Samakal:
2025-04-19@07:25:52 GMT

পদাবলি

Published: 17th, April 2025 GMT

পদাবলি

মোহ
চঞ্চল শাহরিয়ার 

যশোরের চটপটে মেয়ে ভুলে গেছে সব। দিনাজপুরের কান্তজী মন্দির, বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের পাশ দিয়ে যাবার সময় হাত ছুঁয়ে বলা সব কথা। বলেছিল, গোপন থাকুক সব। গোপন থাকুক রোকেয়া হলের পেছনে গাছের নিচে বসে চুমু খাওয়ার দিন।
যশোরের চটপটে মেয়ে ভুলে গেছে সব। ভুলে গেছে লালন মেলার সন্ধ্যা, ভুলে গেছে শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ীতে বেগুনি রঙের শাড়ি পরে আঁচল মেলে ধরার মুহূর্ত। 
আমি গাধা ভুলিনি কিছুই। সীতাকুণ্ড পাহাড়ের গায়ে লিখে রাখি যশোরের চটপটে মেয়েটির নাম। চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে আড্ডা দিতে দিতে আচমকা বলে ফেলি যশোরের চটপটে গোলগাল মেয়েটির প্রতিশ্রুতি। 

 

 

ইটের কান্নায়
আশরাফ জুয়েল

ফসিলের নিশ্বাসে ঘুমায় সভ্যতা, 
গূঢ়মাটির স্তবকে–
ঘ্রাণনালিতে জমে আছে নদীভ্রূণে

স্ফটিক,
প্রতিটি ইট যেন স্বর্ণসহিস, স্রোতের বায়নায়
লেখা হৃতকাব্য; যেখানে সময়ের ঘোড়া
ঘুমায় বিবিধ বিশ্রামে।

সিংহাসনের ফরেনসিকে নিমজ্জিত এ 
শহর–
নারীর দুঃখিত চুল চুইয়ে পড়া ক্ষোভ,
তার স্তনমুকুটে জেগে থাকা চন্দ্রের লোম।
ইতিহাসবিধৌত চামড়া–
এখন সমতলের অসুখে ফলছে বিদগ্ধ
পাতানের আলোড়ন, কৃষকের ডায়েরি ভর্তি
আত্মহত্যার লিরিক, পাতায় পাতায় ঝরে
পড়া মৃতশিশিরের গান।

মহাস্থানগড়–
কে কোথায় ভাসছে, ডুবছে কোন স্রোতের
ইশারায়, জানে না পুণ্ড্রের পতিত ঘড়ি,
শুধু ইটের কান্নায় ভেসে যায় অতিথি
সময়।
 

 

ফেরা হলো না 
শারমিন সাথী 

মন আজ বিষণ্নচিতা হয়ে আছে।
দাউদাউ করে জ্বলছে অগ্নি
অগ্নিবাষ্পে নদীর জল শুকিয়ে গেছে।
অথচ, আমার কাব্যে জল ছাড়া একটি শব্দও অবশিষ্ট ছিল না। 
তাকেও তাড়া করেছে 
চারণভূমি, রাস্তাঘাট, ইমারত। 
এমনকি চোখের জলও বিলীন হয়ে খরা নামিয়ে দিয়েছে
চোখের ভেতর। চোখে ঘুম নেই। নির্ঘুম চোখ আর স্বপ্ন দেখে না। 
দেখতে পারে না। ওলানের দুধ শুকিয়ে যাবার মতো স্বপ্নরাও উবে গেছে
অথবা, স্বপ্ন কী তা চোখেরা ভুলে গেছে। 
সব কেবল চলে যাবার জন্য প্রস্তুত
কেউ ফিরে আসে না .

.. তার ফেরার কথা ছিল
আমার ফেরার কথা ছিল। 

জল শুকিয়ে যাবার ফলে
আমাদের আর ফেরা হলো না। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পদাবলি

মোহ
চঞ্চল শাহরিয়ার 

যশোরের চটপটে মেয়ে ভুলে গেছে সব। দিনাজপুরের কান্তজী মন্দির, বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের পাশ দিয়ে যাবার সময় হাত ছুঁয়ে বলা সব কথা। বলেছিল, গোপন থাকুক সব। গোপন থাকুক রোকেয়া হলের পেছনে গাছের নিচে বসে চুমু খাওয়ার দিন।
যশোরের চটপটে মেয়ে ভুলে গেছে সব। ভুলে গেছে লালন মেলার সন্ধ্যা, ভুলে গেছে শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ীতে বেগুনি রঙের শাড়ি পরে আঁচল মেলে ধরার মুহূর্ত। 
আমি গাধা ভুলিনি কিছুই। সীতাকুণ্ড পাহাড়ের গায়ে লিখে রাখি যশোরের চটপটে মেয়েটির নাম। চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে আড্ডা দিতে দিতে আচমকা বলে ফেলি যশোরের চটপটে গোলগাল মেয়েটির প্রতিশ্রুতি। 

 

 

ইটের কান্নায়
আশরাফ জুয়েল

ফসিলের নিশ্বাসে ঘুমায় সভ্যতা, 
গূঢ়মাটির স্তবকে–
ঘ্রাণনালিতে জমে আছে নদীভ্রূণে

স্ফটিক,
প্রতিটি ইট যেন স্বর্ণসহিস, স্রোতের বায়নায়
লেখা হৃতকাব্য; যেখানে সময়ের ঘোড়া
ঘুমায় বিবিধ বিশ্রামে।

সিংহাসনের ফরেনসিকে নিমজ্জিত এ 
শহর–
নারীর দুঃখিত চুল চুইয়ে পড়া ক্ষোভ,
তার স্তনমুকুটে জেগে থাকা চন্দ্রের লোম।
ইতিহাসবিধৌত চামড়া–
এখন সমতলের অসুখে ফলছে বিদগ্ধ
পাতানের আলোড়ন, কৃষকের ডায়েরি ভর্তি
আত্মহত্যার লিরিক, পাতায় পাতায় ঝরে
পড়া মৃতশিশিরের গান।

মহাস্থানগড়–
কে কোথায় ভাসছে, ডুবছে কোন স্রোতের
ইশারায়, জানে না পুণ্ড্রের পতিত ঘড়ি,
শুধু ইটের কান্নায় ভেসে যায় অতিথি
সময়।
 

 

ফেরা হলো না 
শারমিন সাথী 

মন আজ বিষণ্নচিতা হয়ে আছে।
দাউদাউ করে জ্বলছে অগ্নি
অগ্নিবাষ্পে নদীর জল শুকিয়ে গেছে।
অথচ, আমার কাব্যে জল ছাড়া একটি শব্দও অবশিষ্ট ছিল না। 
তাকেও তাড়া করেছে 
চারণভূমি, রাস্তাঘাট, ইমারত। 
এমনকি চোখের জলও বিলীন হয়ে খরা নামিয়ে দিয়েছে
চোখের ভেতর। চোখে ঘুম নেই। নির্ঘুম চোখ আর স্বপ্ন দেখে না। 
দেখতে পারে না। ওলানের দুধ শুকিয়ে যাবার মতো স্বপ্নরাও উবে গেছে
অথবা, স্বপ্ন কী তা চোখেরা ভুলে গেছে। 
সব কেবল চলে যাবার জন্য প্রস্তুত
কেউ ফিরে আসে না ... তার ফেরার কথা ছিল
আমার ফেরার কথা ছিল। 

জল শুকিয়ে যাবার ফলে
আমাদের আর ফেরা হলো না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ