মেট্রোরেলের স্থাপনা-সরঞ্জাম সরবে কবে
Published: 17th, April 2025 GMT
রাজধানী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা অনুপাতে যত সংখ্যক পার্ক বা খেলার মাঠ দরকার, তা তো নেই-ই, বরং যা আছে, সেগুলোর ব্যবহারেও নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। কিছুদিন আগেই আমরা দেখলাম ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনের কয়েকটি পার্ক দখল করে অনুমোদন ছাড়াই মেলা বসানোর খবর। আর রাজধানীর ফার্মগেটের একটি উদ্যান যে মেট্রোরেলের কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের জন্য একপ্রকার হারিয়ে যেতে বসেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ উদ্যান আবার কবে ফিরে পাবে স্থানীয় বাসিন্দারা?
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ফার্মগেটের শহীদ আনোয়ারা উদ্যান ২০১৮ সাল থেকে ব্যবহার করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শেষে উদ্যানটি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ২০২৩ সালে উদ্যানের জায়গায় একটি স্টেশন প্লাজা নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানায় ডিএমটিসিএল। পরিকল্পনা অনুসারে স্টেশন প্লাজাটিতে দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, কফিশপ, বিনোদনকেন্দ্রসহ শিশুদের বিনোদন ও খেলার ব্যবস্থা থাকার কথা। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং উদ্যানটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন নগরবিদ ও পরিবেশ সংগঠকেরা।
আশার কথা হলো, উদ্যানটি আবার সংস্কার ও সবুজায়ন করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। গত বছরের ডিসেম্বরে এ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও দুই উপদেষ্টা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
দুঃখজনক হচ্ছে, কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও উদ্যানটি চালু করা যায়নি। নগর-পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনকারীরা বলছেন, উদ্যানটিতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের যে স্থাপনাসহ সরঞ্জাম রয়েছে, চাইলে তা এক সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে ফেলা সম্ভব। এরপরও কেন তা করা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ সংগঠকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, উদ্যানে কিছু কাজ আছে, তা শেষ হলে আগামী জুনের মধ্যে উদ্যানের পশ্চিম অংশ খালি করে দেওয়া হবে। আমরা তাঁর প্রতি আস্থা রাখতে চাই। উদ্যানটি আবার সবুজায়ন করে চালু করতে আর সময়ক্ষেপণ হবে না, সেটিই কাম্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় নৌকায় আগুন, ১৪৩ মরদেহ উদ্ধার
আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে একটি নৌকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন। নৌকাটিতে জ্বালানি ছিল। আগুন লাগার পর নৌকাটি নদীতে উল্টে যায় বলে গতকাল শুক্রবার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর ইকুয়েটুর প্রদেশের রাজধানী এমবানডাকার কাছে। রুকি ও বিশ্বের সবচেয়ে গভীর কঙ্গো নদীর সংযোগস্থলে এ বিপর্যয় ঘটে।
দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কঙ্গো নদীতে ওই কাঠের নৌকাটিতে কয়েক শ আরোহী ছিলেন বলে জানান ওই অঞ্চলের জাতীয় সহকারীদের প্রতিনিধিদলের প্রধান জোসেফিন-প্যাসিফিক লোকুমু।
এএফপিকে লোকুমু বলেন, প্রথম ধাপে গত বুধবার ১৩১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আরও ১২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাঁদের অনেকেই আগুনে পুড়ে গেছেন।
স্থানীয় নাগরিক সমাজের একজন নেতা জোসেফ লোকোন্দো জানান, তিনি মরদেহগুলোর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় সহায়তা করেছেন। জোসেফ বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ১৪৫ জন। তাঁদের কেউ কেউ পুড়ে গেছেন। কেউবা পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
এ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে নৌকায় রান্নার আগুনকে চিহ্নিত করেছেন লোকুমু। তিনি বলেন, নৌকাটিতে একজন নারী রান্নার জন্য আগুন জ্বালিয়েছিলেন। পাশেই ছিল নৌকার জ্বালানি। বিস্ফোরণ হলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক নারী ও শিশুর মৃত্যু হয়।
নৌকাটিতে ঠিক কতজন আরোহী ছিলেন, সেটা জানা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে লোকুমু বলেন, ‘সংখ্যাটি কয়েক শ।’ তিনি জানান, বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার লোকুমু জানান, এখনো কিছু পরিবার তাঁদের স্বজনদের খোঁজ পাননি।
মধ্য আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে সড়ক পরিবহনব্যবস্থা বেশ নাজুক। সেখানে পর্যাপ্ত ব্যবহারযোগ্য রাস্তা নেই। এর ফলে অনেক মানুষ হ্রদ, কঙ্গো নদী এবং এর উপশাখাগুলোয় নৌকায় যাতায়াত করেন। প্রায়ই নৌকাডুবির খবর পাওয়া যায়। এসব ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও বেশি হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত নৌকাগুলোয় যাত্রীদের যথাযথ তালিকা না থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম জটিল হয়ে পড়ে।
এর আগে ২০২৩ সালে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর ইকুয়েটুর প্রদেশে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৪৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গিয়েছিল। গত বছরের অক্টোবরে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় হ্রদ কিভুতে একটি নৌকা উল্টে ২০ জনের বেশি নিহত হন বলে জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে এই হ্রদে আরেকটি নৌকাডুবির ঘটনায় প্রায় ১০০ মানুষের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছিল।