দীর্ঘ ৪৬ বছরের ঐতিহ্যে ছেদ পড়ল এবার। বাংলা নববর্ষের শুরুর দিনটিতে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীদের নৃত্য-গীত-আবৃত্তি ও যন্ত্রসংগীতের মূর্ছনায় উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠার কথা ছিল ডিসি হিল প্রাঙ্গণ। কিন্তু এবার বাঁশি বাজেনি, থেমে গেছে সুর ও ছন্দ। ডিসি হিল প্রাঙ্গণে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ১৯৭৮ সাল থেকে।

করোনা মহামারির দুটি বছর বাদ দিলে এই ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হয়নি। এরশাদ আমলে একবার অনুষ্ঠান বন্ধ করার চেষ্টা হলেও সেই অপপ্রয়াস রুখে দিয়েছিলেন সংস্কৃতিকর্মীরা। কিন্তু এ বছর গুটিকয় উচ্ছৃঙ্খল যুবকের অবিমৃশ্যকারিতা ও প্রশাসনের ব্যর্থতায় পণ্ড হয়ে গেল সব আয়োজন, উৎসবের দীর্ঘ পরম্পরা। 

আসলে ডিসি হিলে বর্ষবরণের ব্যাপারে এবার শুরু থেকেই একধরনের গড়িমসি করছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গোয়েন্দা রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ নয়, এ কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে সময়ক্ষেপণ করছিল তারা। অতঃপর মাত্র দিন-তিনেক আগে নানা রকম শর্ত জুড়ে দিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়। সেসব শর্ত মেনে নিয়েই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছিল ‘সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদ’।

এত দিন মাত্র তিনটি অনুষ্ঠানের জন্য ডিসি হিলের উন্মুক্ত মঞ্চ ব্যবহারের অনুমতি মিলত। এবার পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানটি ভন্ডুল হয়ে যাওয়া আসলে ভবিষ্যতে সেই তিনটি অনুষ্ঠানও বন্ধ হওয়ার ইঙ্গিত কি না, জানি না। তখন হয়তো নগরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রকৃতিশোভিত পাহাড়টি সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে কেবল জেলা প্রশাসকের ‘নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে’ আবাসস্থল হিসেবেই ব্যবহৃত হবে। 

অন্যদিকে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ‘সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে নানা রকম দাবি তুলে অনুষ্ঠানটি পণ্ড করার চেষ্টা শুরু করে। তারা নিজেরা এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার দাবি জানালে সেটি ছিল যৌক্তিক, কিন্তু তার পরিবর্তে তারা প্রায় বিশটি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নববর্ষের অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানায়। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় এই গোষ্ঠ জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) একটি অংশ। তাদের দাবি, যে সংগঠনগুলোর তালিকা তারা দিয়েছে, তারা ‘স্বৈরাচারের দোসর।’ 

জেলা প্রশাসন এই গুটিকয় ব্যক্তির সঙ্গে কোনোরকম বোঝাপড়া করতে ব্যর্থ হয়ে তাদেরই পরামর্শ অনুযায়ী অনুষ্ঠানের ঠিক আগের দিন বিকেলে বিশটি সংগঠনের তালিকা তুলে দেয় ‘সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের’ হাতে।

চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের জন্য নির্মিত মঞ্চ ভাঙচুর। ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায়।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র র অন ষ ঠ ন নববর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ইউসিবি বৈশাখী ফেস্টিভ্যালের বর্ণিল উদ্বোধন

গুলশানের বে-এজওয়াটার গ্যালারিতে শুরু হয়েছে ইউসিবি বৈশাখী ফেস্টিভ্যাল। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত তিন দিনের এই উৎসব চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। আয়োজনটিতে থাকছে প্রদর্শনী, ফ্যাশন শো এবং লোকসংগীতের ফিউশন পরিবেশনা ।

আজ ১৮ এপ্রিল বেলা ১১টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ’আমাদের গ্রামগঞ্জে যাঁরা হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা প্রকৃতি থেকেই নকশাগুলো নেন। শিল্প জীবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। আগে যেমন টাঙ্গাইল শাড়ির নকশায় দেখা যেতো ফুল, পাখি, লতাপাতা; এখন সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সেই শাড়িতেই আজকাল ফুটে উঠছে মোবাইল ফোন, ক্রিকেট ব্যাট কিংবা হকি স্টিক।'

ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: নিরাপত্তা উপদেষ্টা
  • কুয়াকাটায় জলকেলিতে মাতলেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা
  • ইউসিবি বৈশাখী ফেস্টিভ্যালের বর্ণিল উদ্বোধন
  • বর্ষবরণ শোভাযাত্রা নতুন নামে স্বীকৃতি পেতে অনুমোদন লাগবে: ইউনেস্কো
  • ভাস্কর্য শিল্পীর বাড়িতে আগুন: ৮ জন গ্রেপ্তার
  • যশোরে রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে মাছ–সবজিবাজার
  • চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
  • শোভাযাত্রার কাজে যুক্ত কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয় দেখানো হচ্ছে: চারুকলা অনুষদ
  • আওয়ামী লীগ মানবেন্দ্র ঘোষকে আক্রমণের উস্কানি দিচ্ছিল: ফারুকী