চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলা ২৫ এপ্রিল
Published: 16th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলা ২৫ এপ্রিল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে। এবার জব্বারের বলীখেলার ১১৬ তম আসর বসবে ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে। বলীখেলা উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল থেকে তিন দিনের বৈশাখী মেলা বসবে লালদীঘি মাঠ ও আশপাশের চার বর্গকিলোমিটার এলাকায়।
প্রতিবছর ১২ বৈশাখ ঐতিহ্যবাহী এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বকশিরহাটের আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে এই বলীখেলার প্রবর্তন করেছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তরুণ ও যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে কুস্তি বা বলীখেলা শুরু করেছিলেন লালদীঘি মাঠে। সেই থেকে প্রতিবছর বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কালের বিবর্তনে এই বলীখেলা এই অঞ্চলের ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। রূপ লাভ করেছে প্রাণের মেলায়।
দেশের আলোচিত জব্বারে বলীখেলা এবং বৈশাখী মেলা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক করেছে মেলা কমিটি। নগর পুলিশের উপকমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে আন্দরকিল্লা থেকে আদালত পর্যন্ত প্রধান সড়কে মেলার দোকান না বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মেলাকে ঘিরে দোকান বিক্রি, দখল, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে জানানো হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মামুন, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত আব্দুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার, বলীখেলার প্রধান রেফারি হাফিজুর রহমান, সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন, সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, মেলা কমিটির সদস্য সংগঠক আলী হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে দুই বছর এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দুই বছর বলীখেলা হয়নি। এ ছাড়া ধারাবাহিকভাবে এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খোয়া যাওয়া ২৫১টি মুঠোফোন উদ্ধার করে মালিকদের বুঝিয়ে দিল পুলিশ
বিভিন্ন সময়ে হারানো, চুরি ও ছিনতাই হওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৫১টি মুঠোফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ।
মুঠোফোন হারিয়ে যাওয়া এবং চুরি ও ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় মুঠোফোনের মালিকদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত এক মাসে শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ ৬৩টি, হাতিরঝিল থানার পুলিশ ৫৪টি, মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ ৪০টি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পুলিশ ৩২টি, আদাবর থানার পুলিশ ৩২টি এবং তেজগাঁও থানার পুলিশ ৩০টি মুঠোফোন উদ্ধার করে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয়ে উপকমিশনার মো. ইবনে মিজানের উপস্থিতিতে উদ্ধারকৃত মুঠোফোনগুলো প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, উদ্ধার করা মুঠোফোন কয়েক হাত ঘুরে বিক্রি হয়েছে। অনেকেই কম দামে এসব ফোন ব্যবহার করছিলেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা তো অপরাধ করেননি। তাই তাঁদের আইনের আওতায় নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, মুঠোফোন ফিরে পেয়ে মালিকেরা খুশি হন এবং তাঁরা পুলিশের প্রশংসা করেন ও কৃতজ্ঞতা জানান। জনাকীর্ণ এলাকায় ও ভিড়ের মধ্যে সবাই যেন তাঁর মুঠোফোনটি নিয়ে একটু সতর্ক থাকেন, সেই অনুরোধ করেন পুলিশ কর্মকর্তা ইবনে মিজান।
পুলিশ কর্মকর্তা ইবনে মিজান বলেন, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মুঠোফোন হারানোর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তেজগাঁও বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে মুঠোফোন উদ্ধারকারী দল গঠন করা হয়। দল গঠনের পর ৩৭৫টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এতে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে আছেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রব্বানি হোসেন ও তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার জিয়াউর রহমান। তাঁদের তদারকির দায়িত্বে আছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. জুয়েল রানা ও তেজগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. আলমগীর কবির। দলের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছেন তিনি নিজেই (ইবনে মিজান)।
খোয়া যাওয়া মুঠোফোন ফিরে পেয়ে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বেলায়েত হোসেন। তিনি আগে সাংবাদিকতা করতেন। আজ বিকেলে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ১১ নভেম্বর রাজধানীর মগবাজারের আমবাগানে তাঁর চেম্বারের ড্রয়ার থেকে মুঠোফোন খোয়া যায়। ওই ঘটনায় তিনি হাতিরঝিল থানায় জিডি করেছিলেন। মুঠোফোনে তাঁর প্রয়াত মায়ের একটি মাত্র ছবি ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য ছিল। মুঠোফোন হারিয়ে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন এবং কান্নাকাটিও করেন। তিনি মনে করেছিলেন পুলিশ তাঁর এই ফোন উদ্ধার করতে পারবে না। তবে ফোনটি ফিরে পেয়ে তিনি খুশি হয়েছেন এই ভেবে যে পুলিশ সক্রিয় হয়েছে। এখন মানুষ পুলিশের কাছ থেকে সেবা পাবে।