গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমদের প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে যায়। পরে ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নির্যাতনের শিকার ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা জাকারিয়া হাসানের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা। মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এবং ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের সাবেক ছাত্রলীগের নেতা ফরিদুল ইসলামসহ দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে গড়িমসি করার অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা বাসন থানার ওসিকে প্রত্যাহার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ  করে।  

বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন বাসন থানা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক খোরশেদ আলম, গাজীপুর জজ কোর্টের আইনজীবী সোহেল রানা, শ্রমিকদলের কর্মী নুরুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা কাজী মামুন, জাহিদ হাসান, ছাত্রদল নেতা মুরাদ মির্জাসহ কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভকারীরা গাজীপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আরো পড়ুন:

সচিবালয়ে বৈঠকে সন্তুষ্ট নন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা, ‘আন্দোলন চলবে’

খুলনায় রেলপথ অবরোধ করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাসন থানার ওসি কায়সার আহমেদ বলেন, ‘‘মারামারি সংক্রান্ত একটি মামলার আসামিরা ধরা না পড়ায় কিছু শিক্ষার্থী আমার উপর ক্ষুব্ধ থাকায় বিক্ষোভ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা যেসব অভিযোগ করেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।’’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জাহিদ হাসান বলেন, বিক্ষোভকারীরা ওসির বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করেছেন, তা  তদন্ত করে দেখা হবে। দোষী সাবস্ত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের বিবৃতিতে নেই ক্ষমা প্রার্থনার প্রসঙ্গ

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশ যে দাবি করেছিল, তার সঙ্গে ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের বিবৃতিতে। মুক্তিযুদ্ধে নৃশংসতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং স্বাধীনতাপূর্ব অভিন্ন সম্পদে হিস্যা দাবির কথা বলেছিল বাংলাদেশ। বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের বিবৃতিতে এই বিষয়গুলোর উল্লেখ নেই। বৃহস্পতিবার ঢাকায় দুই দেশের সচিব পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দেড় দশক পর হওয়া এই বৈঠকে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের জন্য অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান চায় ঢাকা। 

বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, স্বাধীনতাপূর্ব ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে ৪৩২ কোটি ডলার চেয়েছে। এ ছাড়া ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নৃশংসতার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার বিষয় বলেছে। এর এক দিন পর শুক্রবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক সম্পর্কে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, গাজায় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা এমনকি জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গও রয়েছে। এসব নিয়ে ঢাকার বৈঠকে আলোচনার কথা বলা হলেও মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়া কিংবা বকেয়া অর্থের বিষয়ে কিছু বলা নেই ওই বিবৃতিতে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছিলেন, আলোচনায় অমীমাংসিত বিষয়ের মধ্যে ছিল আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভক্ত সম্পদের সুষম বণ্টন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রেরিত বৈদেশিক সাহায্য তহবিল হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়া।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আগের একটি হিসাবে ৪০০ কোটি ডলার এবং আরেকটা হিসাবে ৪৩২ কোটি ডলার পাওনা রয়েছে।’ তবে এসব ইস্যুতে একটি শব্দও লেখেনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে অতীতের ইস্যুর চেয়ে ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দিকে নজর দিয়েছে ইসলামাবাদ।

তাদের ভাষ্য, দেশ দুটির সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং অভিন্ন ইতিহাস ও জনআকাঙ্ক্ষার কথা এসেছে আলোচনায়। বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছে দুই পক্ষ। সাম্প্রতিক কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের প্রসঙ্গও এসেছে সেখানে। নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দার ওই সব আলাপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করেছে। সম্পর্কের গতিশীলতা ধরে রাখতে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ, ঝুলে থাকা চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করা এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহায়তা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দেশটির কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশিদের পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশ প্রস্তাব দিয়েছে মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের। করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানান হয়েছে। পাশাপাশি আকাশপথে ফের সরাসরি যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সন্তোষ জানানো হয়েছে ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির ব্যাপারে। 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ