বেরোবিতে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নম্বর কম দেওয়া ও অসদাচরণের অভিযোগ
Published: 17th, April 2025 GMT
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পরিসংখ্যান বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর কাছে অভিযোগপত্র জমা দেন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (১২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ ও অধ্যাপক ড.
শিক্ষার্থীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ স্যারের স্ট্যাট ৪২০১ নং কোর্সে শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য বিষয়ের সাথে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কোনো সাদৃশ্য ছিল না। মিড সেমিস্টার পরীক্ষায় ৬৬ জনের প্রায় সকলে ২৫ নম্বরের মধ্যে গড়ে মাত্র ৫ গড়ে পেয়েছি। সেই সাথে তিনি কন্টিনিউয়াস ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার পর (১৯ মার্চ, ২৫) প্রকাশ করেছে কিন্তু সেখানে তারিখ দিয়েছেন পরীক্ষার আগের (২৫ ফেব্রুয়ারি, ২৪) যা পুরোপুরি কল্পিত অসৎ উদ্দেশের দিকে ইঙ্গিত করে। এছাড়াও তিনি থিওরি ও ল্যাবের প্রশ্নপত্র এমনভাবে করেছে যে আমরা কোনো শিক্ষার্থীই লিখতে পারিনি। অথচ তিনি তার প্রিয় শিক্ষার্থী ২-৩ জনকে অস্বাভাবিকভাবে নম্বর বেশি দিয়েছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, আমাদের ৪.২ সেমিস্টারের ফলাফল অকৃতকার্য ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
শিক্ষার্থীরা আরও উল্লেখ করেন, ‘অতুল চন্দ্র সিংহ স্যার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ সংস্কার সংক্রান্ত পোস্ট ও লেখালেখিকে ও বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাছাড়া তিনি আমাদের সাথে সফরে অংশ নিতে না পারায় পুরো ব্যাচের প্রতি ক্ষুব্ধ।’
শিক্ষার্থীরা পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামের ব্যাপারে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের পর এই শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান হওয়ার জন্য আমাদের আন্দোলনে নামতে বলেন, যা আমরা অস্বীকার করি। জুলাই আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও অন্যান্য আয়োজনে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা থাকলেই চিহ্নিত করে হুমকি, মানসিক নির্যাতন ও পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন। ড. মো. রশীদুল ইসলাম স্যার দীর্ঘ সময় ধরে কন্টিনিউয়াস মার্ক প্রকাশ না করে বারবার হুমকি ও মানসিক চাপ প্রয়োগ করেন। অতীতে তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপ ও শিক্ষার্থীদের অপব্যবহার করার রয়েছে।’
অভিযোগকারী এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সেইসব শিক্ষকদের সাথে দেখা করলে তারা বিভিন্ন কথা শোনায়। তাই আমরা বাধ্য হয়ে সকল শিক্ষার্থী মিলে অভিযোগ দিয়েছি। যদি না মানা হয় তাহলে আমরা অনশন করব।’
সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ বলেন, ‘তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব করেছে। আমি তাদের খাতায় যা পেয়েছি তা অনুযায়ী নাম্বার দিয়েছি। ওদের পড়ার ধরণ ছিল আলাদা আমার পড়ানোর ধরণ ছিল আলাদা। কোনো অভিযোগই সত্য না।’
অধ্যাপক রশীদুল ইসলাম বলেন, ‘শেষ সেমিস্টারটা শর্ট হওয়ায় কন্টিনিউয়াস মার্কটা দিতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছিল পরবর্তীতে বিভাগের ছাত্রসংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ বিষয়টি ভিত্তিহীন ‘ শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেননি বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, আমি আগে সবাইকে ডাকবো। কেন তারা অভিযোগ করলো। তারপর তাদের কাছে শুনে কমিটি করে দিব। সত্যতা মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ য গ পর স খ য ন ব ভ গ র পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
টেক্সাসে আবাসন প্রকল্প সম্প্রসারণ করতে গিয়ে হুমকির মুখে মুসলিমরা
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বসবাসকারী মুসলিমদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি ইমরান চৌধুরীর কাছে হুমকি দিয়ে ফোনকল আসার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
কারণটা কী
পূর্ব টেক্সাসের ইস্ট প্লানো এলাকার কাছে মুসলিমদের জন্য এক হাজার নতুন বাড়ি, একটি কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ ও ইসলামিক বেসরকারি স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন ইমরান চৌধুরী।
এক অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোনে ইমরানকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এটি এখন পর্যন্ত একটি বিকল্প পথ।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকা টেক্সাসের রক্ষণশীল, শ্বেতাঙ্গ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতারাও ইমরানের এ পরিকল্পনাকে সাদরে গ্রহণ করতে পারছেন না। তাঁরা প্রকল্পের বৈধতা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন।
ইমরান চৌধুরী বলছেন, ভুলভাল বুঝিয়ে এ চাপ তৈরি করা হচ্ছে।
ইমরান আরও বলেন, ‘অঙ্গরাজ্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত যত আইন আছে, তার সব কটিই আমরা মেনে চলার চেষ্টা করছি।’
তবে চলতি সপ্তাহে ইমরান চৌধুরীর প্রকল্পটির সাংবিধানিক বৈধতা আছে কি না, তা নিয়ে তদন্তের জন্য সিনেটর জন করনিন আহ্বান জানিয়েছেন।
ইস্ট প্লানো ইসলামিক সেন্টার বা এপিক নামে পরিচিত বিদ্যমান একটি বসতি এলাকাকে সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়েই ওই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সিনেটর জন করনিন মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে টেক্সাসের ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।
টেক্সাসের গভর্নর ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ গ্রেগ অ্যাবট এ প্রকল্পটিকে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘স্পষ্ট করে বলছি, টেক্সাসে শরিয়াহ আইন চালু হতে দেওয়া হবে না। শরিয়াহ শহর গড়তে দেওয়া হবে না। এ প্রকল্পের আওতায় যে “নো গো জোনস” গড়তে চাওয়া হচ্ছে, তা–ও গড়তে দেওয়া হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রে যেসব অঙ্গরাজ্যে শরিয়াহ আইনবিরোধী বিল কার্যকর করা হয়েছে, তার একটি টেক্সাস। বিদ্বেষবিরোধী সংগঠন সাউদার্ন পভার্টি ল সেন্টার শরিয়াহ আইনবিরোধী বিলকে অতি ডানপন্থী ষড়যন্ত্রগুলোর একটি বলে অভিহিত করেছে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আওতায় বিশ্বাস করা হয় যে শরিয়াহ নামে পরিচিত ইসলামি আইন আমেরিকান আইনি ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। তবে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ও অন্য আইন বিশেষজ্ঞরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
জমি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে