫০ (৪০ নারী ও ১৭০ শিশু)। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এ সংখ্যা ৯ হাজার ৯০০ জনে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে নারী ২৭ জন; শিশুর সংখ্যা কমপক্ষে ৪০০। ফিলিস্তিনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের কারাগারে ৬৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, স্থায়ীভাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা দখলের বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে জার্মানি। মূলত ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজার তথাকথিত নিরাপত্তা অঞ্চলে সেনাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান করার কথা বলার পর এ সতর্কবার্তা এলো। অন্যদিকে, ইসরায়েল স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে উত্তর কোরিয়া। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নতুন করে শুরু করা ইসরায়েলের হামলার সমালোচনাও করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এ খবর জানায়। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ জ গণহত য ইসর য় ল ইসর য় ল র মন ত র প রব শ অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র ঘোষণার দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকালে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে ‘সর্বস্তরের জনগণ’ নামে ব্যানারে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

এ সময় বক্তারা ২০২৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণার দাবি জানান।

আরো পড়ুন:

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ 

২৪ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বক্তারা বলেন, ২০২৩ সালের জুনে বিসিসি নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের ফয়জুল করীম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীর ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালায়। ওই নির্বাচনে দলীয়করণ করে নৌকার পক্ষে কাজ করে নির্বাচন কমিশন।

বিসিসি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফয়জুল করীম তাকে মেয়র ঘোষণা করতে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল সিটি নির্বাচনী ট্রাইব্যনালের বিচারক ও সদর জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে আবেদনটি করেন ফয়জুল করীম। তার পক্ষে আদালতে আবেদন দাখিল করেন তার আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির।

ঢাকা/পলাশ/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিল্পা শেঠির টাকা আয়ের কৌশল ফাঁস 
  • আবারও ২০০ কোটি টাকার মুনাফার ঘরে আইডিএলসি ফাইন্যান্স
  • ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন
  • তীব্র খাদ্য সংকটে গাজায় অপুষ্টিতে ধুঁকছে শিশুরা
  • বরিশাল সিটির মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন ফয়জুল করীমের
  • ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণা চেয়ে মামলা 
  • চরমোনাই পীরের ভাই ফয়জুলকে বিজয়ী চেয়ে মামলা 
  • স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলে আবার আলোচনায় হিরো আলম
  • গত বছর সোয়া ৩৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে আইপিডিসি