৫০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ শোধ করা হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 16th, April 2025 GMT
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি শুল্কের বিষয়ে সরকারের করণীয় নিয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েটার্স ফোরাম-বিএসআরএফের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দেওয়া বক্তব্যে এই তথ্য তুলে ধরেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে সামগ্রিক অর্থনীতি সমস্যার মুখে পড়েছিল। তবে এখন মূল্যস্ফীতি ক্রমান্বয়ে কমছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বোরো ধান উঠলে চালের বাজারে স্বস্তি আসবে।”
আরো পড়ুন:
‘সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বৈষম্যহীন নতুন দেশ গড়া সম্ভব হবে’
ঈদ ও স্বাধীনতা দিবস ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র সচিব
শুল্ক-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে সরকারের একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একপেশে শুল্ক আরোপ করেছে। রপ্তানি বেশি, আমদানি কম; এমন দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। ফলে শুল্কের বিষয়টি অবশ্যই ভাবনার। দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার।”
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের ফলে ব্যবসায়িক খরচ ২ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “এটা শূন্য টাকা থেকে মাইনাস টাকায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাকিস্তান, ভারত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে কোনো সমস্যা নেই। দেশের স্বার্থেই সবার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত কমার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার কাজ করছে। অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।”
এক প্রশ্নে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “দুঃখজনকভাবে বেশ কিছুদিন ধরে চালের দাম বেড়ে আছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বোরো ধানের চাল আসবে।”
সরকারি গুদামে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “বাজারে নতুন ধানের চাল আসতেই চালের দাম কমে আসবে।”
“এ বছর আমাদের আবহাওয়া এবং বিদ্যুৎতের অবস্থা ভালো ছিল। সারের সরবরাহসহ সামগ্রিক বিষয়ও ভালো ছিল।”
বিএসআরএফ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব সভাপতিত্ব করেন এবং সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হক সঞ্চালনা করেন।
ঢাকা/এএএম/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র উপদ ষ ট ব ণ জ য উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপে আমাদের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
তিনি বলেন, এই প্রতিনিধিদলে আমাদের অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বাণিজ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে যারা কাজ করে ইউএসটিআর, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ নিয়ে নির্দ্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করবে বলে জানান তিনি।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ : চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয়’ শীর্ষক বিএসআরএফ-এর মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ-এর সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব। সঞ্চালনা করেন বিএসআরএফ এর সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপে আমাদের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয় কী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জানি এই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই ৯০ দিনের মধ্যে আমাদের কার্যক্রম কী হবে এবিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজে সচেতন। আমাদের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য রয়েছে বিশেষ করে রপ্তানি বেশি আমদানি কম, এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। ক্রেতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র একক বৃহত্তম দেশ। সেজন্য আমাদের কাছে বিষয়টি চিন্তার। যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের বাণিজ্য ঘাটতি নিরূপণ করছে সেটা পণ্যের ক্ষেত্রে করছে, সেবার ক্ষেত্রে করছে না। এজন্য আমরা কিছু কর্মসমষ্টি তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, এই কর্মসমষ্টি নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিবসহ একটি প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। সেখানে যে ইউএসটিআর রয়েছে, যারা এই শুল্ক নিয়ে কাজ করেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ কাঠামো রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা আরো নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করবো।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন যে, ডব্লিউটিও এর ফ্রেমওর্য়াকে আমরা সারা দুনিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করি। সেখানে বাণিজ্যের যে বৈচিত্র্য আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে ২.২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্য অন্যান্য দেশের থেকে আমাদের দেশে আসে। এছাড়া আমকদের কিছু পণ্য আছে যা দুই দেশকেই সুবিধা দেয়। সেসব পণ্যের শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারি। একইসঙ্গে আমাদের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন রকমের অবকাঠামো গত চিন্তা করছি। যেখানে আমাদের পণ্যের মান বাড়বে, গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে ও বাণিজ্য বাড়বে। এছাড়া যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের প্রতিনিধি দল আলোচনা করে পরবর্তিতে আমি নিজেই যাবো। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে সুস্পষ্ট প্রস্তাব রাখবো।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক পরিশোধ করে ব্যবসা করি। আমাদের রপ্তানির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ১ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে শূন্য শুল্কের পণ্য আমদানি করে সেটা পুনরায় রপ্তানি করি। সেজন্য আমরা আমাতের প্রতিবন্ধকতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কারণ আমাদের নিজস্ব অর্থনীতির সক্ষমতার বাইরে যেতে পারবো না। আবার সামগ্রিক অর্থনীতির সমস্যা তৈরি হয়েছিলো ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ভুল অর্থনীতির নীতি কারণে। আমরা অবশ্যই সে ধরনের নীতিতে যাবো না। আমাদোর অর্থরীতির সক্ষমতা, বাণিজ্যের সম্ভবনা, এই দুইটিতে এক সঙ্গে কাজে লাগিয়ে, সর্বোপরি প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মেনে নিয়ে আমরা এই সমস্যার সমাধান করবো।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ