Samakal:
2025-04-19@04:54:11 GMT

এক বিস্ময়কর অধ্যায়

Published: 17th, April 2025 GMT

এক বিস্ময়কর অধ্যায়

১৯৬৪ সালে ‘সুতরাং’ সিনেমার মধ্য দিয়ে যে কিশোরীটি রূপালি পর্দায় পা রাখলেন, সময়ের আবর্তনে তিনি হয়ে উঠলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। একজন সময়ের সাক্ষী, সংগ্রামী শিল্পী তিনি কবরী। যাঁর আসল নাম মিনা পাল। কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করলে কবরীকে আপন মহিমা, আভিজাত্য ও গৌরবে উপস্থাপন করা যায়? মিষ্টি মেয়ে, স্বপ্ননায়িকা, কিংবদন্তি যেভাবেই ডাকা হোক না কেন, একজন পরিপূর্ণ কবরী অনিঃশেষ অখণ্ডতায় আবিষ্কার করা সহজ নয়। বাংলা চলচ্চিত্রের গৌরবময় ইতিহাসের স্বর্ণালি অধ্যায় অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীর আগমনে উজ্জ্বল হয়েছে। অনেকের ভিড়ের মধ্যে কবরী ছিলেন একেবারেই স্বতন্ত্র। 

কিশোরী বয়সেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন হাজারো দর্শকের ভালোবাসার পাতায় পাতায় এক প্রিয় নাম– ‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরী। অভিনয়, সৌন্দর্য, সততা, নিষ্ঠা আর একাগ্রতার পরিপূর্ণ প্যাকেজ ছিলেন কবরী। তাঁর চাহনি, কটাক্ষ, হাসি, অভিনয় প্রতিভায় মগ্ন হয়েছিলেন আবালবৃদ্ধবনিতা। তাঁর ভুবন ভোলানো হাসি আর হৃদয়ছোঁয়া অভিনয়ে মুগ্ধ সব বয়সী দর্শক। তাইতো তিনি ছিলেন তাঁর সময়ে রূপালি পর্দায় অপরিহার্য একজন। সে সময়ে একটি কথা প্রচলিত ছিল– ‘কবরী হাসলেও লাখ টাকা, কাঁদলেও লাখ টাকা। অর্থাৎ তাঁর অভিনয় এতটাই নিখুঁত যে, তিনি বাংলার সব শ্রেণির দর্শকের কাছে পাশের বাড়ির সেই মেয়েটি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন।

পাশের বাড়ির মেয়েটির সুখ-দুঃখ যে কারও মনে রেখাপাত করতে পারে, যে কারণে তাঁর হাসি বা কান্না দুয়েরই অর্থমূল্য ছিল। নির্মাতারা ছবিতে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করে নিশ্চিত থাকতে পারতেন। তাইতো বলা যায় কবরী হয়ে উঠেছিলেন শাশ্বত বাঙালি নারীর এক মূর্ত প্রতীক, যাঁর চোখ, মুখ, চুলের ছাঁট ছিল আবহমান নারী সৌন্দর্যের প্রতীক। 

বাংলা সিনেমার ইতিহাসে কবরীর আবির্ভাব যেন নতুন একটি যুগের শুরু। ষাটের দশকের মাঝামাঝি যখন বাংলা সিনেমা আস্তে আস্তে শিল্পমানে উন্নত হতে শুরু করেছে, কবরী এসেই যেন সেই গতি বাড়িয়ে দিলেন। তাঁর নিষ্পাপ হাসি, সহজ অভিনয় আর আত্মিক সংলাপ প্রতিভা দর্শকের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

তিনি যে কেবল সৌন্দর্য দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করতেন তা নয়; বরং তাঁর অভিনয়ের গভীরতা, চরিত্রের সঙ্গে একাত্মতা এবং নিপুণ সংবেদনশীলতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।

তাঁর অভিনীত ‘সুতরাং’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘বাহানা’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, কিংবা ‘সারেং বউ’ প্রতিটিই যেন একেকটি কালজয়ী চিত্ররূপ। একজন কবরীকে বুঝতে গেলে শুধু চলচ্চিত্র দিয়ে বিচার করা যায় না। তাঁকে বুঝতে হয় তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা, সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা দিয়ে। কবরী ছিলেন সেই বিরল শিল্পীদের একজন, যিনি নিজেকে শুধু নায়িকা হিসেবে ভাবেননি; বরং দেশের জন্য, সমাজ ও মানুষের জন্য কাজ করেছেন সবসময়। 

কবরী পর্দায় যেমন ছিলেন শক্তিশালী নারী চরিত্রের প্রতিভূ, তেমনি বাস্তব জীবনেও ছিলেন স্পষ্টবাদী, প্রতিবাদী এবং নিজের চিন্তায় অটুট।

যাঁর হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নারীর আত্মমর্যাদা গড়ে উঠেছিল, যিনি সহজ অথচ অনবদ্য অভিনয়ে জীবন্ত করে তুলতেন প্রতিটি চরিত্র, যিনি পর্দায় ছিলেন প্রেয়সী, মা, সংগ্রামী, বোন কিংবা প্রতিবাদী নারী– তাঁর অনুপস্থিতি অনুভব করি প্রতিনিয়ত। আজ এ বরেণ্য অভিনেত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী। নন্দনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কবর চলচ চ ত র চলচ চ ত র পর দ য়

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করবেন জোনাথন কার্ল

জোনাথন কার্লের পরবর্তী বইটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানা গেছে। 
এবিসি সাংবাদিকের ‘রিট্রিবিউশন: ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যান্ড দ্য ক্যাম্পেইন দ্যাট চেইঞ্জড অ্যামেরিকে ইন দ্য ফল’ বইটি প্রকাশ করবেন। বইটি হোয়াইট হাউস এবং প্রেসিডেন্ট প্রচারণার গভীরে আমাদের পর্দার আড়ালে আসা অসাধারণ মুহূর্তগুলি প্রকাশ করে, যা একজন ব্যক্তির প্রেসিডেন্টশিপের অবসান ঘটিয়ে অন্য একজনকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনে।
এবিসি নিউজের প্রধান ওয়াশিংটন সংবাদদাতা জোনাথন কার্ল বইটির জন্য গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণা জুড়ে ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেননি যে ট্রাম্প নির্বাচনে জিতবেন এবং বইটি কেন ভুল ছিল তা অনুসন্ধান করবেন।
কার্লের প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে পূর্ববর্তী তিনটি বই হলো– ফ্রন্ট রো অ্যাট দ্য ট্রাম্প শো (২০২০); বিট্রেয়াল: দ্য ফাইনাল অ্যাক্ট অফ দ্য ট্রাম্প শো (২০২১); এবং টায়ারড অফ উইনিং: ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যান্ড দ্য এন্ড অফ দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি (২০২৩)। একটি তারকাচিহ্নিত পর্যালোচনায়, কিরকাসের একজন সমালোচক লিখেছেন যে ‘টায়ারড অফ উইনিং’ বইটিতে ‘চমৎকার প্রতিবেদন এবং নিশ্চিত লেখা রয়েছে– একটি অশুভ সতর্কবাণী।’
নতুন এই বইয়ের প্রচ্ছদে ইভান ভুচির বিখ্যাত ছবি রয়েছে, যেখানে ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ার বাটলারের কাছে একটি সমাবেশে হত্যার চেষ্টার পর তার মুষ্টি উঁচিয়েছিলেন। ডাটন বলেছেন যে, বইটি ‌‌‌‌‌‌‌অভূতপূর্ব রাজনৈতিক চক্রান্তের মোড়ের একটি গল্প, যেখানে দেখানো হয়েছে যে রাজনৈতিক ভাগ্যের পতন এবং পুনরায় উত্থানের সময় পর্দার আড়ালে কী ঘটেছিল এবং একটি নতুন দল যখন সম্পূর্ণ নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ঘিরে একত্র হয়েছিল।
চলতি বছর ২৮ অক্টোবর ‘রিট্রিবিউশন: ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যান্ড দ্য ক্যাম্পেইন দ্যাট চেইঞ্জড অ্যামেরিকে ইন দ্য ফল’ প্রকাশের তারিখ নির্ধারিত আছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও কারকাস রিভিউস 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় নৌকায় আগুন, ১৪৩ মরদেহ উদ্ধার
  • ফুটবলে তিন ছেলের কে কেমন, জানালেন মেসি
  • ‘কী সুন্দর তাই না, একজন শিক্ষকের এই পরিণতি’
  • ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০
  • ধর্ষণের শিকার দাবি করা নারীর বক্তব্য ওসির মুঠোফোনে ধারণের পর ফেসবুকে, সমালোচনা
  • তিন ছেলের মধ্যে ফুটবলে কে সেরা, মেসি যা বললেন
  • সিরাজগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ 
  • ঢাকার শেওড়াপাড়ায় চাপাতি ঠেকিয়ে তরুণীর চেইন ও ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১, দুজনকে খুঁজছে পুলিশ
  • ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করবেন জোনাথন কার্ল