মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা বিব্রত অবস্থায় পড়েছে। যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করেও নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত করছে এটি বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রায় ২ হাজার ৭০০ রিট মামলা রয়েছে। কিছু মামলা রায়ের অপেক্ষায় আছে।

বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সে যে ক্ষতি হয়েছে তা সংস্কার করা হবে এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছা হবে না এবং কোনো কিছু আরোপিত করা হবে না। মুজিবনগর সরকারের নাম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা এ সরকারের নেই। কারণ ইতিহাস কখনো মুছা যায় না। ইতিহাসকে ইতিহাসের জায়গায় রাখতে হয়। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এসে কি করবে এটি তাদের ব্যাপার। মুজিবনগর সরকার প্রবাসী কিংবা অস্থায়ী সরকার নয়। এ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। তাই এই সরকারই সাংবিধানিক সরকার। এ সরকারের শপথ গ্রহণ একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটি চিরকাল শ্রদ্ধা ভালবাসার মধ্য দিয়ে সবাইকে স্মরণ রাখা দরকার। পরে তিনি মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স ঘুরে দেখেন।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত জাহান চৌধুরী, খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হোসাইন শওকত, জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, মেহেরপুরের পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সকল কর্মসূচি শেষ করে ঢাকার উদ্দেশে মুজিবনগর ত্যাগ করেন।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছে রাত্রি যাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম জ বনগর সরক র র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

আজ ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে।

শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয় এম এ জি ওসমানীকে।

সেই সরকারের শপথ গ্রহণের স্থান বৈদ্যনাথতলাকে মুজিবনগর নামকরণ করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন ১২ জন আনসার সদস্য।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

কর্মসূচি

দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক) আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন উপদেষ্টা।

ফারুক-ই-আজমের সঙ্গে থাকবেন তাঁর একান্ত সচিব লে. কর্নেল (অব.) মো. আবদুল গাফফার, তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন এবং সহকারী একান্ত সচিব আমিরুল ইসলাম।

দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আলোচনা সভা এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট শতাধিক তরুণ-যুবক মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে ঢুকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেন। ‘১৭ এপ্রিলের গার্ড অব অনার’ নামে ভাস্কর্যটিসহ অন্য ভাস্কর্যগুলোতেও ভাঙচুর চালানো হয়।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, এবার বড় পরিসরে মুজিবনগর দিবস পালন করা হচ্ছে না। মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভাস্কর্যগুলো আবার নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুজিবনগর সরকারের নাম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই: উপদেষ্টা
  • মুজিবনগর সরকারের নাম পরিবর্তনের ইচ্ছা নেই অন্তর্বর্তী সরকারের: উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম
  • ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা বিব্রত
  • আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
  • মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ দিবস আজ
  • ছাত্রদলের দুই নেতাকে কারাগারে প্রেরণ