এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, অন্যের মৃত্যু ঘিরে রহস্য
Published: 17th, April 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যজনের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের হাওরিয়াচালা গ্রাম থেকে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আছিয়া খাতুন (৬০) নামের এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে আটাবহ ইউনিয়নের নাওলা নামাপাড়া এলাকা থেকে সাদিয়া আক্তারের (২২) লাশ উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আছিয়াকে তাঁর স্বামী কাজী মইন উদ্দিন হত্যা করে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে তাঁর স্বজনদের অভিযোগ। এলাকাবাসী জানায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এর পর রাতেই আছিয়াকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
সাদিয়া আক্তারের মৃত্যৃটি রহস্যজনক বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। সাদিয়ার স্বামী সাইদুল ইসলামের দাবি, তাঁর স্ত্রী শৌচাগার থেকে বের হওয়ার পরই মাটিতে লুটে পড়েন। তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
কালিয়াকৈর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) যুবায়ের আহমেদ বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে, তাদের হত্যা করা হয়েছে কিনা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছোট বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গতি কম
অপ্রচলিত বা নতুন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তবে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির গতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো বড় বাজারের তুলনায় বেশ কম।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) নতুন বাজারে ৫১২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হওয়া ৪৮০ কোটি ডলারের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। অথচ চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইইউতে ১১ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ শতাংশ ও কানাডায় ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৩ হাজার ২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ইইউতে ৫০, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯, যুক্তরাজ্যে ১১, কানাডায় ৩ ও নতুন বাজারে ১৭ শতাংশ তৈরি পোশাক যায়।
নতুন বাজারের মধ্যে রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে। আবার অস্ট্রেলিয়া ও চীনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে খুবই কম। ফলে সার্বিকভাবে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে।
বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অপ্রচলিত সবচেয়ে বড় বাজার জাপান। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এ বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় বড় বাজার অস্ট্রেলিয়ায় চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের তৃতীয় শীর্ষ নতুন বাজার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৫৪ কোটি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। চতুর্থ শীর্ষ নতুন বাজার তুরস্ক। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৩৫ কোটি ৭২ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। তুরস্কের কাছাকাছি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়, ৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম।
বিজিএমইএর তথ্যানুযায়ী, রাশিয়ার বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে এ বাজারে রপ্তানি হয়েছে ২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বসেছে অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ। ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করলেও ইতিমধ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজারে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদেরা।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গত বৃহস্পতিবার এক সংলাপে বলেন, এশিয়ায় বড় বাজার রয়েছে। চীন বছরে ২ হাজার ৮০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। ভারত আমদানি করে ৭৫০ কোটি ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত চীনে ১ বিলিয়ন ও ভারতে ২ বিলিয়ন ডলারের কম রপ্তানি করে। এ জায়গা মনোযোগ দেওয়া গেলে পণ্য ও বাজার বহুমুখী করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো সম্ভব।