পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলার প্রতিবেশী দেশ হল বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। বুধবার মুর্শিদাবাদে এক সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেছেন।
বুধবার কলকাতার নেতাজি ইনডোরে ইমাম-মুয়াজ্জিন-বুদ্ধিজীবিদের সভায় আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুর্শিদাবাদে দাঙ্গা পরিস্থিতির স্বীকার করে নিয়ে শুরুতেই নিজের দায় ঝেড়ে ফেলেন মমতা। অশান্তির জন্য সরাসরি বিজেপি তথা কেন্দ্রের সরকারকে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তার স্পষ্ট অভিযোগ, মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি যে ধর্মীয় অসন্তোষ ও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে তা পরিকল্পিত ঘটনা।
তিনি বলেন, “প্ল্যান করে এই অশান্তি পাকানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকতে দিয়েছে বিএসএফ। বাইরে থেকে লোক এনেছে বিজেপি। তারাই অশান্তির আগুন জ্বেলেছে। প্লেন চলছে, প্লেনে কারা আসছে কিভাবে আসছে.
এর পরেই বিমসটেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক নিয়ে খোঁচা দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইউনুসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর গোপন বৈঠক করতেই পারেন। দেশের ভালো হলে ভালো। কিন্তু আপনাদের উদ্দেশ্যটা কী? অন্যদেশ থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা? আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না?”
এরপরই তিনি বলেন, “বাংলার প্রতিবেশী দেশ হল বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। গতকাল আমি এএনআই-এর একটি টুইট দেখেছি যেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে যে দাঙ্গার ঘটনা বাংলাদেশের সাথে জড়িত। যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী। সীমান্তের দেখাশোনা করে বিএসএফ, রাজ্য সরকার নয়। কেন বিজেপির লোকদের বাইরে থেকে এসে গোলমাল করতে এবং পালিয়ে যেতে দেওয়া হল?”
এমনকি বিএসএফ বাচ্চাদের দিয়ে পাথর ছুড়িয়েছে বলেও মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন “আমি খুঁজে বের করব সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কাকে কাকে হাত করেছে। কিছু বাচ্চা ছেলেকে ৫/৬ হাজার রুপির বিনিময়ে পাথর ছুড়িয়েছে। এটা ভালো করে তদন্ত করবো, আমাদের তদন্ত চলছে।”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কালীদাসের মতো হয়ে গেছে। যে ডালে বসে আছে, সেই ডাল কাটছে। আপনার এত তাড়া কীসের? আপনি তো প্রাইম মিনিস্টার কখনো হবেন না। মোদি চলে গেলে কী হবে? আপনাকে তো হামাগুড়ি দিতে হবে। মোদিজিকে বলব ওনাকে একটু কন্ট্রোল করতে। সমস্ত এজেন্সিকে দিয়ে দিয়েছেন ওনার হাতে। মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে তা পুরোটাই পরিকল্পিত।”
সুচরিতা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র ব এসএফ মন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফকে দিল ভারতীয়রা
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের ভুট্টা ক্ষেতের পাতা ছেঁড়ার সময় এক বাংলাদেশি যুবককে ভারতীয়রা ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশি ওই যুবকের নাম আজিনুর রহমান (২৪)। তিনি বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম ডাঙ্গাটারী গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশাদুল হক জানান, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাটগ্রামের বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম ডাঙ্গাটারী গ্রামের মেইন পিলার ৮০১-এর সাব পিলার ১০-১১ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, আজিনুর তাঁর মা-সহ সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে গরুর খাবারের জন্য ভুট্টা ক্ষেতের পাতা ছিঁড়তে যায়। এক পর্যায়ে ভারতের কয়েকজন নাগরিক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে বিএসএফের হাতে দেয়। বিএসএফ আজিনুরকে আটক করে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। পরে রংপুর-৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঠ্যাংঝাড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার রফিকুল ইসলাম ভারতীয় মেখলিগঞ্জের বি আরকা বাড়ী বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের সঙ্গে আজিনুরকে ফেরত আনার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন।
রংপুর-৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঠ্যাংঝাড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার রফিকুল ইসলাম জানান, আজিনুরকে ফেরত আনার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।