সংস্কার কর্মসূচির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন
Published: 17th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল এ চুলিক ও অ্যান্ড্রু হেরাপের নেতৃত্বে দেশটির একটি প্রতিনিধিদল এ সমর্থনের কথা জানায়।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ সমর্থনের কথা জানায় প্রতিনিধিদলটি। এ সময় তাঁরা আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নসংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।
১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ উদারতা দেখানোয় গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। এই ইস্যুতে অগ্রগতির জন্য তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় মিয়ানমার সরকারের ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল এ চুলিক বলেন, আপনার দৃষ্টিভঙ্গি প্রশংসনীয় যে আপনি রোহিঙ্গা সংকটকে আলাদাভাবে না দেখে মিয়ানমারকে একটি সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আঞ্চলিক সহযোগিতা, যোগাযোগ ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং সার্বিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য পুনরায় চালু করা এবং পাল্টা শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের বিরতির জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁর বাণিজ্য কর্মসূচিকে সমর্থন করতে কাজ অব্যাহত রেখেছি।’
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র মিশনের প্রধান ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
এদিকে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পাকিস্তানের সফররত পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। এ সময় পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্ভাবনা খুঁজে বের করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘কিছু বাধা রয়েছে। আমাদের সেগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’
এ সময় অতীতের কথা উল্লেখ করে আমনা বালুচ বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের মধ্যে বিশাল আঞ্চলিক বাজার রয়েছে। আমাদের এটি কাজে লাগানো উচিত।’ আমনা বালুচ বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই সুযোগ হারাতে পারি না।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের (বিটুবি) যোগাযোগ এবং সব পর্যায়ে সফর বিনিময় হওয়ার প্রয়োজন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি বরাবরই পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পক্ষে ছিলেন, বিশেষ করে সার্ক কাঠামোর আওতায়। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখিনি। কারণ, আমাদের সম্পর্ক হিমায়িত ছিল। আমাদের সেই বাধা অতিক্রম করতে হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, সার্ক, ওআইসি এবং ডি-৮-এর মতো বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরামে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট আম দ র র জন য এ সময় ইউন স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গার্দিওয়ালার ভয়, চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা হারালে বড় ট্রান্সফার হবে
পেপে গার্দিওলা যেমন শিরোপা জেতাতে পারদর্শী, ঠিক একইভাবে ট্রান্সফার মার্কেটের সবচেয়ে বড় খদ্দেরও তিনি। শীতকালীন দল বদলেই খরচ করেছেন ২০০ মিলিয়ন ইউরো। সিটি কোচের এই ধরনের বিশাল অংকের অর্থ খরচের ইচ্ছে আছে আসন্ন গ্রীষ্মকালীন দল বদলেও। তবে গার্দিওয়ালা সতর্ক করে বলেছেন যে, ম্যানসিটি চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা না পেলে তাদের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সফার টার্গেটগুলো মিস হয়ে যেতে পারে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ (ইপিএলে) সবশেষ ৭ মৌসুমে ৬ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। তবে এই মৌসুমে তারা আছে টেবিলের পাঁচ নম্বরে। সামনের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে ইপিএল থেকে ৫টি দল খেলার সুযোগ পাবে। তাই বর্তমান অবস্থানে থেকেই যদি সিটি মৌসুম শেষ করে, তাহলে তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে অসুবিধা হবে না। তবে যদি একটুও পা ফসকায়, তাহলে ঘারে নিঃশ্বাস ফেলা অ্যাস্ট ভিলা ও চেলসির কাছে হারাতে হবে ৫ নম্বর স্থানটিও। সিটি শনিবার (১৯ এপ্রিল) এভারটনের বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগে তাদের হাতে রয়েছে আর মাত্র ছয়টি খেলা।
চলতি মৌসুমে কিছুটা হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর গার্দিওয়ালা গ্রীষ্মে দল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, যদি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফুটবল নিশ্চিত না হয়, তাহলে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে খেলতে সেরা খেলোয়াড়দের আনতে অসুবিধা হতে পারে।
আরো পড়ুন:
ম্যানসিটির ফুটবলারদের ইচ্ছেশক্তির অভাব দেখছেন গুন্দোয়ান
ডার্বি ড্র করে ইউনাইটেড সমর্থকদের ‘ক্লাসলেস’ বললেন গার্দিওলা
গার্দিওয়ালা বলেন, “এটা নির্ভর করে আমরা কাদের নিতে চাই এবং তারা কী শুধুমাত্র আমাদেরকেই পছন্দ করে। যদি তাদের সামনে একাধিক বিকল্প থাকে, তাহলে আমি নিশ্চিত, তারা অবশ্যই চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলছে এমন ক্লাবগুলোকেই বেছে নেবে।”
ইএসপিএনের দাবি, কেভিন ডি ব্রুইনার বিকল্প হিসেবে, জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনের ফরোয়ার্ড ফ্লোরিয়ান উইর্টজের দিকে নজর রেখেছে সিটি। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বায়ার্ন মিউনিখও তাকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী। আর এই দুই দলই আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলবে।
গার্দিওয়ালার ধারনা, “আমি জানি না। হয়তো কিছু খেলোয়াড় আসবে, আবার কেউ কেউ, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে পারছি না’ বলে আসতে চাইবে না। আমি এখনও কোনও সম্ভাব্য ভবিষ্যতের খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলিনি, তাই আসলে কিছুই বলতে পারছি না।”
ডি ব্রুইনা নিশ্চিতভাবে সিটি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। তবে দলে বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। গার্দিওয়ালা বলেন, “আমার এখন বড় স্কোয়াড। দুই একজন খেলোয়াড় গুডিসন পার্কে (এভারটনের মাঠ) সফরে যেতে পারবেন না। এটা খুব বাজে বিষয়, ভয়ানক।
তারা বেঞ্চেও থাকতে পারবে না, বাসায় বসে ভাববে ‘আমি এখানে কী করছি?’ তারা তাদের কাজটাই করতে পারছে না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, দেখা যে কে কতটা নির্ভরযোগ্য। যদি কোনো খেলোয়াড় নির্ভরযোগ্য হয়, তাহলে আর কারো দরকার নেই।”
“যদি এমন হয়, যে পুরো মৌসুমে ২০ কিংবা ২৫ শতাংশ ম্যাচ খেলে, তাহলে হয় তার নিজের বিকল্প খোঁজা দরকার, নয়তো অন্য কাউকে আনতে হবে। এটা ভারসাম্য রক্ষা, যেটা আমাদের আলোচনা, পর্যবেক্ষণ করে ঠিক করতে হবে।”
ঢাকা/নাভিদ