ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব, মনে করছে বিএনপি
Published: 16th, April 2025 GMT
চলতি বছরের শেষ মাস অর্থাৎ ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করছে বিএনপি।
আগামী এক মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ হলে এই নির্বাচন করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
আরো পড়ুন:
৫০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ শোধ করা হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ইরানকে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে: মার্কিন বিশেষ দূত
বৈঠক শেষে বেরিয়ে সংবাদিকদের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, “আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছি। নির্বাচন ডিসেম্বরের আগেও হতে পারে, সেটাও বলেছি। এখানে সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজে বলেছেন, যেসব বিষয়ে সকলের ঐকমত্য থাকবে সেসব বিষয়ে সংস্কার করা হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা তার দেওয়া বক্তৃতায় বারবার নির্বাচনের একটি টাইমলাইনের কথা বলছেন, আর সেটি হলো- ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে। তবে বিএনপি তাতে একমত নয়। দলটি চাইছে নির্বাচন আগেই হোক, ডিসেম্বরে বা তারও আগে। অবশ্য জামায়াত এতদিন সংস্কার শেষে নির্বাচনের কথা বললেও বুধবার দলটির আমির বলেছেন, আগামী রমজানের আগেই তারা নির্বাচন চান।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক অভিযোগ করেন, দেশের অনেক জায়গায় প্রশাসন বিএনপির পক্ষ নিচ্ছে। ফলে তাদের দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এনসিপি আগে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার চায়; তাদের বিবেচনার দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে নির্বাচন।
তবে বিএনপি মনে করছে সংস্কার দ্রুত শেষ করার সুযোগ রয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে আমীর খসরু বলেন, “সহজ বিষয়- আমরা সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছি। সকলের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য আছে আমরা সেটি দিয়েছি। ঐকমত্য হলে সেটা এক মাসের মধ্যেই হয়ে যাবে।”
গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে এই সাক্ষাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
আমীর খসরু বলেন, “মার্কিন প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছে বিএনপির পলিসি কী হবে। অর্থনৈতিক পলিসি কী হবে, সেটা আমরা তাদেরকে বলেছি। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কার করার সময় হয়েছে বিএনপির। আমরা তাদের বলেছি, আগামী দিনে আরো বড় অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে যাব আমরা। সেটাতে তারা আশ্বস্ত হয়েছেন।”
এর আগে দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করে।
সেখান থেকে বেরিয়ে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, “তারা আশা করেন আগামী রমজানের আগে অর্থাৎ মধ্য ফেব্রুয়ারি মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
এই প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “নভেম্বর-ডিসেম্বর বিষয় না। বর্তমানে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে সেখান থেকে গণতান্ত্রিক সরকারে ফেরা দরকার দ্রুত। সেটা করতে কতদিন সময় লাগে, সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।”
বুধবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এ বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চায় বিএনপি।
তবে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো সময় দেননি জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সুনির্দিষ্ট কোনো ডেটলাইন আমাদের দেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান। আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।”
তবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আলোচনায় বিএনপিকে খুশি মনে হয়েছে। তবে তারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চান।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ব এনপ ড স ম বর র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য: আলী রিয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, আলোচনার মধ্যদিয়ে আমাদের লক্ষ্য হলো একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে আমরা বাংলাদেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমরা দেখেছি, গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ দেশে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে আলোচনা শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রিয়াজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিএনপির একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এ দলটি দাবি উত্থাপন করেছে, কর্মসূচি দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের লড়াইয়ের পাশাপাশি সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে বিএনপি। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হতে চাই। যেগুলো আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছিলাম, তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি আন্তরিকভাবে, সুচিন্তিতভাবে তাদের মতামত জানিয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের দায়িত্বপালনকালে বিএনপির সহযোগিতা পেয়েছি, তার জন্য আন্তরিকভাবে তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব যেখান থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্দেশ করবে। ইতিমধ্যে কিছু বিষয়ে বিএনপির একমত ও ভিন্ন মত আছে। আলোচনার মধ্যদিয়ে আমরা আশা করি, এক জায়গায় আসতে পারব। টেবিলের দুই ধারে বসলেও আমরা দুপক্ষ নই।’
সঞ্চালনা বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে ৬টি সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। এসব রিপোর্ট একটি অফিসিয়াল প্রসিডিউরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। দেশের রাজনৈতিক দল, অরাজনৈতিক মহল, সিভিল সোসাইটির মতামত সাপেক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব। সেকারণে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে ওই সুপারিশসমূহ পাঠানো হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সে বিষয়ে মতামত দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে এ আলোচনা শুরু হয়েছে। এ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কমিশনের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে ‘
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রিয়াজের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ ৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়।