জাপানে উচ্চশিক্ষায় গমনেচ্ছুদের ভিএফএস অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হয়রানির স্বীকার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দেক গুলশানের ডেল্টা টাওয়ারের সামনে ভুক্তভোগী শত শত শিক্ষার্থী মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।

কর্মসূচিতে তারা ভিএফএস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করেন।


মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাপান সরকারের অফার লেটার পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী দেশটির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু ভিএফএস সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হয়রানির স্বীকার হয়ে আট শতাধিক শিক্ষার্থী এখনও ভিসার জন্য আবেদন জমা দিতে পারেননি। ভিএফএস অ্যাপয়েন্টমেন্ট জটিলতায় আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

শিক্ষার্থীরা বলেন, জাপানে ইতিমধ্যে অনেকের ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। নেপাল-শ্রীলংকাসহ অন্যান্য দেশের ছাত্ররা ক্লাসে জয়েন করে ফেলেছে। অথচ, আমরা এখনো ভিসার জন্য আবেদনেই করতে পারছি না।

ভুক্তভুগীরা শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এক বছর ধরে জাপানি ভাষা শিখে জাপান সরকার কর্তৃক ইলিজিবল হয়ে সবাই টিউশন ফি পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানে যেতে না পারলে আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাবে। আত্মহত্যা করা ছাড়া আমাদের আর গতি থাকবে না। আমরা জানতে চাই, সবকিছু ঠিক থাকার পরও আমরা কেন জাপান যেতে পারছি না?

প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর থেকে জাপান দূতাবাস ভিএফএস গ্রোবাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ডকুমেন্ট জমা নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু ভিএফএসের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, আগামী ২ মাসের কোনো স্লট খালি নেই।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ছয়টি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-

১.

 জাপান সরকারের অফার লেটার (Certificate of Eligibility) বের হলেই ভিসা দিতে হবে।
২. ক্লাস শুরুর আগেই ভিসা ইস্যু করতে হবে
৩. অ্যাপ্লিকেশন জমা দেওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যেই ভিসা দিতে হবে।
৪. ওয়েবসাইটের স্লট সব সময় ওপেন রাখতে হবে।
৫. অ্যাপয়েন্টমেন্ট সরাসরি দূতাবাস কর্তৃক দিতে হবে।
৬. ভিএফএস’র হয়রানি ও জালিয়াতি বন্ধ করতে হবে।
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ভুক্তভোগী নারী, হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিবেশী কয়েকজনের মারধর ও জখমের শিকার হন নীলা রানী (৪৪)। এতে তাঁর চোখের ভ্রুর ওপর পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে, ভেঙে গেছে একটি দাঁত। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের ব্যথায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন ওই নারী।

গত বুধবার মারধরের ঘটনার পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় নীলা রানীর ছেলে বাদী হয়ে বোচাগঞ্জ থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। পুলিশ একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

এদিকে হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় লোকজন। ভুক্তভোগী নীলা রানী বোচাগঞ্জ উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের প্রয়াত অনিত্র চন্দ্র রায়ের স্ত্রী।

মামলার আসামিরা হলেন উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল ইসলাম (৫৫), শরিফুল ইসলাম (৪০), তরিকুল ইসলাম (৪২) ও মুন্না ইসলাম। ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ আসামি বাবুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। পরদিন শুনানি শেষে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নীলা রানী ও আসামিরা পরস্পরের প্রতিবেশী। পূর্বশত্রুতার জেরে ঝগড়া লেগেই থাকে। বুধবার সন্ধ্যায় আসামিরা বাড়ির পাশে মনিপুর মসজিদের সামনে নীলার পথ রোধ করে তাঁকে মারধর করেন। পরে নীলাকে সঙ্গে নিয়ে ছেলে এনাফ চন্দ্র থানায় অভিযোগ করার উদ্দেশে রওনা করেন। এ সময় দ্বিতীয় দফায় আসামিরা তাঁদের ওপরে লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। আসামিদের আঘাতে নীলা রানীর বাঁ চোখের ভ্রুর ওপরে গুরুতর জখম হয়। পরে তাঁকে প্রথমে বোচাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাঁকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের পাশে বসে বড় ছেলে হৃদয় চন্দ্র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী শেফালী রানীর সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে তাঁর মায়ের ঝগড়া চলছিল। পরে সামান্য বিষয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে শেফালীর কথা–কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এ নিয়ে শেফালী রানী বিচার দেন সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল ইসলামের কাছে। পরে সালিস ডাকেন বাবুল ইসলাম। কিন্তু সেখানে কোনো ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য উপস্থিত না থাকায় তাঁরা উপস্থিত হননি। তখন বাবুল তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এর জেরে সন্ধ্যায় তাঁর মায়ের পথ রোধ করেন তাঁরা। কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে হামলা করে গুরুতর জখম করেন। তিনি বলেন, পুলিশ আসামি ধরার পর ছাড়া পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা চিন্তিত।

বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান জাহিদ সরকার বলেন, ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩০৭ ধারাসহ বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়। আসামির জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফ হাসান বলেন, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেনেছেন। দ্রুত থানা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। আসামি গ্রেপ্তারও হন। শুনেছেন তিনি পরে জামিন পেয়েছেন। ঘটনা যেহেতু জমিসংক্রান্ত, তাই সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।

হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নীলা রানীর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আজ দুপুরে বোচাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিকদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মানববন্ধনে বিধান দত্ত, বিপ্লব কুমার সিংহ, উত্তম কুমার, শ্রীকান্ত রায়সহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নীলা রানীর ওপর দেশি অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হামলা চালানো হয়েছে। তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করা হয়। বর্তমান তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করলেও তিনি জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। বর্তমানে নীলার পরিবারকে এলাকা ছাড়ার কথাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা তদন্তসাপেক্ষে আসামিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • রাজশাহীতে চাঁদাবাজির মামলার বাদীকেই গ্রেপ্তারের দাবি বিএনপির
  • গাইবান্ধায় কলেজছাত্র সিজু হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • ডিপিপির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
  • শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • গাইবান্ধায় কলেজছাত্র সিজু হত্যার বিচারের দাবিতে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও
  • পুলিশের বিরুদ্ধে সিজুকে হত্যার অভিযোগ, এসপির কার্যালয় ঘেরাও
  • হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ভুক্তভোগী নারী, হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন