ত্বকী হত্যা মামলা: আজমেরী ওসমানের গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর
Published: 17th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাসুম শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন। এ ছাড়া আজ মামলার অন্য আসামিরাও আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।
মামলায় হাজিরা দেওয়া আসামিরা হলেন আজমেরী ওসমানের খালাতো বোনের স্বামী আবদুল্লাহ আল মামুন, গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরী, সহযোগী মামুন মিয়া, কাজল হাওলাদার, পারভেজ, শিপন মিয়া, ইউসুফ হোসেন লিটন, রিফাত বিন ওসমান ও তায়েব উদ্দিন (জ্যাকি)। কারাবন্দী আসামি কাজল হাওলাদার ছাড়া অন্য আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম প্রথম আলোকে বলেন, জামশেদ চৌধুরী গাড়িতে করে নিয়ে ত্বকীর লাশ ফেলে দিয়েছিলেন বলে জবানবন্দিতে উঠে এসেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আইনজীবীর উপস্থিতিতে আসামিকে ধার্য তারিখের আগে যেকোনো দিন র্যাব কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরীকে এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁর গাড়িতে লাশ নিয়ে ফেলা হয়েছে। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। জামশেদ চৌধুরী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। আদালত আগামী ২৬ মে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত (ভ্রমর) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিল, ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদের টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছেন। তবে গত ১২ বছরেও অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মামলায় তদন্তকারী সংস্থা র্যাব ত্বকী হত্যা মামলায় নতুন করে আরও ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন আজমেরী ওসমানের খালাতো বোনের স্বামী আবদুল্লাহ আল মামুন, গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরী, সহযোগী মামুন মিয়া, কাজল হালদার, পারভেজ ও শিপন মিয়া।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওসম ন র কর ছ ন আজম র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী পুত্রের পিএস ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি হিরা গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি গোলাম মতুর্জা পাপ্পার একান্ত সহকারী (পিএস) কামরুজ্জামান হিরাকে (৪৬) গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার রমনা এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করে রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ সুপার ( গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জে কামরুজ্জামান হিরা ছিল সাধারণ মানুষের জন্য মুর্তিমান আতঙ্কের নাম। গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পার ছত্রছায়ায় কামরুজ্জামান হিরা রূপগঞ্জে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়, জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড চালাতো।
রূপগঞ্জের কিশোরগ্যাং চলতো তার নিয়ন্ত্রণে। হিরা কিশোর ও যুবক বয়সী ছেলেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়াতে তাদের হাতে অস্ত্র ও মাদক তুলে দিতো। ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পল্টনে সাবেক মন্ত্রী গাজীর ব্যাবসায়িক কার্যালয়ে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেনের পেটে গুলি করে হিরা।
এ ঘটনায় পল্টনের তৎকালীন ওসি রফিকুল ইসলাম হিরাসহ চারজনকে গ্রেফতার করে। ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি ভুলতা এলাকার ডায়মন্ড ব্রিকস টাইলস প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির সময় হিরাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই সময় মন্ত্রী গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে হিরার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন। তবে কয়েকদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হয়ে আবারো হিরা তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে থাকে।
নিরীহদের জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাট, আবাসন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, পরিবহণ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে রূপগঞ্জে সকল সেক্টরের ছিল তার অবাধ বিচরণ। সাধারণ মানুষের কাছে হীরা কাচঁকাটা হিরা ও ডন হিরা নামেও পরিচিত। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে হিরা পলাতক ছিল।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, গোয়েন্দা পুলিশ হিরাকে গ্রেফতারের পর রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনসহ বেশকয়েকটি মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল।