রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের ঈদগাহ মাঠের কাছে গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে রকি (২৫) নামের এক যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল দিবাগত রাত ১২ টার দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজের অনুসারী জহিরের সঙ্গে মিরপুর ১ নম্বর ঈদগাহ মাঠ এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান ডুকু রুবেলের এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর কিছুক্ষণ পর ডুক্কু রুবেল তাঁর দলবল নিয়ে ঈদগাহ মাঠ এলাকায় থাকা যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের ওপর হামলা করেন। এ নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া বন্দুক যুদ্ধ বাঁধে। আধঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের তিনজন আহত হন। তাদের মধ্যে ডুক্কু রুবেলের সহযোগী সাজ্জাদ হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর হাতে ও পেটে গুলি লাগে। পরে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।

হাসপাতালে সাজ্জাদের বন্ধু হাসিবুল শান্ত দাবি করেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাজ্জাদসহ তিন বন্ধু মিরপুর ১ নম্বর সেকশনে ঈদগাহ মাঠের পাশে চায়ের দোকানে চা খেতে যাচ্ছিলেন। সেখানে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের কার্যালয় রয়েছে। সাজ্জাদুলের কার্যালয়ের সামনে গন্ডগোল চলছিল। সেখানে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এ সময় তারা দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে সাজ্জাদের পিঠে গুলি লাগে। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে নেওয়া হয়। সাজ্জাদের বাসা মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের নিউ সি ব্লকে।

আজ সকালে যোগাযোগ করা হলে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদগাহ মাঠের পাশে যুবদল নেতা সাজ্জাদুলের কার্যালয়ে সব সময় নেতা কর্মীদের ভিড় থাকে। গতকাল রাতে তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জহিরের সঙ্গে সন্ত্রাসী ডুকু রুবেলের কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। ডুকু রুবেল ঈদগাহ মাঠ এলাকায় একটি সন্ত্রাসী দল নিয়ন্ত্রণ করে। যুবদল নেতা সাজ্জাদুল এখন এলাকার আধিপত্য ও ইন্টারনেট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আহত সাজ্জাদ ডুকু রুবেলের সহযোগী। যুবদল নেতা সাজ্জাদুলের দুই সহযোগী গুলিবিদ্ধ হন। তারা কোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তা জানা যায়নি। সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কোনো পক্ষই থানায় মামলা করেননি।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজ আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে আমার দলের নেতা জহির আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ধরতে গিয়েছিল। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পক্ষ থেকেই তাদের ধরতে বলা হয়েছিল। ডিবির কেউ না আসায় জহির নিজেই আওয়ামী লীগের নেতাকে ধরতে যান। তখন বিএনপির একটি পক্ষের লোকজন জহিরকে বাধা দেয়ে। তখন তারা বন্দুক দিয়ে গুলি ছোড়ে এবং চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে। এতে আমার সাত নেতা–কর্মী আহত হন। তিন পথচারীও আহত হন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদগ হ ম ঠ য বদল ন ত গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের যাবতীয় তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিন মাস অন্তর অন্তর বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) তথ্য জমা দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে। সেখানে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের নাম, পরিচয়সহ যাবতীয় তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক।

আজ বুধবার এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবিধি ও নীতি বিভাগ।

এর আগে ২০২৪ সালের ১২ মার্চ এই ধরনের আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। তখন ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এসব তথ্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এখন ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও অধিকতর সংশোধন করা হয়েছে।

নতুন সার্কুলার অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের তথ্য দেওয়া (রিপোর্টিং) ক্ষেত্রে তিন ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা শনাক্ত ও চূড়ান্তকরণের পর তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে পাঠাতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের সিআইবি ‘উইলফুল ডিফল্টার’ হিসেবে প্রদর্শন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতার ক্রম পুঞ্জীভূত তথ্য ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বিবরণী আকারে পাঠাতে হবে। এ ছাড়া তিন মাস শেষ হওয়ার পরবর্তী মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে দাখিল করতে হবে। পাশাপাশি তাদের যাবতীয় দলিলপত্রও দিতে হবে। তৃতীয়ত, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের বিষয়ে ব্যাংকের শনাক্তকরণ ইউনিটের সদস্যদের নাম, মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল অ্যাড্রেস—এসব তথ্য দিতে হবে।

তিন মাস পরপর ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণসংক্রান্ত তথ্য কীভাবে দিতে হবে, এর নমুনা ফরম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি হলে নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ, ব্যাংক শাখার নাম, কবে চূড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকায় এসেছে—এসব তথ্য দিতে হবে।

ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বত্বাধিকারীর নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ, ব্যাংক শাখার নাম, কবে চূড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকায় এসেছে, এসব তথ্য দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ