১৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ৯৫তম বার্ষিকী। দিনটি সামনে রেখে জাতির কাছে আমি প্রশ্ন রাখছি: আমরা কি মাস্টারদা সূর্য সেনকে যথাযোগ্য সম্মান দিতে পেরেছি?

১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ বিপ্লবী বাহিনীর কাছে চলে যাওয়ার পর চার দিন চট্টগ্রাম শহর স্বাধীন ছিল। ১৯৩০ সালের ২২ এপ্রিল সংঘটিত ঐতিহাসিক জালালাবাদ যুদ্ধের পর ব্রিটিশ শাসকেরা আবার চট্টগ্রাম শহরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছিল।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫৪ বছর পরও ওই জালালাবাদ পাহাড়ে সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধের স্মৃতি-স্মারক স্থাপিত হয়েছে কি? ওই যুদ্ধে কারা শহীদ হয়েছিলেন, কারা আহত হয়েছিলেন, তাঁদের নাম আমরা কজনে জানি? যতই ক্ষণস্থায়ী হোক, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বাংলাদেশের কোনো একটি শহরের প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাসকে কেন আমরা বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যেতে দিলাম? স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৪ বছরের শাসকদের এহেন অবহেলা কি অক্ষম্য অপরাধ নয়?

আমার গ্রামের বাড়ি নোয়াপাড়ায়, যেটা মাস্টারদা সূর্য সেনেরও গ্রাম। আমাদের গ্রামের ভিটেবাড়ি থেকে মাস্টারদা সূর্য সেনদের সেনবাড়ির দূরত্ব ৫০০ গজের কম। মাঝখানে শুধুই ধানখেত, যার স্থানীয় নাম ‘চাঁদরা বিল’।

আমার কৈশোর বয়স থেকেই মা–বাবার কাছ থেকে আমি মাস্টারদা সূর্য সেনের কাহিনি শুনে বড় হয়েছি। তাঁরা দুজনই ছিলেন মাস্টারদার সমসাময়িক প্রতিবেশী। আজ তার কিয়দংশ আমি পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করছি। আমার বাবা মাস্টারদার চেয়ে কয়েক বছরের ছোট, কিন্তু ১৯২৫ সালে আইএ পাস করে তিনি রেলওয়ে বিভাগে চাকরি গ্রহণের সুবাদে চট্টগ্রাম শহর থেকে চাক্তাই হয়ে সাম্পানে গ্রামে যাওয়ার কারণে বেশ কয়েকবার মাস্টারদার সঙ্গে একই সাম্পানে নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাট পর্যন্ত তাঁর যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে।

মাস্টারদা তাঁকে চিনতেন পার্শ্ববর্তী মুসলিম পাড়ার একজন শিক্ষিত যুবক হিসেবে, বাবাও তাঁকে চিনতেন শহরের একটি স্কুলের একজন শিক্ষক হিসেবে। কিন্তু ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিলের আগে বাবার কোনো ধারণাই ছিল না মাস্টারদার বিপ্লবী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে। ওই ঐতিহাসিক ঘটনার পরও তাঁরা বেশ কয়েকবার একই সাম্পানে নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাট পর্যন্ত যাতায়াত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে একটি কাহিনি আমি পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করছি। মাস্টারদার বাড়ির সবচেয়ে কাছের মুসলিম বাড়ির একজন সাম্পান-মাঝি ছিলেন আহমদ আলী, তখন তিনি ছিলেন তরতাজা যুবক। মাস্টারদা তাঁর সাম্পানে করে দিনে-রাতে কর্ণফুলী পাড়ি দিয়ে তাঁর বিপ্লবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। আহমদ আলী মাঝির বাড়ি ছিল মাস্টারদার বাড়ি এবং নিকটবর্তী কর্ণফুলী নদীর ঘাট বাইন্যাঘাটার সবচেয়ে কাছের পাড়ায়, আহমদ আলী তাঁর সাম্পানও নোঙর করতেন বাইন্যাঘাটায়।

১৯৩০ সালের পর মাস্টারদাকে গ্রেপ্তার করার জন্য ব্রিটিশ শাসকদের জোর তৎপরতা শুরু হয়, কিন্তু তিন বছরের বেশি সময় তা সফল হয়নি। কিংবদন্তি রয়েছে যে ব্রিটিশদের কাছে মাস্টারদার কোনো ছবি ছিল না। উপরন্তু মাস্টারদা নাকি খুব ভালো ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারতেন। তাঁর দাড়ি-গোঁফ না থাকায় তিনি নাকি অনায়াসে নারীর ছদ্মবেশও ধারণ করতে পারতেন।

বাবার কাছ থেকে শোনা কাহিনিটি খুবই চাঞ্চল্যকর। একদিন বিকেলে মাস্টারদা এবং বাবা আহমদ আলীর সাম্পানে চড়েছেন নোয়াপাড়া আসার জন্য, কিন্তু সাম্পান ছাড়ার পূর্বক্ষণে সাম্পানে চড়ে বসে পাঁচ-ছয়জন পুলিশ, তারাও নোয়াপাড়া যাবে মাস্টারদাকে ধরার জন্য। তখন মাস্টারদাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষিত হয়েছিল। (ওই পুরস্কার যে কত বড় ছিল, সেটা বোঝা যাবে ওই সময় একজন মাঝি সারা দিনে এক টাকাও আয় করতে পারতেন না)।

মার বয়স তখন নয়-দশ বছর। আমার নানাবাড়ি আমাদের একই পাড়ায়। একদিন তাঁরা বাড়ির উঠানে খেলা করছিলেন। রব উঠল, পুলিশ আসছে সবাই পালাও। কিন্তু পালানোর আগে মা দেখলেন মাস্টারদা দৌড়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন মার জেঠার দোতলা মাটির দেউড়ির দোতলায়। ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরে ঠাঁই নিলেন। পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা পর সবাই বাইরে বেরিয়ে মাস্টারদাকে খুঁজতে শুরু করলেন, কিন্তু কোনো এক ফাঁকে তিনিও দোতলা থেকে নেমে চলে গেছেন।

সাম্পানে কেবল দুজন ব্যক্তি মাস্টারদাকে চিনতেন—বাবা এবং আহমদ আলী মাঝি। সাম্পানে মাস্টারদা এবং পুলিশরা তাস খেলায় মেতে উঠলেন। সাম্পান নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটে আসার পর বাবা এবং মাস্টারদা সাম্পান থেকে নেমে পড়লেন, আর পুলিশরা সাম্পানে চড়ে চলে গেলেন বাইন্যাঘাটার পথে। বাবা এই ঘটনা বারবার বলার কারণ ছিল, আহমদ আলী মাঝি চাইলে পুলিশের কাছে মাস্টারদাকে ধরিয়ে দিয়ে ওই ১০ হাজার টাকা পুরস্কারটি দাবি করতে পারতেন। কিন্তু লোভের কাছে পরাভূত হয়ে নোয়াপাড়ার কেউ মাস্টারদাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়নি। তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছিল পটিয়ার ধলঘাটের বিশ্বাসঘাতক নেত্র সেন। অবশ্য সে-ও পুরস্কার ভোগ করতে পারেনি, ওই অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

আরেকটি কাহিনি আমার মায়ের কাছ থেকে শোনা। মার বয়স তখন নয়-দশ বছর। আমার নানাবাড়ি আমাদের একই পাড়ায়। একদিন তাঁরা বাড়ির উঠানে খেলা করছিলেন। রব উঠল, পুলিশ আসছে সবাই পালাও। কিন্তু পালানোর আগে মা দেখলেন মাস্টারদা দৌড়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন মার জেঠার দোতলা মাটির দেউড়ির দোতলায়। ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরে ঠাঁই নিলেন। পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা পর সবাই বাইরে বেরিয়ে মাস্টারদাকে খুঁজতে শুরু করলেন, কিন্তু কোনো এক ফাঁকে তিনিও দোতলা থেকে নেমে চলে গেছেন।

আরও পড়ুনআলোর পথযাত্রী ১২ মার্চ ২০২৫

এ ঘটনাটিও প্রমাণ করে, মাস্টারদাকে গ্রেপ্তার করার জন্য দিনে-রাতে পুলিশ বারবার গ্রামে হানা দিলেও হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে তাঁর গ্রামবাসীরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। উল্লিখিত আহমদ আলী মাঝি বৃদ্ধ বয়সে কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট-নোয়াপাড়া পথে আমাদের পরিবারেরও যাতায়াতের বিশ্বস্ত সারথিতে পরিণত হয়েছিলেন। ওই সময়ে যদি বাবার কাছ থেকে মাস্টারদার কাহিনি শুনতাম, তাহলে হয়তো তাঁর জীবদ্দশায় তাঁকে একবার হলেও শ্রদ্ধা জানাতাম। ওই সুযোগ আমি পেয়েছিলাম আশির দশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর।

১৯৮৪ সালে আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকার সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হয়ে এসেছিলেন ওমর ফারুক নামের একজন আমলা, পরে তিনি স্বরাষ্ট্রসচিবও হয়েছিলেন। তিনি শত্রু সম্পত্তি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মাস্টারদা সূর্য সেনের ভিটে জনৈক দুবাইওয়ালার কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল চট্টগ্রামের সুধী সমাজ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও আন্দোলনের মূল শক্তি হিসেবে মাঠে নেমেছিল। সভা-সমাবেশ-মিছিলে চট্টগ্রাম নগরীর রাজপথ প্রকম্পিত করেছিলাম আমরা। মাস্টারদার ভিটিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় আমি প্রয়াত আহমদ আলী মাঝির কাহিনিটি বর্ণনা করে গ্রামবাসীকে তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে সোচ্চার করেছিলাম।

যাক, প্রবল আন্দোলনের ফলে কিছুদিনের মধ্যেই স্বৈরাচার এরশাদ সরকার ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিল। এরপর ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রী হয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। তাঁর প্রচেষ্টায় ওই আমলেই মাস্টারদা সূর্য সেনের ভিটেবাড়িতে একটি সরকারি ‘মা ও শিশু সদন’ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, যা এখনো চালু রয়েছে।

২০১৪ সালে ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি এসেছিলেন মাস্টারদার ভিটেবাড়িতে। যাতায়াতের ইটের রাস্তা দেখে তিনি চরম অসন্তোষ জ্ঞাপন করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ পেয়ে হাসিনা সরকার তড়িঘড়ি করে সড়কটি পাকা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল, যার সুবিধা আমরা এখনো ভোগ করে চলেছি। প্রণব মুখার্জি মাস্টারদার বাড়ির ভিটায় একটি বকুল ফুলের চারা রোপণ করেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে জানাতে চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারদা সূর্য সেন হল নামকরণের বিষয়টি। ওই হলের নাম ছিল জিন্নাহ হল, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ওই হলের আবাসিক ছাত্র ছিলাম। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছিল, তখন প্রথম দিনেই ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে হলের নাম পাল্টে ‘মাস্টারদা সূর্য সেন হল’ করে নামফলক টাঙিয়ে দিই। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সার্জেন্ট জহুরুল হক হল থেকে মিছিল এসে ওই নামফলক ভেঙে দিয়ে যায়। তাদের দাবি, পাকিস্তানের জাতির পিতা জিন্নাহর নামের হলের নাম বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নামেই হতে হবে।

ওরা চলে যাওয়ার পর আমরা আবার মাস্টারদা সূর্য সেন হল নামটি লিখে আরেকটি নামফলক তৈরি করে টাঙিয়ে দিলাম এবং সেটি দিনরাত পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম। পরদিন সকালেই বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত এসে গেল, ‘মাস্টারদা সূর্য সেন হলই’ হবে হলের নাম। এভাবেই বাংলাদেশে প্রথম কোনো স্থাপনার নাম মাস্টারদার নামে হয়েছিল।

মইনুল ইসলাম অর্থনীতিবিদ এবং অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র য স ন হল হয় ছ ল ন প রস ক র ত হয় ছ ল হল র ন ম র একজন র জন য আম দ র কর ছ ল শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় নৌকায় আগুন, ১৪৩ মরদেহ উদ্ধার

আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে একটি নৌকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন। নৌকাটিতে জ্বালানি ছিল। আগুন লাগার পর নৌকাটি নদীতে উল্টে যায় বলে গতকাল শুক্রবার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান।

ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর ইকুয়েটুর প্রদেশের রাজধানী এমবানডাকার কাছে। রুকি ও বিশ্বের সবচেয়ে গভীর কঙ্গো নদীর সংযোগস্থলে এ বিপর্যয় ঘটে।

দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কঙ্গো নদীতে ওই কাঠের নৌকাটিতে কয়েক শ আরোহী ছিলেন বলে জানান ওই অঞ্চলের জাতীয় সহকারীদের প্রতিনিধিদলের প্রধান জোসেফিন-প্যাসিফিক লোকুমু।

এএফপিকে লোকুমু বলেন, প্রথম ধাপে গত বুধবার ১৩১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আরও ১২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাঁদের অনেকেই আগুনে পুড়ে গেছেন।

স্থানীয় নাগরিক সমাজের একজন নেতা জোসেফ লোকোন্দো জানান, তিনি মরদেহগুলোর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় সহায়তা করেছেন। জোসেফ বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ১৪৫ জন। তাঁদের কেউ কেউ পুড়ে গেছেন। কেউবা পানিতে ডুবে মারা গেছেন।

এ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে নৌকায় রান্নার আগুনকে চিহ্নিত করেছেন লোকুমু। তিনি বলেন, নৌকাটিতে একজন নারী রান্নার জন্য আগুন জ্বালিয়েছিলেন। পাশেই ছিল নৌকার জ্বালানি। বিস্ফোরণ হলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক নারী ও শিশুর মৃত্যু হয়।

নৌকাটিতে ঠিক কতজন আরোহী ছিলেন, সেটা জানা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে লোকুমু বলেন, ‘সংখ্যাটি কয়েক শ।’ তিনি জানান, বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার লোকুমু জানান, এখনো কিছু পরিবার তাঁদের স্বজনদের খোঁজ পাননি।  

মধ্য আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে সড়ক পরিবহনব্যবস্থা বেশ নাজুক। সেখানে পর্যাপ্ত ব্যবহারযোগ্য রাস্তা নেই। এর ফলে অনেক মানুষ হ্রদ, কঙ্গো নদী এবং এর উপশাখাগুলোয় নৌকায় যাতায়াত করেন। প্রায়ই নৌকাডুবির খবর পাওয়া যায়। এসব ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও বেশি হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত নৌকাগুলোয় যাত্রীদের যথাযথ তালিকা না থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম জটিল হয়ে পড়ে।

এর আগে ২০২৩ সালে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর ইকুয়েটুর প্রদেশে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৪৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গিয়েছিল। গত বছরের অক্টোবরে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় হ্রদ কিভুতে একটি নৌকা উল্টে ২০ জনের বেশি নিহত হন বলে জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে এই হ্রদে আরেকটি নৌকাডুবির ঘটনায় প্রায় ১০০ মানুষের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ত্রের মহড়া, কালোতালিকা, কাদা-ছোড়াছুড়ি, জনসংযোগের নামে বলিউডে যা হয়
  • গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় নৌকায় আগুন, ১৪৩ মরদেহ উদ্ধার
  • দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা শ্রমিকের
  • সিলেট বিএনপি এখনো ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায়
  • কতগুলো বিষয়ে একমত, তা এখনই বলতে পারব না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা
  • ‘গুম’ হওয়ার ১৩ বছর: ইলিয়াস আলীর ফেরার আশায় আছেন সিলেটবাসী
  • সংবিধান সংশোধন-সংক্রান্ত মৌলিক প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে এক জায়গায় আসার চেষ্টা করবে বিএনপি
  • ইলিয়াস আলীর সন্ধান মেলেনি ১৩ বছরেও