আজ ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে।
শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয় এম এ জি ওসমানীকে।
সেই সরকারের শপথ গ্রহণের স্থান বৈদ্যনাথতলাকে মুজিবনগর নামকরণ করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন ১২ জন আনসার সদস্য।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
কর্মসূচিদিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক) আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন উপদেষ্টা।
ফারুক-ই-আজমের সঙ্গে থাকবেন তাঁর একান্ত সচিব লে.
দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আলোচনা সভা এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট শতাধিক তরুণ-যুবক মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে ঢুকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেন। ‘১৭ এপ্রিলের গার্ড অব অনার’ নামে ভাস্কর্যটিসহ অন্য ভাস্কর্যগুলোতেও ভাঙচুর চালানো হয়।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, এবার বড় পরিসরে মুজিবনগর দিবস পালন করা হচ্ছে না। মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভাস্কর্যগুলো আবার নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ বনগর স ভ স কর য সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের দুই নেতাকে কারাগারে প্রেরণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার ওপর হামলার মামলায় মেহেরপুরের মুজিবনগরে ছাত্রদলের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে এ মামলা করেন শাওন শেখ। এতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম মিঠুন ও মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের হারু শেখের ছেলে শাওন শেখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা পর্যায়ের মুখ্য সংগঠক। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, প্রায় ২৫ দিন আগে ভিজিএফ কার্ডে চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে মোবাইল ফোনে তাঁকে হত্যার হুমকি দেন মিঠুন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা যাওয়ার জন্য মুজিবনগরের কেদারগঞ্জ চার রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে হামলার শিকার হন।
মামলার বিষয়ে জেলা ছাত্রদল সভাপতি আকিব জাবেদ সেনজির বলেন, বিএনপির একটি নিউজে শাওন শেখ আপত্তিকর মন্তব্য করেন। সোমবার রাতে তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন মিঠুন। বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। শাওন শেখ জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের ভাষ্য, মামলার পর দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করছে।