প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বা ৬৬০ কোটি ডলারের মামলা করেছে যুক্তরাজ্য। অনলাইন সার্চ বাজারে নিজেদের আধিপত্যের অপব্যবহার করে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে এই মামলা করা হয়। খবর রয়টার্সের।

গত মঙ্গলবার ব্রিটেনের কমপিটিশন অ্যাপিল ট্রাইব্যুনালে এই ক্লাশ অ্যাকশন মামলা করা হয়। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতাহীন পরিবেশ তৈরি করে গুগল তাদের বিজ্ঞাপনমূল্য ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে গুগল সার্চ ও ক্রোম ব্রাউজার আগেই ইনস্টল করে রাখার জন্য মোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে গুগল। সেই সঙ্গে নিজেদের সার্চ ইঞ্জিনকে আইফোনের ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে রাখতেও অ্যাপলকে অর্থ দিয়েছে কোম্পানিটি।

হাজার হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই মামলা করেন প্রতিযোগিতাবিষয়ক আইন বিশেষজ্ঞ অর ব্রুক। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, গুগল ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সার্চ ইঞ্জিনে এমন ফিচার ও কার্যকারিতা যুক্ত করেছে, যা তাদের নিজস্ব বিজ্ঞাপনসেবাকে প্রতিযোগীদের তুলনায় বেশি সুবিধা দিয়েছে।

গুগল অবশ্য এই মামলাকে ‘অনুমানমূলক ও সুযোগসন্ধানী’ বলে দাবি করেছে। কোম্পানিটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘ব্যবহারকারীরা গুগল ব্যবহার করে কারণ এটি উপকারী, বিকল্প নেই বলে নয়। আমরা এই মামলার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেব।’

অর ব্রুক বলেন, ‘ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গুগল ছাড়া কার্যত বিকল্প নেই। গুগলের শীর্ষ ফলাফলে এখন দৃশ্যমান থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গুগল বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্রিটেনের প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গুগলের সার্চ সেবাগুলোর ওপর একটি তদন্ত শুরু করে, যার মধ্যে বিজ্ঞাপন বাজারে এসব সেবার প্রভাবও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্রিটেনের কমপিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি (সিএমএ) গুগলের সার্চ সেবার ওপর তদন্ত করে। তারা জানায়, যুক্তরাজ্যের ৯০ শতাংশ অনলাইন অনুসন্ধান গুগলের মাধ্যমে হয় এবং প্রায় ২ লাখ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে।

বর্তমানে গুগলের বিরুদ্ধে শুধু যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে একাধিক অ্যান্টিট্রাস্ট তদন্ত চলছে।

ইউরোপে গুগলের একাধিকবার বড় অঙ্কের জরিমানা হয়েছে। ২০১৮ সালে ইউরোপে গুগলের ৪ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ইউরো জরিমানা হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে গুগল দ্বিতীয় একটি অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বেআইনিভাবে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাজারে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগে এই মামলা করা হয়।

গত বছরের আগস্টে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় গুগল পরাজিত হয়। তবে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে গুগল।

মামলার একপর্যায়ে গুগলের এক বিজ্ঞাপন নির্বাহী স্বীকার করেন, গুগলের ব্যবসার ধরন এমন, যেন গোল্ডম্যান স্যাক্স বা সিটিব্যাংক নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের মালিক। অর্থাৎ যারা বিজ্ঞাপন বিক্রি করছে, তারাই বাজারও নিয়ন্ত্রণ করছে।

এই মামলায় হারলে গুগলকে তাদের বিজ্ঞাপন প্রযুক্তির কিছু অংশ বিক্রি করতে বাধ্য করা হতে পারে। এতে গুগলের মূল আয়ের উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং প্রযুক্তি খাত ও অনলাইন প্রকাশকদের ওপরও ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

চলতি বছরের মার্চে ইউরোপীয় কমিশন গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে, তারা সার্চ রেজাল্টে নিজস্ব (অ্যাফাবেটের) সেবাগুলোকে অন্যদের তুলনায় বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট লঙ্ঘনের শামিল। এই আইন অনুযায়ী, তৃতীয় পক্ষের সেবাগুলোর সঙ্গে স্বচ্ছ, ন্যায্য ও বৈষম্যহীন আচরণ করতে হবে।

এই আইন ভাঙলে গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশ্বব্যাপী আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। একই অপরাধ পুনরায় ঘটলে জরিমানা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর জ য বছর র ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

ছবিতে টাইগারদের জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রস্তুতি

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল এখন সিলেটে। এই সিরিজ সামনে রেখে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন টাইগাররা। এই দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে জিম্বাবুয়ে। গেল ১৫ এপ্রিল ঢাকায় পা রাখার পরে দলটি সিলেট পৌঁছায় পরদিন। সেদিন বিশ্রাম নিয়ে বৃহস্পতিবার অনুশীলনে নেমেছিলেন ক্রেইগ আরভিনরা। কিন্তু বৃষ্টিতে সেই অনুশীলন পণ্ড হয়েছে। ভেসেছে বাংলাদেশের অনুশীলনও। গতকাল দুই দল নির্বিঘ্নে প্রস্তুতি নিতে পেরেছে। ছবিতে দেখুন বাংলাদেশের অনুশীলনের নানা মুহূর্ত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ