স্ত্রীর শিলপাটার আঘাতে ওবায়দুর রহমান মুন্সী (৫০) নামে এক কৃষক দল নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ইছাপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত ওবায়দুর সদর ইউনিয়নের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মৃত খালেক মুন্সীর ছেলে। তিনি ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, সাবিনা ইয়াসমিন পুলিশের কাছে স্বামীর মাথায় শিলপাটা দিয়ে আঘাত করার কথা স্বীকার করেছেন।  

জানা গেছে, প্রায় এক যুগ ধরে স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ওবায়দুরের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে প্রায়ই ওবায়দুরের ঝগড়া হতো। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মারামারির ঘটনায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। এসব ঘটনায় আদালতেও মামলা হয়েছে। গ্রামে এ নিয়ে একাধিকবার সালিশও হয়েছে। 

প্রতিবেশীরা জানান, বুধবার রাতে ওবায়দুরের স্ত্রী চিৎকার করে বলছিলেন, তার স্বামীকে কারা যেন হত্যা করে ফেলে গেছে। প্রতিবেশীরা এসে ওবায়দুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় নিহতরে ছোট ভাই সিরাজ জরুরি সেবা- ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে ওবায়দুরকে উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

সিরাজ মুন্সী বলেন, ‘আমার ভাবী ও ছেলেরা বড় ভাইকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে পাগল করে ফেলেছে। তারা প্রায়ই ভাইয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো, গায়ে হাত দিতো। বুধবার রাতের শেষ দিকে ভাবি আমাকে গিয়ে বলে, তোমার ভাইকে কারা যেন মেরে ফেলে রেখে গেছে। আমি তাদের বাড়িতে ভয়ে যাইনি। পরে ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি পুলিশ জানাই। আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’  

ওসি হারুন অর রশিদ সমকালকে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিনের কোন্দল ছিল। এ জেরে এ হত্যাকাণ্ড। নিহতের স্ত্রী স্বীকার করেছেন, শিলপাটা দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্ববাজারে সোনার দাম ৩,৭০০ ডলারে উঠতে পারে: গোল্ডম্যান স্যাক্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জেরে বিশ্ববাজারে যেভাবে সোনার দাম বাড়ছে, তাতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৭০০ ডলারে উঠতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান মার্কস।

এর আগের তাদের পূর্বাভাস ছিল আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার। শুধু তা–ই নয়, তারা বলছে, সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৬৫০ ডলার থেকে ৩ হাজার ৯৫০ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে পারে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদা ও সোনাভিত্তিক ইটিএফ তহবিলে বিনিয়োগ বাড়বে—এই অনুমানের ভিত্তিতে এই পূর্বাভাস দিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাক্স।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এর মধ্যে মন্দা হলে বছরের শেষ নাগাদ সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৮৮০ ডলারে উঠতে পারে। গত শুক্রবার এই নোটে এই পূর্বাভাস দিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাক্স।

গোল্ডম্যান স্যাক্স আরও বলেছে, এ পরিস্থিতিতে নীতিগত অনিশ্চয়তা দূর হলে সোনার ইটিএফে বিনিয়োগ পূর্বাভাস অনুযায়ী হবে। অর্থাৎ নির্ধারিত সুদভিত্তিক ইটিএফেও বিনিয়োগ হবে। সেই বাস্তবতায় সোনার দাম অতটা বাড়বে না বলেই মনে করছে গোল্ডম্যান স্যাক্স। তখন সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৫৫০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে গোল্ডম্যানের পূর্বাভাস।

এ ছাড়া চলতি বছর বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনার চাহিদা প্রতি মাসে ৮০ মেট্রিক টনে উঠবে বরেও পূর্বাভাস। আগের বছর যা ছিল ৭০ মেট্রিক টন।

গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, বিশ্ববাজারে আজ সোনার দাম সামান্য কমেছে। সেই পরিমাণ এক ডলারের কম। তাতে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩১৫ ডলারে নেমে এসেছে। গত এক মাসে সোনার দাম বেড়েছে আউন্সপ্রতি ২৭৯ ডলার। গত এক বছরে বেড়েছে ৯২৬ ডলার।

সোনার ব্যবহার কেবল গয়নার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনার রিজার্ভ আবার বাড়ছে। মানুষও সোনার বার ও সোনাভিত্তিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ বাড়ছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, গত বছর সারা বিশ্বে সোনা বেচাকেনা হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৪ টন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বাড়ছে। ২০২৪ সালে এ নিয়ে টানা তিন বছর বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সম্মিলিতভাবে এক হাজার টনের বেশি সোনা কিনেছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি সোনা কিনেছে পোল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা কিনেছে ৯০ টন সোনা।

বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ