নাটোরে জালে আটকা বিপন্নপ্রায় গন্ধগোকুল
Published: 17th, April 2025 GMT
নাটোরের লালপুর উপজেলার এক ফসলি মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছিল একটি বাগডাশ বা গন্ধগোকুল। কিন্তু স্থানীয় যুবকেরা প্রাণীটির ঘুরে বেড়ানোতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জাল দিয়ে এটিকে আটক করে খাঁচাবন্দী করে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার দুয়ারিয়া ইউনিয়নের চাত্রার মাঠ থেকে গন্ধগোকুলটি আটক করা হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির জানান, বাগডাশ বা গন্ধগোকুলকে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) পৃথিবীর বিপন্নপ্রায় প্রাণীর তালিকাভুক্ত করেছে।
স্থানীয় যুবক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, একটি গন্ধগোকুল কয়েক দিন ধরে মাঠের ফসলের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিল। কয়েকজন যুবক প্রাণীটি দেখতে পেয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে একটি ফসলি জমি ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে গন্ধগোকুলটি ওই জালে আটকা পড়ে। জাল থেকে ছাড়ানোর সময় গন্ধগোকুলের দেওয়া আঁচড়ে এক তরুণ আহত হয়। পরে প্রাণীটি গ্রামের ছেলেরা খাঁচাবন্দী করে।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মী সাইফুল ইসলাম জানান, বাগডাশ বা গন্ধগোকুল হিংস্র নয়। বিরক্ত না করলে তারা কারও ওপর আক্রমণ করে না। বিপন্নপ্রায় এ প্রাণীটি ফসলি মাঠে লুকিয়ে থাকে। তারা ছোট ছোট প্রাণী খেয়ে বেঁচে থাকে।
খবর পেয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান গন্ধগোকুলটির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন এবং রাজশাহী বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে খবর দেন। খবর পেয়ে সেখানকার কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। তারা প্রাণীটি সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেবেন বলে জানান।
ইউএনও বলেন, “গন্ধগোকুলটিকে যেন কেউ মেরে না ফেলে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/আরিফুল/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের আবারও সড়ক অবরোধ
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত ও অবিলম্বে কলেজ হাসপাতাল চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে সড়ক অবরোধ করেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে মেডিকেল কলেজের সামনে সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। একই দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
আজ সকাল ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে বের হয়ে সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এতে সড়কের দুই দিকে যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ইউএনও সুকান্ত সাহা বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। যাত্রীদের যাতে ভোগান্তি না হয়, সে জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে হয়। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল চালু না থাকায় এই ক্লাসগুলো জেলা সদর হাসপাতালে সপ্তাহে দুই দিন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কলেজ থেকে হাসপাতালটির দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। যাতায়াতের জন্য কলেজের কোনো বাস নেই। ফলে নিয়মিত ক্লাসে যেতে সমস্যা হয়।
কর্মসূচি থেকে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত করা, ওয়ার্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ, ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ, সার্জারি, মেডিসিনসহ সব ক্লিনিক্যাল বিষয়ের যথাযথ ওয়ার্ডের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, পরিবহনব্যবস্থার ঘাটতি দূর করা এবং ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতাল চালুর দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুনহাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন১৯ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে তিনি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছেন, সপ্তাহে ছয় দিন ব্যবহারিক ক্লাস করতে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটির ব্যবস্থা করা হবে। চলতি বছরের জুলাইয়ে চালু হওয়ার কথা ছিল। এই প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বেড়েছে। ভবন বুঝে নেওয়াসহ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এটা করতে হবে। হাসপাতাল চালু হলে শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাসের অসুবিধা কেটে যাবে।
২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শান্তিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্থায়ীভাবে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর এটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। মদনপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কের পাশে অবস্থিত এই মেডিকেল কলেজ শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে। বর্তমানে এখানে পাঁচটি ব্যাচে ২৮০ শিক্ষার্থী রয়েছেন।