যশোরে রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে মাছ–সবজিবাজার
Published: 17th, April 2025 GMT
যশোরের কেশবপুরের একমাত্র সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চ। এই মঞ্চের সামনে বসানো হয়েছে সবজি, মাছ ও মাংসের বাজার। এই বাজারের নির্দিষ্ট স্থান পুরাতন গরুহাটায় পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় বাজারটি ওই মঞ্চে স্থানান্তরিত করেছে পৌরসভা ও প্রশাসন। এ নিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মীরা ক্ষুব্ধ।
কেশবপুর শহরের পুরাতন গরুহাটায় মাছ-মাংস ও সবজির বাজার বসে। সেখানে পৌরসভা পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। সে কারণে বাজারটি স্থানান্তর করে সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবি, গত রোববার এই মঞ্চের সামনে বাজার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সাংস্কৃতিক কর্মীরা ওই মঞ্চে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান থাকার কথা জানালে এক দিন পর মঙ্গলবার থেকে সেখানে বাজার বসছে।
সরেজমিনে বুধবার বিকেলে দেখা যায়, রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চের পুরো এলাকায় বাজার বসেছে। মঞ্চে ঢোকার স্থানে বসেছে গরুর মাংসের দোকান, পাশেই একটি চায়ের দোকান। মঞ্চের অপর প্রান্তে উত্তর পাশে বসেছে মুরগির দোকান। মঞ্চের ওপরে বাজারের মালামাল রাখা হয়েছে। পুরো চত্বরে বসেছে মাছ ও সবজি বাজার। এখন মঞ্চে ঢোকার কোনো পথ নেই। কোনোভাবে বোঝার উপায় নেই এটি রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চ।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০১০ সালে শহরের হরিহর নদ ও খোঁচা খালের পাড়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য রক্তকরবী মঞ্চ তৈরি করা হয়। এর পর থেকে এই মঞ্চে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান, পিঠা উৎসব, লোকসংস্কৃতি উৎসব, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হয়ে আসছিল। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে এখানে একটি পৌর পার্ক নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চটি ওই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
মঞ্চ কমিটির সদস্য আজিজুর রহমান বলেন, মঞ্চটি কেশবপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষের বহু বছরের আন্দোলনের ফসল। মঞ্চটি নির্মাণের পর থেকে এ অঞ্চলে একটি নান্দনিক পরিবেশ তৈরি হয়। মাছ, মাংস ও সবজির বাজার বসানোর ফলে সেই নান্দনিকতা নষ্ট হচ্ছে। বাজার বসলে সেখানে মাছের পানি, মুরগির অবশিষ্ট অংশসহ নানা ময়লা–আবর্জনার কারণে পরিবেশ বদলে যাবে। জায়গাটির নান্দনিক পরিবেশ আর থাকবে না। এটি বড়ই কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেশবপুর নাগরিক সমাজের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, মঞ্চ ঘিরেই কেশবপুরের সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আবর্তিত। এখানে সকালে ও বিকেলে মানুষ হাঁটাচলা করতেন। বাজার বসানোয় সেটি ব্যাহত হচ্ছে।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্থানটিতে বাজার বসানোয় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষের মনে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন খেলাঘর আসরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘বিকল্প জায়গা থাকা সত্ত্বেও এখানে বাজার বসানোয় আমরা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা ব্যথিত।’
এ ব্যাপারে কেশবপুরের ইউএনও ও পৌর প্রশাসক রেকসোনা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, পৌর পার্ক নির্মাণের সময়টুকুতেই ওখানে বাজার বসানো হয়েছে। পৌর মার্কেট নির্মাণ হলেই বাজারটি সরিয়ে আবার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হবে। এটা সাময়িক অসুবিধা। এর মধ্যে যদি কোনো অনুষ্ঠান হয়, তাহলে সেদিন বাজার বন্ধ থাকবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ত ক কর ম ক শবপ র র
এছাড়াও পড়ুন:
পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, দুই লাখ টাকা জরিমানা
মাটি বিক্রির জন্য রাতের অন্ধকারে কাটা হচ্ছিল পাহাড়। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে হাতেনাতে একজনকে আটকের পর দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের ছোট মেরুং এলাকায় পরিচালনা করা হয় এ অভিযান।
যে ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে, তাঁর নাম মো. নুরুল হক। তিনি ছোট মেরুং এলাকার বাসিন্দা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশীদ।
ইউএনও মো. মামুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, বেশ উঁচু পাহাড়টি অনুমোদনহীনভাবে কেটে প্রায় সমান করে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনকে ফাঁকি দিতে রাতের বেলায় পাহাড় কাটা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে মো. নুরুল হককে আটক করা হয়। তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানা পরিশোধ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করে আসছে একটি চক্র। মেরুং এলাকার বাসিন্দা মো. সোলাইমান বলেন, এলাকায় গত পাঁচ বছরে ছোট-বড় কমপক্ষে ১০০ টিলা-পাহাড় কেটে সমান করা হয়েছে। কেউ মাটি বিক্রি করার জন্য পাহাড় কাটেন, কেউবা ঘর করার জন্য। প্রশাসন জেল-জরিমানা করলে কিছুদিন বন্ধ রেখে পুনরায় মাটি কাটা শুরু হয়।