সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
Published: 16th, April 2025 GMT
রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম এ রায় ঘোষণা করেছেন।
রায় ঘোষণার আগে আনোয়ার হোসেনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের মাকে তালাক দেন তার বাবা। এরপর ২০১৫ সালে আনোয়ার হোসেনকে বিয়ে করেন ভিকটিমের মা। দুই সন্তানকে নিয়ে মাদারীপুরে বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি। আনোয়ার হোসেন একা সংসার চালাতে পারছিলেন না। ভিকটিমের মা ঢাকায় এসে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। তার দ্বিতীয় সংসারে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তাকে দেখাশোনার জন্য কেউ ছিল না। আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলে ভিকটিমকে ঢাকায় নিয়ে আসেন তার মা। হঠাৎ ভিকটিমের মাকে আনোয়ার হোসেন জানিয়ে দেন, তিনি সংসারের খরচ দিতে পারবেন না। সন্তানদের কথা চিন্তা করে আনোয়ার হোসেনকে ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তালাক দেন ভিকটিমের মা। ৪ আগস্ট বাসায় এসে আনোয়ার হোসেন ভয় দেখিয়ে সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের মা ২০ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত করে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ছয় জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রী সংখ্যায় ২০১৯ সালকে ছাড়াল বিমান পরিবহন খাত, করোনার পর এই প্রথম
অবশেষে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে বিশ্বের বিমান পরিবহন খাত। ২০২৪ সালে বিমানে চলাচল করা যাত্রীর সংখ্যা ২০১৯ সালের স্তর অতিক্রম করেছে।
এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল (এসিআই) ওয়ার্ল্ডের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যানুসারে, গত বছর প্রায় ৯৫০ কোটি যাত্রী উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেছে। ২০১৯ সালের কোভিড-১৯ মহামারি সময়ের তুলনায় যা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের তুলনায় যা ৯ শতাংশ বেশি। খবর সিএনএন।
প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত ১০ বিমানবন্দরের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। সেই তালিকায় এবারও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার রাজধানী আটলান্টায় অবস্থিত ডেলটা এয়ারলাইনস হাবটি ২৭ বছরের মধ্যে ২৬ বার শীর্ষস্থান দখল করেছে। গত বছরের মতো এবারও দ্বিতীয় স্থানে আছে আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তৃতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ।
চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে জাপানের রাজধানী টোকিওর হানেদা ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে ষষ্ঠ স্থানে।
সপ্তম ও অষ্টম স্থানে আছে যথাক্রমে তুরস্কের ইস্তানবুল ও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ও’হেয়ার বিমানবন্দর। নবম স্থানে আছে ভারতের নয়াদিল্লি বিমানবন্দর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ বহরের সম্প্রসারণ, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও বৈশ্বিক সংযোগ বৃদ্ধির কারণে ইস্তানবুল ও নয়াদিল্লি বিমানবন্দরের দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে।
বিমানবন্দরগুলোর প্রবৃদ্ধির বিষয়ে এসিআই ওয়ার্ল্ডের মহাপরিচালক জাস্টিন এরবাচি বলেন, ‘ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে; ভারত, চীন, লাতিন আমেরিকা ও কিছুটা আফ্রিকায়। উন্নত দেশগুলোয় (উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ) প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা কমবে। শিল্পটি এখনো অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলোর উৎপাদন বিলম্বের মতো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশ্বব্যাপী উড়োজাহাজ চলাচল ২০৪৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে প্রত্যাশা এসিআই ওয়ার্ল্ডের।
নজরে পড়ার মতো অগ্রগতি হয়েছে ১০ম স্থানে থাকা চীনের সাংহাই পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। ২০২৩ সালে ২১তম স্থান থেকে ৪১ শতাংশ যাত্রী বৃদ্ধির মাধ্যমে একলাফে ১০ম স্থানে উঠে এসেছে এই বিমানবন্দর।
২০২৪ সালে বিমানের যাত্রী বাড়লেও এসিআই বলছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বিমান কোম্পানিগুলোর উৎপাদনে বিলম্বসহ আরও কিছু কারণে এই খাত গত বছর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। চলতি বছর যেভাবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে, তাতে এবার কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা দেখার অপেক্ষায় আছে এই খাত।
করোনা মহামারির সময় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সবচেয়ে আক্রান্ত হয় বিমান চলাচল খাত। ২০২০ সালে এই খাতের ক্ষতি হয় ১৭৫ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এই খাত। টিকাদান ও পরবর্তী পর্যায়ে কোভিড-১৯ আর বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় বিমান চলাচল বেড়েছে।