বিভিন্ন কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।
বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জামির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে গতকাল বুধবার নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড.
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংস্কারের জন্য গঠিত বিভিন্ন কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এই ছয় কমিশনের প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে কমিশন। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলে একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা, যার ভিত্তিতে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
২৩ মার্চ বিএনপি তাদের সংস্কার বিষয়ক মতামত জমা দেয়। তারই পরবর্তী ধাপ হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ঐকমত্য কমিশন ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ সংবলিত ছক আকারে ‘স্প্রেড শিট’ পাঠিয়ে মতামত চেয়েছিল।
ঢাকা/হাসান/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য: আলী রিয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, আলোচনার মধ্যদিয়ে আমাদের লক্ষ্য হলো একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে আমরা বাংলাদেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমরা দেখেছি, গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ দেশে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে আলোচনা শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রিয়াজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিএনপির একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এ দলটি দাবি উত্থাপন করেছে, কর্মসূচি দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের লড়াইয়ের পাশাপাশি সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে বিএনপি। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হতে চাই। যেগুলো আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছিলাম, তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি আন্তরিকভাবে, সুচিন্তিতভাবে তাদের মতামত জানিয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের দায়িত্বপালনকালে বিএনপির সহযোগিতা পেয়েছি, তার জন্য আন্তরিকভাবে তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব যেখান থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্দেশ করবে। ইতিমধ্যে কিছু বিষয়ে বিএনপির একমত ও ভিন্ন মত আছে। আলোচনার মধ্যদিয়ে আমরা আশা করি, এক জায়গায় আসতে পারব। টেবিলের দুই ধারে বসলেও আমরা দুপক্ষ নই।’
সঞ্চালনা বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে ৬টি সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। এসব রিপোর্ট একটি অফিসিয়াল প্রসিডিউরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। দেশের রাজনৈতিক দল, অরাজনৈতিক মহল, সিভিল সোসাইটির মতামত সাপেক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব। সেকারণে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে ওই সুপারিশসমূহ পাঠানো হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সে বিষয়ে মতামত দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে এ আলোচনা শুরু হয়েছে। এ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কমিশনের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে ‘
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রিয়াজের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ ৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়।