মহাবিশ্বের তুলনায় পৃথিবী কত ক্ষুদ্র
Published: 17th, April 2025 GMT
মহাকাশে দূর থেকে পৃথিবীকে ফ্যাকাশে নীল বিন্দুর মতো দেখা যায়। এ কারণেই নীল বিন্দু নামের তকমা পেয়েছে আমাদের পৃথিবী। ১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৬০০ কোটি কিলোমিটার দূর থেকে ভয়েজার ১ মহাকাশযান পৃথিবীর একটি ছবি তোলে। সেই ছবিতে পৃথিবীকে সুবিশাল মহাবিশ্বে একটি অস্পষ্ট ফ্যাকাশে নীল বিন্দুর মতো দেখা যায়। সেই বিখ্যাত ছবির নামকরণ করা হয় ‘পেল ব্লু ডট’ বা ফ্যাকাশে নীল বিন্দু। সেটি শুধু সাধারণ কোনো বৈজ্ঞানিক ছবি নয়, মানব অস্তিত্বের ক্ষুদ্রতা ও গুরুত্বের গভীর দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দেয়।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল সাগান ভয়েজার ১ খেয়াযানের ক্যামেরা ঘুরিয়ে পৃথিবীর ছবি তোলার প্রস্তাব দেন। ভয়েজার ১ তখন প্লুটো কক্ষপথ ছাড়িয়ে বহুদূরে ছুটে যাচ্ছিল। সাগান মনে করেছিলেন, দূর থেকে পৃথিবীকে দেখলে আমাদের গ্রহের আসল স্থান ও মহাবিশ্বে আমাদের ক্ষুদ্রতা আমরা উপলব্ধি করতে পারব। নাসার বিজ্ঞানীরা এই প্রস্তাবের প্রথম দিকে বেশ দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। সূর্যের আলোর কারণে ক্যামেরার সেন্সর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিল। কার্ল সাগানের দৃঢ় আগ্রহের কারণেই ঐতিহাসিক ছবিটি তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনপৃথিবীর গভীরে কী রয়েছে০২ নভেম্বর ২০২৩ছবিটি প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। সুবিশাল মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের গ্রহের অসীম ক্ষুদ্রতা ও নিঃসঙ্গতা সেই ছবিতে গভীরভাবে দেখা যায়। কার্ল সাগান ছবিটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তার বিখ্যাত বই ‘পেল ব্লু ডট: আ ভিশন অফ দ্য হিউম্যান ফিউচার ইন স্পেস’ প্রকাশ করেন। বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ওই ক্ষুদ্র বিন্দুটিই আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী। সেখানেই আমাদের পরিচিত সবাই, যাদের আমরা ভালোবাসি, যাদেরকে চিনি, যাদের কথা আমরা শুনছি—সব মানুষই যারা একসময় ছিল, সবার জীবন এখানে অতিবাহিত হয়েছে।’
আরও পড়ুনএক সেকেন্ডের জন্য পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হলে কী হতে পারে০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪জ্যোতির্বিদেরা এই ছবিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। এই ছবির মাধ্যমে মানুষ হিসেবে আমাদের অহংকার ও আত্মকেন্দ্রিকতা চূর্ণ হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এক অসীম শূন্যতার মধ্যে ভাসমান একটি ক্ষুদ্র ধূলিকণা আমরা, তা এই ছবি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ছবিটি কেবল দার্শনিক বা আবেগের দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই ছবি প্রমাণ করে দূর মহাকাশ থেকেও একটি গ্রহকে আলোকরশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব। ভবিষ্যতে অন্যান্য নক্ষত্রমণ্ডলে প্রাণের সন্ধান করার ক্ষেত্রে এ ধারণাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ছবিটি ভয়েজার ১ মহাকাশযানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলা যায়। এত দূর থেকে একটি দুর্বল আলোর উৎসকে ক্যামেরাবন্দী করা এবং ১৯৯০ সালে সেই ডেটা পৃথিবীতে প্রেরণ করা—নিঃসন্দেহে এক অসাধারণ বৈজ্ঞানিক কৃতিত্ব।
সূত্র: অ্যাস্ট্রোগ্রাফি
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যানেজারের ভুলে ‘ব্যাটসম্যান’, আইপিএলে গ্রিন হতে চান বোলারও
অবশেষে তাহলে রহস্য কাটল!
অ্যাশেজে তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলছেন অলরাউন্ডার হিসেবে। ক্রিকেটবিশ্বে ব্যাটিং–বোলিং দুটির জন্যই পরিচিত তিনি। অথচ আইপিএল নিলামে ক্যামেরন গ্রিন কি না শুধুই ‘ব্যাটসম্যান’!
আইপিএল নিলামের খেলোয়াড় তালিকায় অস্ট্রেলিয়ান এ ক্রিকেটারের পরিচয় ‘ব্যাটসম্যান’ দেখে প্রশ্ন জেগেছিল অনেকেরই। ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম তো এ নিয়ে নানা ব্যাখ্যাও দাঁড় করিয়েছিল। তবে গ্রিন অবশেষে জানালেন, তিনি ব্যাটসম্যানদের তালিকায় গেছেন তাঁর ম্যানেজারের ভুলে। আইপিএলে বল করতে তাঁর কোনো বাধা নেই।
২৬ বছর বয়সী গ্রিন এর আগে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস (২০২৩) ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (২০২৪) হয়ে খেলেছেন। পিঠের অস্ত্রোপচারের কারণে ২০২৫ মৌসুমে তিনি খেলতে পারেননি। জুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে এখন পুরোদমে বোলিং করার ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলমান অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া তাঁকে অলরাউন্ডার হিসেবেই ব্যবহার করছে।
মুম্বাইয়ের জার্সিতে টিম ডেভিডের সঙ্গে গ্রিন