রাজধানীতে বাসায় ঢুকে জান্নাতুল ইসলাম (৩০) নামের এক নারীকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক দুর্বৃত্ত। ওই নারীকে উদ্ধৃত করে তাঁর স্বামী এ অভিযোগ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের আমবাগান এলাকায় নিজ বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

জান্নাতুল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বামী রাকিবুল হাসান একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ–অর্থ সম্পাদক।

বিকেলে হাসপাতালে রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জান্নাতুলকে নিয়ে আমবাগানে ভাড়া বাসায় থাকেন। দুপুরে একটি কাজে তিনি কারওয়ান বাজারে যান। সেখান থেকে বেলা তিনটার দিকে বাসায় ফিরে দরজার কড়া নাড়লে স্ত্রীর কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। পরে চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান জান্নাতুল মেঝেতে পড়ে আছেন। স্কচটেপ দিয়ে তাঁর হাত–পা বাঁধা আর মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া। প্রথমে তাঁকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তিনি।

রাকিবুল জানান, স্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, দুপুরে মাস্ক পরা এক ব্যক্তি এসে দরজার কড়া নাড়েন। এ সময় পরিচয় জানতে চাওয়া হলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কোর্ট থেকে এসেছি’। তখন রাকিবুল বাসায় নেই বলে ওই ব্যক্তিকে জানান জান্নাতুল। এ সময় মাস্ক ও গ্লাভস পরা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কাগজটা দিয়ে চলে যাব’। দরজা খোলামাত্রই লোকটি জান্নাতুলের মুখে স্প্রে করে স্কচটেপ দিয়ে হাত–পা বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি জান্নাতুলের গলায় ইনজেকশন দেন। পরে তাঁকে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওপরে তুলতে না পেরে বাসার মেঝেতে রেখে চলে যান। হামলাকারী বারবার বলছিলেন, ‘তোকে মেরে তোর স্বামীকে ফাঁসাব’।

রাকিবুল জানান, তাঁর রাজনৈতিক কোনো শত্রু নেই। তবে ব্যবসায়িক কারণে কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।

এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে জান্নাতুলের বাসায় ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জান্নাতুলের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কানাডায় ফেডারেল নির্বাচনের আগাম ভোট শুরু, এগিয়ে লিবারেল পার্টি

কানাডার স্থানীয় সময় শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ফেডারেল নির্বাচনের আগাম ভোট গ্রহণ। ভোট চলবে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ এপ্রিল। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোট চলবে।

নির্বাচন কানাডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোটাররা নির্ধারিত চার দিনের যেকোনো দিন তাদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন। আগাম ভোটের সুবিধা গ্রহণ করে অনেকেই মূল নির্বাচনের দিন ভিড় এড়াতে চাইছেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা এই সময়ে আরও বেশি ভোটারকে টানার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। ভোটারদের ভোটার কার্ড ও একটি সরকার স্বীকৃত পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফেডারেল নির্বাচনের মূল ভোট গ্রহণ দিন নির্ধারিত রয়েছে এ মাসেই, ২৮ এপ্রিল। তবে আগাম ভোটারদের অংশগ্রহণ নির্বাচনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে কানাডার যেকোনো নির্বাচনের আগে ন্যাশনাল ডিবেট অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে নেতারা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে একে অপরের যুক্তি তুলে ধরে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুদিন দুটি ডিবেট অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি ফ্রান্স ভাষায়, অন্যটি ইংরেজি ভাষায়। 

কানাডার যে কোনো জাতীয় নির্বাচন কিংবা ভবিষ্যৎ নির্বাচন এমনকি মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে প্রধান নেতারা এ রকম বিতর্কে লিপ্ত হয় নির্বাচনের আগে। এবারের নির্বাচনে মাত্র ৩৬ দিনের প্রচারণায় দুটি বিতর্ক রাখা হয়েছে। দুদিনের বিতর্কে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল কানাডার অর্থনীতি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক। এই শুল্ক আরোপের ফলে কানাডার অর্থনীতিতে কি ধরনের প্রভাব পড়বে তাঁর বিশ্লেষণ। এই সকল সমস্যা কে ভালোভাবে সমাধান করতে পারবে, পাশাপাশি নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান নিয়েও আলাপ আলোচনা হয়েছে। এই দুই দিনের ভেতর ইমিগ্রেশন নিয়ে কোন আলাপ আলোচনা হয়নি। এবারের নির্বাচনে প্রচারণা শুরুর প্রথম থেকেই ইমিগ্রেন্টদের নিয়ে তেমন কথাবার্তা বলা হয়নি। যদিও ইমিগ্রেশন পলিসিই দেশকে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দিয়েছে কিন্তু গত দু’দিনের আলোচনায় ইমিগ্রেশন পলিসির কোনো আলাপ হয়নি।

কানাডা এই মুহূর্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। দলের নেতারা তাদের ভোটারদের কাছ থেকে ভোট পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে ভোটারদের মধ্য এক ধরনের দোদুল্যমান অবস্থা বিরাজ করছে। শেষের এই সময়টার মধ্যে তারা মনস্থির করে ফেলেন কাকে ভোট দেবেন। এখন পর্যন্ত কোনো দল তাদের ইলেকশন ম্যানিফেস্টো এখনও প্রচার করেনি। 

বিভিন্ন সংগঠনের জনমত জরিপের তথ্য উপাত্ত ও জরিপ সংগ্রহ করে ‘দ্য টরেন্টোস্টার দ্য সিগন্যাল’ একটি গড় জরিপ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে লিবারেল পার্টি ৪২.৪ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে রয়েছে। ৩৪৩ টি আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত তারা ১৭৭টি আসনে এগিয়ে যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের জন্য ১৭২ আসনের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টির অবস্থান ৪০.২ শতাংশ যা আসনের দিক দিয়ে ১৩০টি। সিটিভি ও গ্লোবাল মেইলের মিডিয়ার জরিপেও লিবারেল পার্টি এগিয়ে রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ