হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর প্রথম বক্তৃতায় ট্রাম্পের সমালোচনা করলেন বাইডেন
Published: 16th, April 2025 GMT
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর জো বাইডেন তাঁর প্রথম বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ওয়েলফেয়ার নীতির সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন শিকাগোয় এক সম্মেলেন বলেছেন, সরকার সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থার বিরুদ্ধে ‘লড়াই শুরু করেছে’। প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তিদের এক অনুষ্ঠানে এ বক্তৃতা দেন জো বাইডেন। বক্তৃতায় হোয়াইট হাউস থেকে চলে যাওয়া বা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলেননি।
যে সংস্থা সরকারকে বছরে ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন (১ লাখ ৬০ হাজার কোটি) ডলারের সুবিধা দেয়, সেটির কর্মীদেরও ছাঁটাই করতে চাচ্ছে প্রশাসন, বলেন জো বাইডেন।
বাইডেন গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাম্পের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে বলেন, ১০০ দিনের কম সময়ে নতুন প্রশাসন অনেক ক্ষতি করে ফেলেছে, অনেক ধ্বংস করেছে। এটা একধরনের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা।
সামাজিক নিরাপত্তাকে ‘পবিত্র প্রতিশ্রুতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মানুষের জীবনযাপনে সামাজিক নিরাপত্তা কতটা প্রভাব রাখে, সেটি আমাদের জানা।’
প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তিদের এক অনুষ্ঠানে এ বক্তৃতা দেন জো বাইডেন। বক্তৃতায় হোয়াইট হাউস থেকে চলে যাওয়া বা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলেননি।প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তিদের এক অনুষ্ঠানে এ বক্তৃতা দেন জো বাইডেন। বক্তৃতায় হোয়াইট হাউস থেকে চলে যাওয়া বা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এসএসএ) অবসরে যাওয়ায় বা প্রতিবন্ধিতার কারণে কাজ করতে পারেন না, এমন লোকজনকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন নাগরিক সংস্থাটির সুবিধাভোগী। তাঁদের বড় অংশই বয়স্ক মানুষ।
আরও পড়ুনসদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন কী করছেন০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কাঁটছাঁট করার ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার সমালোচনা বিরোধী ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বারবারই করছেন।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও ধনকুবের ইলন মাস্কের তথাকথিত ‘ডিপার্টমেন্ট অব এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)’ গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোশ্যাল সিকিউরিটি এজেন্সিতে বড় ধরনের ব্যয়হ্রাস অভিযান চালায়। এতে সাত হাজার কর্মী চাকরি হারান।
করদাতা মার্কিন জনগণ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের সুবিধাপ্রাপ্তির বিষয়টি সুরক্ষিত করার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুরোপুরি নিশ্চিত।—ক্যারোলিন লেভিট, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারিসামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে মাস্ক ‘সর্বকালের বৃহত্তম জালিয়াতির প্রকল্প’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে অবৈধ অভিবাসী ও ‘অন্যান্য অনুপযুক্ত লোকজনকে’ বাদ দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে অবৈধ অভিবাসী ও ‘অন্যান্য অনুপযুক্ত লোকজনকে’ বাদ দিতে বলা হয়েছে।অভিষেক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (বাঁয়ে) ও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল রোটুন্ডায়। ২০ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক অন ষ ঠ ন বক ত ত য় কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মোদির নতুন চাল
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজনীতিতে এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছেন যেগুলো যতটা না সরকার পরিচালনা, তাঁর চেয়ে বেশি নিজের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের কৌশল বলে মনে হয়। সাম্প্রতিক ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল তাঁর সর্বশেষ চেষ্টার একটি দৃষ্টান্ত। এর সাংবিধানিক তাৎপর্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এর রাজনৈতিক ইঙ্গিতও গভীর।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া মোদির জন্য বড় ধাক্কা। এক দশকের বেশি সময় ধরে যে একচ্ছত্র ক্ষমতা তিনি ভোগ করছিলেন, এই নির্বাচন তাকে হঠাৎ করেই প্রশ্নবিদ্ধ করে দিয়েছে। এমন অবস্থায় মোদির সামনে মূল চ্যালেঞ্জ, কীভাবে এই পরাজয়ের অভিঘাত ধুয়েমুছে আবারও নিজেকে অপ্রতিরোধ্য হিসেবে তুলে ধরা যায়।
এর জবাবে তিনি বেছে নেন পুরোনো পথ—জনগণকে জীবনের মৌলিক সমস্যা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার রাজনীতি। মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানহীনতা, অর্থনীতির অস্থিরতা কিংবা আদমশুমারির মতো মৌলিক কর্তব্য—সবই চাপা পড়ে যায় ‘দেশদ্রোহীদের’ বিরুদ্ধে একাত্মতার ডাক, বা ‘হিন্দু-মুসলিম’ বিভাজনের রণহুংকারে।
২০২৪ সালে আয়োজিত অযোধ্যার রামমন্দিরের উদ্বোধনকেও মোদি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। কিন্তু তার ফল হয় উল্টো। বিজেপি অযোধ্যার কেন্দ্র ফৈজাবাদে হেরে যায়। উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি বিজেপিকে ছাপিয়ে যায়। মহারাষ্ট্রেও বিজেপির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে।
এই পটভূমিতে, মোদি তৎপর হন নিজের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে। শুরু হয় এক বিস্তৃত প্রচারাভিযান। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল, পরাজয় ও হতাশার স্মৃতি ধুয়ে ফেলা। সংসদে নিজের প্রথম ভাষণেই তিনি বলেন, যাঁরা তাঁর সমালোচনা করছেন, তাঁরা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এর পর থেকে প্রতিটি বক্তৃতায় তিনি একই বার্তা দেন; মোদি মানেই দেশ, দেশ মানেই মোদি।
এই বার্তা ছড়াতে গিয়ে বিজেপি তিনটি কৌশল নেয়। প্রথমত, তারা নিজেদের ভোটে হারার কারণ হিসেবে ‘অপপ্রচার’ আর ‘ভ্রান্ত তথ্য’কে দোষারোপ করে।
দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় সরকারের শক্ত অবস্থানকে নতুন করে জোর দিয়ে তুলে ধরে। মানে, শক্ত হাতে দেশ চালানোই মোদির একমাত্র পথ।
তৃতীয়ত, হেরে যাওয়া রাজ্যগুলোয় বিজেপি জোরালোভাবে ফিরে আসার চেষ্টা চালায়। হরিয়ানায় বিরোধীদের ঘায়েল করে আবার ক্ষমতায় আসে। মহারাষ্ট্রে নজিরবিহীন জয় পায় এবং জম্মু অঞ্চলেও ভালো ফল পায়।
অমৃতসরে ওয়াকফ সংশোধন নিয়ে বিক্ষোভ