মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী বয়ে গেছে ফেনী জেলায়। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জেলাজুড়ে ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় জেলায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১২ থেকে ১৫ নটিক্যাল মাইল। ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৈশাখের লোকজ মেলার প্যান্ডেল। হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টিপাতে কিছুক্ষণের জন্য জলাবদ্ধতা দেখা দেয় শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে।

শহর ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুষলধারে বৃষ্টিতে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক, স্টেশন রোড, জেল রোড, পাঠান বাড়ি রোড, ট্রাংক রোড, ফেনী পৌরসভা চত্বরে পানি জমে যায়। পরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের তৎপরতায় এক ঘণ্টা পরে সড়ক থেকে পানি নেমে যায়। এদিকে তীব্র ঝড়বৃষ্টির কারণে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের কিছুটা দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে চলাচল করা পথচারী, যাত্রী ও ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। হঠাৎ ঝড়বৃষ্টিতে সড়কের ওপরে ঝোলানো ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের ফেস্টুন ছিঁড়ে বিভিন্ন স্থাপনার ওপর পড়েছে।

এদিকে ঝড়ের কারণে অনেক স্থানে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা দুর্ভোগের শিকার হয়। ফেনী সরকারি কলেজ কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানা জারিফ বলে, পরীক্ষার শেষ দিকে ঝড়বৃষ্টির কারণে কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো ছিল না। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

অল্প বৃষ্টিতেই শহরের সড়কে পানি জমে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। শহরের ডাক্তার পাড়া এলাকার বাসিন্দা মাইশা ফেরদৌস বলেন, একটু বৃষ্টিতে শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ডুবে যায়। বৃষ্টির পর পানি ডিঙিয়ে চলাচল করতে হয়েছে।

ঝড়ের পর বৃষ্টিতে পানি জমে যায় ফেনী শহরের বিভিন্ন সড়কে। আজ দুপুরে পৌর চত্বর প্রাঙ্গণে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র ঝড়ব ষ ট শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হত্যা, বাবার লাশ রেখে মেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে

রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার ১৬ বছরের কিশোরী রাকিয়া আলফি। নগরীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থী সে। এলাকার কিছু বখাটে মাঝেমধ্যেই তাকে বিরক্ত করছিল। গত বুধবার উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেরা তার বাবা আকরাম আলীকে (৫২) পিটিয়ে হত্যা করে। আজ বৃহস্পতিবার ছিল আলফির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। বাবার নিথর দেহ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষায় বসেছে আলফি। 

হত্যার ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী আলফির বড় ভাই ইমাম হাসান অনন্ত বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় আসামিরা হলেন– তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে নান্টু, বিশাল, খোকন মিয়া, তাসিন হোসেন, অমি, নাহিদ ও শিশির। প্রধান অভিযুক্ত নান্টু আকরামের স্ত্রীর মামাতো ভাই।

প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, আলফিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল নান্টু ও তার সহযোগীরা। গত বুধবার বিকেলে আলফি কোচিং করে বাসায় ফেরার পথে নান্টু আবার তাকে উত্ত্যক্ত করে। এ ব্যাপারে বাসায় এসে ঘটনা বাবাকে জানায় আলফি। পরে আকরাম নান্টুর বাসায় বিচার দেয়। এতে ক্ষুব্ধ নান্টু ও তার সহযোগীরা রাতেই লোহার রড, লাঠি, ইট নিয়ে আলফির বড় ভাই ইমাম হাসানের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে আকরাম এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে ইট দিয়ে আকরামের মাথার পেছনে আঘাত করা হয়। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টিকাপাড়া গোরস্তানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। 

আলফি বলে, ‘বখাটেরা অনেকদিন ধরেই আমাকে উত্ত্যক্ত করছিল। নান্টুর বাসায় আমার পরিবারের পক্ষ থেকে বিচার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের পরিবার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যারা আমার বাবাকে হত্যা করেছে, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

বাসচালক আকরামের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, ‘মেয়ের এসএসসি পরীক্ষা চলছে। সারারাত বাবার জন্য কান্না করেছে। বাবার লাশ রেখে মেয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে চায়নি। স্বজনরা অনেক বুঝিয়ে তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠায়। আমরা স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।’ 

অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আলফি ভালো ছাত্রী। তাদের পরীক্ষা শিরোইল উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুনেছি উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তার বাবাকে মারধর করে মেরে ফেলা হয়েছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক হোসেন বলেন, হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

এদিকে আকরাম আলীর খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তাঁর লাশ সামনে রেখে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। মানববন্ধন থেকে এলাকাবাসী জানান, দোষীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুন: প্রধান আসামি ও এক সহযোগী গ্রেপ্তার
  • বিভিন্ন স্থানে কারিগরি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে
  • এসএসসি পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা 
  • এসএসসি পরীক্ষা খারাপ হওয়ায়..
  • উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হত্যা, বাবার লাশ রেখে মেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে
  • রাজশাহীতে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হত্যা, বাবার লাশ রেখে মেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে
  • দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে দৃষ্টিহীন মহির
  • উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে মেয়ে
  • এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী কম, অনুপস্থিতিও বেশি, কারণ কী