কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের নামে এ কোন রাজনীতি
Published: 17th, April 2025 GMT
বুধবার সকালে দিলু রোডের বাসা থেকে বের হতেই দেখি, তেজগাঁওমুখী সড়ক স্থবির হয়ে আছে। কোনো যানবাহন চলছে না।
খবর নিয়ে জানলাম, ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেন তাঁরা। সড়ক আটকে রাখায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এতে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। ঢাকার কোনো এক সড়ক অচল হয়ে পড়লে শহরের বড় অংশ অচল হয়ে পড়ে।
অবরোধকারীদের মধ্যে সরকারি–বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ (টিএসসি) বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।
তাঁদের দাবি যৌক্তিক না অযৌক্তিক, সেই বিতর্কে না গিয়েও বলব, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকার বা কর্তৃপক্ষ আগে কথা বলে কেন সমস্যার সমাধান করল না?
একই দাবিতে তাঁরা আগেও আন্দোলন করেছিলেন।
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ঘটনাটি আরও উদ্বেগজনক। গত বছর ক্ষমতার পালাবদলের আগে উপাচার্য ছিলেন মিহিররঞ্জন।
‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে তাঁকে পদচ্যূত করা হয়। এরপর এলেন মোহাম্মদ মাছুদ। সহ উপাচার্য শরিফুল আলম।
শিক্ষকেরাও দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েন, কেউ উপাচার্যের পক্ষে। কেউ সহ উপাচার্যের পক্ষে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যিালয়ে চাপা উত্তেজনা চলছিল।
১৮এপ্রিল ছাত্রদলের লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র কর শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপক্ষ বললেন, কুয়েটে দলীয় ছাত্ররাজনীতি চলবে না।
তাদের পেছনে প্রশাসনেরও কারও কারও সায় ছিল বলে অভিযোগ আছে। যারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করছেন, তারাও একধরনের রাজনীতি করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে।
২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ৬ দফা দাবি পেশ করেছিলেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল। পৌনে দুই মাসেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একাংশ ক্যাম্পাসে এসে অবস্থান নেন এবং হলের তালা ভেঙে ভেতর ঢুকে পড়েন।
কুয়েট শিক্ষার্থীরা প্রথমে ৬ দফা দাবি জানিয়েছিলেন। এখন বলছেন, এক দফা; অর্থাৎ উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের সামনে গিয়ে শিক্ষকদের তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু শিক্ষকেরা সাড়া দেননি। এরপর তারা নিজেরাই তালা ভেঙে হলে ঢুকে পড়েন।
একটি ঘটনা কীভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই মাস অচল করে রাখে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ কুয়েট।
এখানে শিক্ষার্থীদের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকারেরও। শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে বাসে চড়ে ঢাকায় এলেন।
তারপরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলো না। আর কুয়েট কর্তৃপক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের মধ্যেই সমাধান খুঁজে পেয়েছে। ৩৭ জনকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়।
বুধবার শিক্ষার্থীরা লিখিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘যেহেতু ভিসি কুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, যেহেতু ভিসি ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন, যেহেতু ভিসি নেট, পানি অফ করে হল থেকে বের করে দিয়েছেন, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছেন, সেহেতু আমরা ছয় দফা থেকে এক দফা ঘোষণা করছি।’
আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি উপলব্ধিও করতে পারেনি।
যখন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে হল খোলার দাবি জানিয়েছেন, তখন সিন্ডিকেট সিন্ডিকেট জরুরি সভা ডেকে আগামী ২ মে আবাসিক হল এবং ৪ মে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়।
স্বাভাবিকভাবে এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়। যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক আস্থার ওপর।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়।
সেদিন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়।
তাদের দাবি, ওই মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করে। কথায় বলে এক হাতে তালি বাজে না। দুই পক্ষই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার নামে যা করেছেন, তাও একধরনের রাজনীতি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩৭ শিক্ষার্থীর নামে বহিষ্কারাদেশ জারি করে। তাদের এই সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক সেই প্রশ্ন উঠেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। একটি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের শিকার হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে।
তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব।
অটোরিকশাচালকের সঙ্গে বিতণ্ডা থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ঘটনা হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক যুবককে মারধরের পর জুতার মালা গলায় পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ।
মারধরের শিকার ওই যুবক পরিসংখ্যান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রদলের দাবি, ওই যুবক ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিএফসির (চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ওই উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। ছাত্রদলের কর্মীদের মারধরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তিনি।
এই অভিযোগ সত্য হলেও মারধর ও অপমান করার এখতিয়ার কি ছাত্রদলের আছে? তাহলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের ফারাকটি কী হলো?
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
১৫ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা একপর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপে রূপ নেয়। এ ঘটনায় অন্তত দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এই দুই কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে কতবার শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষ লিপ্ত হয়েছেন, তার হিসাব নেই। এখানে শক্ত কোনো কারণও থাকার প্রয়োজন নেই।
কোন কলেজের শিক্ষার্থী আগে যাবেন না পরে যাবেন, এটাও সংঘাতের কারণ হতে পারে। সোমবারের ঘটনার সূত্রপাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লেখালেখি।
লেখার জবাব লিখে না দিয়ে তাঁরা ইটপাটকেলে জবাব দিয়েছেন। এতে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আহত হন।
শিক্ষাঙ্গনে যে এই নৈরাজ্য চলছে, তা দূর করার দায়িত্ব কার? সরকারের। কিন্তু সরকার সেই দায়িত্ব পালন করছে না বলেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলেছে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, যা খুশি করা।
কাজী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার পংক্তি ধার করে বলতে হয়, ‘যখন চাহে এ মন যা।’ যখন চাহে এ মন যা দিয়ে আর যাই হোক কোনো দেশের শিক্ষাকে বাঁচানো যাবে না।
আরও পড়ুনগণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী নতুন ছাত্ররাজনীতি কেমন হবে০৫ অক্টোবর ২০২৪খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ঘটনাটি আরও উদ্বেগজনক। গত বছর ক্ষমতার পালাবদলের আগে উপাচার্য ছিলেন মিহিররঞ্জন। ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে তাঁকে পদচ্যূত করা হয়।
এরপর এলেন মোহাম্মদ মাছুদ। সহ উপাচার্য শরিফুল আলম। শিক্ষকেরাও দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েন, কেউ উপাচার্যের পক্ষে। কেউ সহ উপাচার্যের পক্ষে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যিালয়ে চাপা উত্তেজনা চলছিল।
১৮ এপ্রিল ছাত্রদলের লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র কর শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপক্ষ বললেন, কুয়েটে দলীয় ছাত্ররাজনীতি চলবে না।
তাদের পেছনে প্রশাসনেরও কারও কারও সায় ছিল বলে অভিযোগ আছে। যারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করছেন, তারাও একধরনের রাজনীতি করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে।
২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ৬ দফা দাবি পেশ করেছিলেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল। পৌনে দুই মাসেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একাংশ ক্যাম্পাসে এসে অবস্থান নেন এবং হলের তালা ভেঙে ভেতর ঢুকে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি উপলব্ধিও করতে পারেনি। যখন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে হল খোলার দাবি জানিয়েছেন, তখন সিন্ডিকেট সিন্ডিকেট জরুরি সভা ডেকে আগামী ২ মে আবাসিক হল এবং ৪ মে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাভাবিকভাবে এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়। যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক আস্থার ওপর।কুয়েট শিক্ষার্থীরা প্রথমে ৬ দফা দাবি জানিয়েছিলেন। এখন বলছেন, এক দফা; অর্থাৎ উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের সামনে গিয়ে শিক্ষকদের তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
কিন্তু শিক্ষকেরা সাড়া দেননি। এরপর তারা নিজেরাই তালা ভেঙে হলে ঢুকে পড়েন।
একটি ঘটনা কীভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই মাস অচল করে রাখে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ কুয়েট।
এখানে শিক্ষার্থীদের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকারেরও। শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে বাসে চড়ে ঢাকায় এলেন।
তারপরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলো না। আর কুয়েট কর্তৃপক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের মধ্যেই সমাধান খুঁজে পেয়েছে। ৩৭ জনকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়।
বুধবার শিক্ষার্থীরা লিখিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘যেহেতু ভিসি কুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, যেহেতু ভিসি ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন, যেহেতু ভিসি নেট, পানি অফ করে হল থেকে বের করে দিয়েছেন, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছেন, সেহেতু আমরা ছয় দফা থেকে এক দফা ঘোষণা করছি।’
আরও পড়ুন‘রাজনীতি’ নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে শুরু হোক শিক্ষার উন্নয়ন১২ আগস্ট ২০২৪আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি উপলব্ধিও করতে পারেনি। যখন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে হল খোলার দাবি জানিয়েছেন, তখন সিন্ডিকেট সিন্ডিকেট জরুরি সভা ডেকে আগামী ২ মে আবাসিক হল এবং ৪ মে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেয়।
স্বাভাবিকভাবে এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়। যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক আস্থার ওপর।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়।
সেদিন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়। তাদের দাবি, ওই মিছিলে ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করে। কথায় বলে এক হাতে তালি বাজে না। দুই পক্ষই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার নামে যা করেছেন, তাও একধরনের রাজনীতি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩৭ শিক্ষার্থীর নামে বহিষ্কারাদেশ জারি করে। তাদের এই সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক সেই প্রশ্ন উঠেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে।
একটি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের শিকার হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব।
অটোরিকশাচালকের সঙ্গে বিতণ্ডা থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ঘটনা হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক যুবককে মারধরের পর জুতার মালা গলায় পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ।
মারধরের শিকার ওই যুবক পরিসংখ্যান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রদলের দাবি, ওই যুবক ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিএফসির (চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী।
ছাত্রদলের কর্মীদের মারধরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তিনি। এই অভিযোগ সত্য হলেও মারধর ও অপমান করার এখতিয়ার কি ছাত্রদলের আছে?
তাহলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের ফারাকটি কী হলো?
আরও পড়ুনছাত্ররাজনীতি এরপরও কেন বন্ধ করা গেল না১৬ মার্চ ২০২৫রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
১৫ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা একপর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপে রূপ নেয়। এ ঘটনায় অন্তত দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এই দুই কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে কতবার শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষ লিপ্ত হয়েছেন, তার হিসাব নেই। এখানে শক্ত কোনো কারণও থাকার প্রয়োজন নেই।
কোন কলেজের শিক্ষার্থী আগে যাবেন না পরে যাবেন, এটাও সংঘাতের কারণ হতে পারে। সোমবারের ঘটনার সূত্রপাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লেখালেখি। লেখার জবাব লিখে না দিয়ে তাঁরা ইটপাটকেলে জবাব দিয়েছেন। এতে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আহত হন।
শিক্ষাঙ্গনে যে এই নৈরাজ্য চলছে, তা দূর করার দায়িত্ব কার? সরকারের। কিন্তু সরকার সেই দায়িত্ব পালন করছে না বলেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলেছে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, যা খুশি করা।
কাজী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার পংক্তি ধার করে বলতে হয়, ‘যখন চাহে এ মন যা।’ যখন চাহে এ মন যা দিয়ে আর যাই হোক কোনো দেশের শিক্ষাকে বাঁচানো যাবে না।
সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্মসম্পাদক ও কবি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল জ র শ ক ষ র থ র এক শ ক ষ র থ ম রধর র শ ক র ২৩ ফ ব র য় র ক র কর ছ ন ল প ত হয় ছ ক ন দ র কর ছ ত রদল র ত হয় ছ ন ম হ ম মদ যখন চ হ সরক র র এ মন য মন ত র র ঘটন সমস য এ ঘটন করছ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
নয় অঞ্চলের নদীবন্দরে সতর্কতা সংকেত
কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কায় বাংলাদেশের নয়টি অঞ্চলের নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানিয়েছেন, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বর্তমানে লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপামাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
ঢাকা/হাসান/রফিক