নীলফামারীতে প্রান্তিক কৃষক পর্যায়ে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চারটি উৎপাদকের বাজার বা গ্রোয়ার্স মার্কেট ও একটি পাইকারি  মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ এসব মার্কেট এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনই করা হয়নি। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে এসব অবকাঠামো ফেলে রাখায় প্রান্তিক কৃষকের কোনো কাজে আসছে না। 

২০০৭-০৮ অর্থবছরে ‘উত্তর-পশ্চিম শস্য বহুমুখীকরণ (এনসিডিপি)’ প্রকল্পের আওতায় নীলফামারী জেলা সদরসহ সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ ও ডোমারে গ্রোয়ার্স মার্কেট ও একটি হোলসেল মার্কেট নির্মাণ করা হয়। সরকারি খাস জমিতে এসব মার্কেট নির্মাণে ব্যয় হয় আড়াই কোটি টাকা। অর্থায়ন করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহায়তায় বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। এসব মার্কেটে প্যাকিং হাউস, গ্রেডিং, শর্টিং, ওয়াশিং, ড্রাইং ইউনিট, লোডিং, আনলোডিং এরিয়া,  গোডাউন, নারী কর্নার, বাজার কমিটির কার্যালয়, ট্রেনিং সেন্টার, স্যানিটারি ল্যাট্রিনসহ ড্রেন, রাস্তা ও ডাস্টবিন নির্মাণ করা হয়। 
এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য এসব মার্কেটে আনার কথা ছিল। অথচ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অবকাঠামোতে ফাটল, দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়াসহ দরজা-জানালার গ্রিল ভেঙে গেছে। কিছু অংশ অবৈধ দখলদারদের দখলে ব্যক্তিলাভে ব্যবহার হচ্ছে। আর হোলসেল মার্কেটটি পৌরসভা ইজারা দিচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, জেলার চারটি গ্রোয়ার্স মার্কেটের মধ্যে তিনটিতে কোনোদিন হাটই বসেনি। এমনিক আশপাশের কৃষকরাই জানেন না, তাদের জন্য এটি করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডোমার গ্রোয়ার্স মার্কেটে ধানের মৌসুমে কয়েকজন পাইকার ধান কেনেন। বাকি সময় থাকে পরিত্যক্ত। এ ছাড়া সৈয়দপুরের চিকলী বাজারের গ্রোয়ার্স মার্কেট চলে গেছে অবৈধ দখলদারদের হাতে। 
হোলসেল মার্কেটটি এখন পৌরসভার দখলে। গত সরকারের আমলে নীলফামারী পৌরসভা নিয়মবহির্ভূতভাবে ছয় বছর ধরে ইজারার মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়। সর্বশেষ ২ লাখ টাকা দিয়ে বরাদ্দ নিয়েছেন সদরের নতুন বাজার এলাকার আব্দুর রশিদ নামে একজন ব্যবসায়ী। তিনি সেখানে সপ্তাহে দু’দিন কাঠের ফার্নিচারের ও দু’দিন বাঁশের হাট বসান। আব্দুর রশিদ জানান, এর আগের বছরেও তিনি বরাদ্দ পেয়েছিলেন। গত ছয় বছর থেকে মার্কেটটি এভাবে বরাদ্দ দিচ্ছে পৌরসভা।   

জেলার বড় পাইকারি আড়ত বিসমিল্লাহ সবজি মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মোকছুদ আলম গোল্ডেন বলেন, গ্রোয়ার্স মার্কেটের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকদের  উৎপাদিত ফসল সরাসরি বড় পাইকারদের কাছে বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজে আসেনি। তিনি মার্কেটগুলো চালুর দাবি জানান।
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম জানান, তিনি এ ব্যাপরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। মার্কেটগুলো সংস্কার করে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
গ্রোয়ার্স মার্কেট সম্পর্কে জানতেনই না সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী। অথচ পদাধিকার বলে তিনি এ মার্কেটের সভাপতি।  জানার পর তিনি বলেছেন, মার্কেট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। মার্কেটের ইজারা সম্পর্কেও কিছু জানেন না নীলফামারী পৌরসভার পৌর প্রশাসক সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, যেহেতু প্রশাসকের দায়িত্বে তিনি নতুন, তাই বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম হলে, সামনের বছর থেকে আর দেওয়া হবে না। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসব ম র ক ট বর দ দ প রসভ উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

গার্দিওয়ালার ভয়, চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা হারালে বড় ট্রান্সফার হবে

পেপে গার্দিওলা যেমন শিরোপা জেতাতে পারদর্শী, ঠিক একইভাবে ট্রান্সফার মার্কেটের সবচেয়ে বড় খদ্দেরও তিনি। শীতকালীন দল বদলেই খরচ করেছেন ২০০ মিলিয়ন ইউরো। সিটি কোচের এই ধরনের বিশাল অংকের অর্থ খরচের ইচ্ছে আছে আসন্ন গ্রীষ্মকালীন দল বদলেও। তবে গার্দিওয়ালা সতর্ক করে বলেছেন যে, ম্যানসিটি চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা না পেলে তাদের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সফার টার্গেটগুলো মিস হয়ে যেতে পারে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ (ইপিএলে) সবশেষ ৭ মৌসুমে ৬ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। তবে এই মৌসুমে তারা আছে টেবিলের পাঁচ নম্বরে। সামনের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে ইপিএল থেকে ৫টি দল খেলার সুযোগ পাবে। তাই বর্তমান অবস্থানে থেকেই যদি সিটি মৌসুম শেষ করে, তাহলে তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে অসুবিধা হবে না। তবে যদি একটুও পা ফসকায়, তাহলে ঘারে নিঃশ্বাস ফেলা অ্যাস্ট ভিলা ও চেলসির কাছে হারাতে হবে ৫ নম্বর স্থানটিও। সিটি শনিবার (১৯ এপ্রিল) এভারটনের বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগে তাদের হাতে রয়েছে আর মাত্র ছয়টি খেলা।

চলতি মৌসুমে কিছুটা হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর গার্দিওয়ালা গ্রীষ্মে দল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, যদি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফুটবল নিশ্চিত না হয়, তাহলে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে খেলতে সেরা খেলোয়াড়দের আনতে অসুবিধা হতে পারে।

আরো পড়ুন:

ম্যানসিটির ফুটবলারদের ইচ্ছেশক্তির অভাব দেখছেন গুন্দোয়ান

ডার্বি ড্র করে ইউনাইটেড সমর্থকদের ‘ক্লাসলেস’ বললেন গার্দিওলা

গার্দিওয়ালা বলেন, “এটা নির্ভর করে আমরা কাদের নিতে চাই এবং তারা কী শুধুমাত্র আমাদেরকেই পছন্দ করে। যদি তাদের সামনে একাধিক বিকল্প থাকে, তাহলে আমি নিশ্চিত, তারা অবশ্যই চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলছে এমন ক্লাবগুলোকেই বেছে নেবে।”

ইএসপিএনের দাবি, কেভিন ডি ব্রুইনার বিকল্প হিসেবে, জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনের ফরোয়ার্ড ফ্লোরিয়ান উইর্টজের দিকে নজর রেখেছে সিটি। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বায়ার্ন মিউনিখও তাকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী। আর এই দুই দলই আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলবে।

গার্দিওয়ালার ধারনা, “আমি জানি না। হয়তো কিছু খেলোয়াড় আসবে, আবার কেউ কেউ, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে পারছি না’ বলে আসতে চাইবে না। আমি এখনও কোনও সম্ভাব্য ভবিষ্যতের খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলিনি, তাই আসলে কিছুই বলতে পারছি না।”

ডি ব্রুইনা নিশ্চিতভাবে সিটি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। তবে দলে বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। গার্দিওয়ালা বলেন, “আমার এখন বড় স্কোয়াড। দুই একজন খেলোয়াড় গুডিসন পার্কে (এভারটনের মাঠ) সফরে যেতে পারবেন না। এটা খুব বাজে বিষয়, ভয়ানক।

তারা বেঞ্চেও থাকতে পারবে না, বাসায় বসে ভাববে ‘আমি এখানে কী করছি?’ তারা তাদের কাজটাই করতে পারছে না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, দেখা যে কে কতটা নির্ভরযোগ্য। যদি কোনো খেলোয়াড় নির্ভরযোগ্য হয়, তাহলে আর কারো দরকার নেই।”

“যদি এমন হয়, যে পুরো মৌসুমে ২০ কিংবা ২৫ শতাংশ ম্যাচ খেলে, তাহলে হয় তার নিজের বিকল্প খোঁজা দরকার, নয়তো অন্য কাউকে আনতে হবে। এটা ভারসাম্য রক্ষা, যেটা আমাদের আলোচনা, পর্যবেক্ষণ করে ঠিক করতে হবে।”

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ