খাগড়াছড়িতে চবির ৫ শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগ
Published: 16th, April 2025 GMT
খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে তারা অপহরণের শিকার হন বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-প্রসীত) দায়ী করে অবিলম্বে অপহৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
তবে ইউপিডিএফ অপহরণের কথা অস্বীকার করেছে।
অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী হলেন- চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো।
পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রিবেক চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, অপহৃত চবির ৫ শিক্ষার্থীরা পাহাড়ের বিঝু উৎসব উপলক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। উৎসব শেষে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে ফেরার উদ্দেশে বাঘাইছড়ি থেকে দিঘীনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে যান। তবে ওই দিন চট্টগ্রামগামী বাসের টিকিট না পাওয়ায় তারা খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছু দূরে কুকিছড়া নামক এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন। আজ সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরস্থ কুকিছড়া থেকে টমটম গাড়িযোগে খাগড়াছড়ি সদরের স্টেশনে যাওয়ার পথে গিরিফুল এলাকায় একদল অস্ত্রধারী তাদের গাড়ি গতিরোধ করে। পরে অস্ত্রধারীরা টমটম গাড়িচালকসহ ৫ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে।
বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী ও চালককে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপিডিএফের সংগঠক অংগ্য মারমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অপহরণের সঙ্গে তার সংগঠন জড়িত নয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ইউপিডিএফ সবসময় নিজেদের মধ্যে সংঘাত বন্ধের পক্ষে। তাই এ অপহরণের ঘটনায় ইউপিডিএফ জড়িত থাকা প্রশ্নই আসে না। ইউপিডিএফকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হয়েছে, এটি ষড়যন্ত্রের অংশ।
খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণের বিষয়টি বিভিন্ন অনলাইনে দেখছি। তবে অফিসিয়াল কাজে মহালছড়ি উপজেলায় আছি। তাই সদরে গেলে বিস্তার তথ্য নিয়ে জানাতে পারব।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহরণ র অপহ ত
এছাড়াও পড়ুন:
গোবিন্দগঞ্জে স্কুলছাত্র সাব্বির হত্যার বিচারের দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান
স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেন (১৫) হত্যার বিচারের দাবিতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। বুধবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের চারমাথা মোড়ে দুপুর ১২টা থেকে আধা ঘণ্টা অবস্থান করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রামনাথপুর এলাকার বাসিন্দারা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিশুবাড়ি দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমবেত হন। সেখান থেকে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরে আসেন। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা চারমাথায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান নেন। বিক্ষোভকারীরা হত্যাকারীদের বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা ও গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে অপরাধীদের বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন। এতে আধা ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কর্মসূচি চলাকালে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান, স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক, কামাল হোসাইন, ফিরোজ কবির, খোকন মিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, অপহরণের চার দিন পর সাব্বিরের লাশ পাওয়া গেছে। আসামিরা স্কুলছাত্রকে নির্মমভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তার হাত-পা ভেঙে শৌচাগারের কূপে ফেলে দেয়। পরে মাথায় পাথরচাপা দিয়ে রাখা হয়। এমন ঘটনা যেন আর কেউ ঘটানোর সাহস না করতে পারে, এ জন্য অপহরণ ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, সাব্বির হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় অন্য কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
অপহরণের চার দিন পর মঙ্গলবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার আখ খামারের পরিত্যক্ত শৌচাগারের কূপ থেকে স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সাব্বির উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও বিশুবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করেন। মামলায় রামনাথপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম (১৮), একই উপজেলার বিশুবাড়ী গ্রামের আবদুল আলীম (১৮), তরফকামাল গ্রামের ইউনুস আলীসহ (৩৫) তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়। চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ইউনুস, রবিউল ও আলীমকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কবিরুল ইসলাম (২০) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘গাইবান্ধায় অপহরণের চার দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।