নির্বাচনী সংস্কারের পর ইসিকে দল নিবন্ধনের দাবি জানাল এনসিপি
Published: 17th, April 2025 GMT
নির্বাচনী সংস্কারের আলোকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাবি জানিয়েছে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বে ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দলটির একটি প্রতিনিধিদল ইসি সচিবের দপ্তরের এ সংক্রান্ত চিঠি জমা দিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের একান্ত সচিব আশ্রাফুল আলম। তিনি বলেন, তারা নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য ৯০ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।
ইসি সচিবকে ‘নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন’ শীর্ষক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন সংক্রান্ত বর্তমান প্রচলিত আইনের মধ্যে থেকেই বিগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ভোট বিহীন সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা, জাল ভোট, রাতের ভোটসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছে। একইভাবে শেখ হাসিনা ও তার দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক ওই কমিশন সারা দেশে দলীয় প্রতীকে বিতর্কিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেরও আয়োজন করেছিল।
বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস এবং ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। এহেন পরিস্থিতিতে, দেশের ছাত্র-জনতা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় গণমানুষের প্রত্যাশার আলোকে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থানের পর ড.
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তাবলি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। আগের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এ বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নিজেই জেলা পর্যায় ১০ শতাংশ এবং উপজেলা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের বর্তমান কাঠামো এবং ব্যক্তিবর্গের নিয়োগ বিতর্কিত ২০২২ সালের আইন অনুসারে গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব ও নিরপেক্ষতা রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে, যা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করছে। সুতরাং বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধন পূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার। তাই মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক।
এ অবস্থায়, অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার সাধন এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অন্যূন ৯০ দিন বর্ধিত করণের জন্য অনুরোধও করা হয়েছে চিঠিতে।
ইসির গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী রবিবার (২০ এপ্রিল) নতুন দলগুলোর নিবন্ধন আবেদন করার শেষ সময়। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, এখন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র র জন র জন য র আল ক ন র জন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ২১জন শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান
জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জ জেলার শহীদ ২১ জনের পরিবারকে আর্থিক অনুদান হিসেবে দুই লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ অনুদান প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হোসনে আরা বেগম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমাদের বীর সন্তানেরা নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। যারা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন তাদেরকে ও তাদের পরিবার প্রতি জানাচ্ছি সহমর্মিতা ও কৃতজ্ঞতা।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি আমাদের বীর সন্তানেরা নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে যে ভূমিকা রেখেছে আজকে আমাদের এই যে আয়োজন আর আমরা যত আয়োজন করি সেটি খুবই নগণ্য। যে মা তার সন্তানকে হারিয়েছেন, যে ভাই তার বোনকে হারিয়েছেন আর যে বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন তার কাছে আমাদের কোন আয়োজনই তাদের মন জয় করতে পারবো না।
আমরা প্রত্যাশা করছি তারা যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ গড়ার জন্য বুকে সাহস নিয়ে আন্দোলন করেছিল সেই দেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তাদের ত্যাগ স্বার্থক হবে। আমরা আপনাদের সবাইকে নিয়ে একটি বৈষম্যহীন দিন বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা করছি।
এসময় শহীদের ছবি সম্বলিত নামফলকের স্মৃতিস্তম্ভ, মামলা পরিচালনা সহযোগিতা ও শহীদদের কবর চিহৃকরন দাবি করেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ-পরিচালক ( উপ- সচিব) ড. মো: মনিরুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইব্রাহিম হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি তরিকুল সুজন।