যে কারণে চট্টগ্রামের ৫০ কারখানা সাময়িক বন্ধ
Published: 17th, April 2025 GMT
সরকার পরিবর্তনের পর রপ্তানি আদেশ ও পণ্যের ক্রয় আদেশ কমে যাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছে চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক কারখানা। এর মধ্যে শিল্প পুলিশের একটি তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ৫ আগস্টের পর থেকে গত সাত মাসে ৫০টি কারখানা লে–অফ বা সাময়িক বন্ধ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ পোশাক, সুতা তৈরি ও জুতার কারখানা।
শিল্প পুলিশের তালিকা অনুযায়ী, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) আওতাধীন ১৮টি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) আওতাধীন ২টি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ১টি, বেপজার ৯টি ও অন্যান্য সংগঠনের সদস্যপদে থাকা ২২টি কারখানা সাময়িক বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে দুটি কারখানা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এর মধ্যে অধিকাংশ কারখানায় এখন কাজ না থাকায় সেগুলো সাময়িক বন্ধ। কাজ পেলে কারখানা খুলছে, আবার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বাকি কারখানাগুলো সাবকন্ট্রাক্ট বা উপচুক্তির মাধ্যমে কাজ করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজ কম থাকায় সেগুলো এখন সাময়িক বন্ধ। সম্প্রতি বেইস টেক্সটাইল নামের একটি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সাত মাসে ২০ বারের বেশি শ্রমিক অসন্তোষ দেখা গেছে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) ও আশপাশের সড়কে। গত এক মাসে অন্তত আটবার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা। ফলে এক–দুই ঘণ্টা সড়ক বন্ধ ছিল। এর মধ্যে গত ২৪ মার্চ প্রায় সাত ঘণ্টার বেশি সময় বন্ধ ছিল সড়ক।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কিছু কারখানার মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। আবার অনেক পোশাক কারখানায় পর্যাপ্ত ক্রেতা নেই। ফলে বেতন-বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘আন্দোলন’ করে সমাধান পাবেন এমন ধারণা থেকে শ্রমিকেরা বারবার সড়কে নেমে আসছেন। এতে তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ হলেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
শ্রমিক অসন্তোষ, বারবার সড়কে
৫০টি কারখানা সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ নিয়ে শিল্প পুলিশে পক্ষ থেকে একটি তালিকাও করা হয়। শিল্প পুলিশের তালিকায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামে বেতন-বোনাস ও ছুটি নিয়ে সমস্যা হতে পারে, এমন ৪৪টি কারখানার নাম উল্লেখ করা হয়। তবে পুলিশ বলছে, সেগুলোতে তেমন ঝামেলা হয়নি।
তবে গত ঈদের পরও বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা বেতন–বোনাসের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। ৯ এপ্রিল ঈদ বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মডেস্টি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও জেএমএস গার্মেন্টসের পাঁচ শতাধিক শ্রমিক। এক ঘণ্টার কাছাকাছি বন্ধ ছিল বন্দর-কাস্টমসগামী সড়ক। ২৪ মার্চ একই দাবিতে সড়কে অবস্থান নেন জেএমএস গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা।
জানা গেছে, গত সাত মাসে কারখানাগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া অর্ডারও কমেছে। ফলে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বেশ কিছু কারখানার ব্যবস্থাপনা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবে শ্রমিকদের দাবি, এ সুযোগে তাঁদের পাওনা পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ করছে মালিকপক্ষ।
বিভিন্ন সময় আন্দোলন করা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত সঠিক সময়ে বেতন ও বোনাসের দাবিতেই তাঁরা সড়কে নেমে আসছেন। অনেক কারখানা ঘোষণা ছাড়াই কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ চাকরি থেকে বের করে দিচ্ছে। এসব কারণে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। কারখানামালিকেরা আশ্বাস দিলেও সময়মতো বেতন দেন না।
সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো.
ভোগান্তিতে যাত্রী-পথচারী
সিইপিজেড এলাকাটি ফ্রি পোর্ট এলাকায় অবস্থিত। সিইপিজেডের যানবাহন চলাচল করে মূলত বিমানবন্দর সড়ক হয়ে। স্থানীয়ভাবে বন্দর-পতেঙ্গামুখী সড়ক নামে পরিচিত হলেও সম্প্রতি এর নাম পরিবর্তন করে বিমানবন্দর সড়ক করা হয়। প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ এই সড়কেই চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম হাউস, বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যালয়, সিইপিজেড, কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলসহ আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো অবস্থিত।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, চট্টগ্রাম ইপিজেড থানা এলাকার বাসিন্দা প্রায় আড়াই লাখ। অন্যদিকে বন্দর ও পতেঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা তিন লাখের বেশি। মূল শহরে যাতায়াতের জন্য বাসিন্দাদের প্রধান সড়ক বিমানবন্দর সড়কটি। অর্থাৎ এ সড়ক বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি দেখা দেয়। এ সড়কে শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়ালসড়ক থাকলেও সেটি গণপরিবহনে ব্যবহার কম।
সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি এ সড়ক দিয়ে বন্দর ও বেসরকারি ডিপোগামী বিভিন্ন ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করে। শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের ফলে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত এ যানবাহনগুলোও সড়কে আটকে থাকে। ৭ এপ্রিল আবদুল কুদ্দুস নামের এক লরিচালক বলেন, শ্রমিকদের দাবিদাওয়া অবশ্যই পূরণ করতে হবে, কিন্তু সেটির জন্য জনভোগান্তি করা ঠিক না।
সদ্য বদলি হওয়া চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সুলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বারবার শ্রমিকেরা সড়কে আন্দোলনে নামছেন। আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন মূলত জেএমএস গ্রুপের দুটি কারখানার শ্রমিকেরা বেতন-বোনাস নিয়ে আন্দোলন করেছেন। মালিকপক্ষ ১৭ এপ্রিলের (আজ) মধ্যে পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ এমএস গ র অসন ত ষ কর ছ ন র সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, করুন আবেদন, পদ ১৮৭
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাজস্ব খাতের একাধিক পদে জনবল নিয়োগের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই অধিদপ্তরে ১০ ক্যাটাগরির পদে ১১ থেকে ১৬তম গ্রেডে ১৮৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
১. পদের নাম: স্টোর অফিসার
পদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত কোনো বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। শিক্ষাজীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি অথবা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না। কম্পিউটারে এমএস অফিসে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা (গ্রেড-১১)
২. পদের নাম: হিসাবরক্ষক
পদসংখ্যা: ২৫
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত কোনো বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। শিক্ষাজীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি অথবা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না। কম্পিউটারে এমএস অফিসে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা (গ্রেড-১১)
৩. পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ২৭
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ ও ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতি থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা (গ্রেড-১৩)
৪. পদের নাম: সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৪
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা। সাঁটলিপিতে প্রতি মিনিটে বাংলায় ৫০ শব্দ ও ইংরেজিতে ৮০ শব্দের গতি এবং কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ ও ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতি থাকতে হবে। কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং, ই-মেইল, ফ্যাক্স মেশিন ইত্যাদি চালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা (গ্রেড-১৩)
৫. পদের নাম: উচ্চমান সহকারী
পদসংখ্যা: ৯
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ ও ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতি থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা (গ্রেড-১৪)
আরও পড়ুনখাদ্য অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, ১৩ থেকে ১৯তম গ্রেডে পদ ১৭৯১১১ মার্চ ২০২৫৬. পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৩
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা। সাঁটলিপিতে প্রতি মিনিটে বাংলায় ৪৫ শব্দ ও ইংরেজিতে ৭০ শব্দের গতি এবং কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ ও ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতি থাকতে হবে। কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং, ই-মেইল, ফ্যাক্স মেশিন ইত্যাদি চালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা (গ্রেড-১৪)
৭. পদের নাম: হিসাব সহকারী/হিসাব সহকারী কাম ক্যাশিয়ার/অফিস সহকারী কাম ক্যাশিয়ার
পদসংখ্যা: ৩৯
যোগ্যতা: ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এইচএসসি বা সমমান পাস। কম্পিউটারে এমএস অফিসে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)
৮. পদের নাম: অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ৭৬
যোগ্যতা: অন্যূন দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএতে এইচএসসি বা সমমান পাস। কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২০ শব্দ ও ইংরেজিতে ২০ শব্দের গতি থাকতে হবে। কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং, ই-মেইল, ফ্যাক্স মেশিন ইত্যাদি চালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)
আরও পড়ুনফায়ার সার্ভিসে বড় নিয়োগ, পদ ১৬২০৮ এপ্রিল ২০২৫ছবি: খালেদ সরকার