বহুভাষিক ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা গড়ার প্রত্যয়ে বিটিআরসি ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্স দিবস-২০২৫ উদযাপন করেছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের (বিআইজিএফ) উদ্যোগে এবং ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নম্বরস-এর (আইকান) সহযোগিতায় কারিগরি কর্মশালা ও বিশেষ সম্মেলনে গবেষক, প্রযুক্তিবিদ, টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজন ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উদযাপনে ‘বিটিআরসি ডট বাংলা’ ডোমেইনে বিটিআরসির নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ইমেইল অ্যাপ্লিকেশন উদ্বোধন করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.
বিটিআরসির মহাপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিউল আজম পারভেজ ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্স দিবসের প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব উপস্থাপন করেন। বিআইজিএফ’র মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল হক অনু ডট বাংলা ডোমেইনকে জনপ্রিয় করতে বিটিআরসির সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, ইন্টারনেট জগতে ৪৯.২ ভাগ কনটেন্ট ইংরেজি, অথচ ইংরেজি ভাষী জনসংখ্যা পৃথীবীতে মাত্র ১৬ শতাংশ। ফলে বেশ কিছু দেশের বহু ভাষার জনগোষ্ঠি তার নিজস্ব ভাষায় ইন্টারনেট কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারছে না।
ইন্টারনেটে বাংলা ভাষা ব্যবহার ও ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্সের প্রেক্ষাপট, অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও সম্ভাবনা নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপনা করেন বক্তারা।
চ্যাটজিপিটি ছাড়াও এআই প্রযুক্তির সব মডেলে ইংরেজি ও পশ্চিমা ভাষার ওপর বেশি জোর দিয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বাংলা ভাষায় ইন্টারনেটকেন্দ্রিক কনটেন্ট, ইন্টারফেস আর বিভিন্ন ভাষায় ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। এটা দেশ, জাতি আর সমাজের অর্থনৈতিক, সংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত বিকাশের জন্য জরুরি।
ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্সের কারিগরি দিক প্রসঙ্গে বিটিআরসির উপপরিচালক ড. শামসুজ্জোহা বলেন, ২০২৬ সালে নতুন করে টপ লেভেল ডোমেইন বরাদ্দ দেওয়া শুরু হবে। বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এতে। সুযোগ কাজে লাগাতে আগ্রহী উদ্যোক্তার জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নিতে হবে।
অনলাইনে যুক্ত হয়ে আইকান এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমীরণ গুপ্ত বলেন, যারা ইংরেজি ভাষাভাষী নয়, তাদের জন্য বহুভাষিক ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ডোমেইনের সামগ্রিক বিষয়ে, বিশেষত ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্স বিষয়ে আইকানের কর্মসূচির বিষয়ে আলকপাত করে বলেন, এমন বিষয়ে যে কোনো প্রকৌশল ও কারিগরি সহায়তা দিতে আইকান সব সময় কাজ করবে।
আইকান বোর্ডের পরিচালক সাজিদ রহমান জানালেন, ইন্টারনেট সবাইকে এক সুতোয় বাধার জন্য চালু হলেও ভাষার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তা বিভাজন সৃষ্টি করেছে। যদি অন্তর্ভূক্তিমূলক ডিজিটাল ভবিষ্যত গড়তে হয়, তাহলে সবাইকে সমানভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। বিটিআরসি’র উদ্যোগ এক্ষেত্রে জরুরি। ফলে সব স্টেকহল্ডারদের নিয়ে কার্যকরভাবে ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্সের ইকোসিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে।
ইন্টারনেট জগতে যে কোনো ভাষার সার্বজনীন ব্যবহারের কারিগরি চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে বিটিসিএল ডোমেইন বিভাগের ব্যবস্থাপক মোস্তফা আল মামুন ও আম্বার আইটির মাহফুজুর রহমান বলেন, ইউনিভার্সেল অ্যাকসেপ্টেন্সের সফল বাস্তবায়নে সফটওয়্যার ও কারিগরি প্রকৌশল মানোন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে হবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো: এমদাদ উল বারী বলেন, যোগাযোগের প্রয়োজনে মাতৃভাষার বিকল্প নেই। অন্য ভাষায় নিজেকে প্রকাশ করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই তা জটিল হয়। অনেক সময় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় অন্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ডিজিটাল ডিভাইড কমিয়ে আনতে কানেক্টিভিটি ও ইন্টারনেট ব্যবহার- দুই ক্ষেত্রেই ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে।
কারিগরি সেশনে ভাষার সার্বজনীন ব্যবহার, ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেইম (আইডিএন) ও ইমেইল অ্যাড্রেস ইন্টারন্যাশনালাইজেশন বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেন আইকানের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের টেকনিক্যাল এনগেজমেন্ট ম্যানেজার চাম্পিকা উইজয়তুনগা।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার মাহমুদ হোসেন, বিআইজিএফ চেয়ারপারসন মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম, বাংলাদেশ লইয়ার ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার হাসান শাহরিয়ার, বাংলাদেশ ইয়ূথ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াদ হাসান বাদশা, বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের চেয়ারম্যান নাজমুল দিবস উদযাপন সভায় উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ট আরস ব ট আরস চ য় র ম য ন ব ট আরস র ব যবহ র র জন য ড ম ইন আইক ন সরক র উপস থ
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে পরিত্যক্ত অবস্থায় বন্দুক ও কার্তুজ উদ্ধার
খাগড়াছড়িতে পুলিশের অভিযানে একটি এলজি ও একটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা সদর পৌরসভার কলেজ গেইট মোহাম্মদপুর এলাকার পাহাড় থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে- কলেজ গেইট মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধার নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখানে স্থানীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালিয়ে সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া একটি এলজি (বন্দুক) ও একটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছে এবং পালিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।